ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

একদিনে ১৬৬

করোনায় মৃত্যু কমছে

প্রকাশিত: ২২:১৬, ২৪ জুলাই ২০২১

করোনায় মৃত্যু কমছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা গত ১৭ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৮৫১ জনে। এ সময় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৩৬৪ জন। নমুনার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ। শুক্রবারের আক্রান্ত মিলে দেশে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ লাখ ৪৬ হাজার ৫৬৪ জনে। দেশে করোনার ডেল্টা ধরনের দাপটের মধ্যে গত ৭ জুলাই প্রথম দৈনিক মৃত্যু ২০০ ছাড়ায়। এরপর থেকে গত ২০ জুলাই পর্যন্ত অধিকাংশ দিন মৃত্যু ছিল ২০০-এর ওপরে। গত ১৯ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ২৩১ জনের মৃত্যুর খবর আসে। সেখানে গত তিনদিন ধরে মৃত্যু ২০০ এর নিচে রয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ১৮৭ জনের, তার আগেরদিন মৃত্যু হয় ১৭৩ জনের। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার চেয়ে কম মৃত্যুর খবর এসেছিল গত ৬ জুলাই, ১৬৩ জনের। শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৬ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৯ লাখ ৭৮ হাজার ৬১৬ জন। আগেরদিনের তুলনায় করোনা পরীক্ষার সংখ্যায় দেশে করোনায় নতুন শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৭০৫ জনের। পরীক্ষা করা হয়েছে ২০ হাজার ৪৯৩টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬৭টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেরই ৬০ জন। এছাড়া খুলনায় ৩৩, চট্টগ্রামে ৩৩, রাজশাহীতে ৭, বরিশালে ১০, সিলেটে ৮, রংপুরে ১২ এবং ময়মনসিংহে ৩ জন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৯৫ জন পুরুষ এবং ৭১ জন নারী। এদের মধ্যে ৪ জন বাসায় মারা গেছেন। বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ৯৭১ জন এবং নারী ৫ হাজার ৮৮০ জন। এর আগে, বৃহস্পতিবার ১৮৭, বুধবার ১৭৩, মঙ্গলবার ২০০ ও সোমবার সর্বোচ্চ ২৩১ জনের মৃত্যু হয়। রবিবার ২২৫ ও শনিবার ২০৪ জন মারা যান। শুক্রবার ১৮৭, বৃহস্পতিবার ২২৬ ও বুধবার ২১০ জন মারা যান। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এদিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৮৬ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৩২, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২৪, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১৫, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৭ এবং ১১ থেকে ২০ বছরের ২ জন মারা গেছেন। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গতবছরের ৮ মার্চ। দেশে করোনার ডেল্টা ধরনের দাপটে দৈনিক সংক্রমণ এবং করোনায় মৃত্যু কয়েক গুণ বেড়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ দেশে সর্বাত্মক বিধিনিষেধ পালন করা হয়। এ সময় সব ধরনের অফিসের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। ২১ জুলাই ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে এই বিধিনিষেধ আটদিনের জন্য শিথিল করা হয়। ঈদ-উল-আজহার ছুটি শেষে শুক্রবার থেকে ফের কঠোর বিধিনিষেধে আরোপ করা হয়েছে সারাদেশে। আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে এই কঠোর বিধিনিষেধ কর্মসূচী বাস্তবায়িত হবে। তবে শুক্রবার থেকে কঠোর বিধিনিষেধের কর্মসূচী থাকলেও আগামীদিনে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। ঈদের আগে সংক্রমণের হার বেশি থাকলেও বিধিনিষেধের শিথিলতায় এমনটি ঘটতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, আগামীতে সংক্রমণ কেমন থাকতে পারে সেটি পর্যবেক্ষণ ছাড়া বলা কঠিন। তবে ঈদ পরবর্তী সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কাই বেশি।
×