ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর

ডি-৮ অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংঘ

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ৪ মে ২০২১

ডি-৮ অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংঘ

২০২১ সালের ১ এপ্রিল ঢাকায় ভার্চুয়ালি বা প্রকৃতভাবে ডি-৮ অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংঘের ১০ম শীর্ষ সম্মেলন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উদ্বোধনী ভাষণ দেন সংঘের বিদায়ী সভাপতি তুরস্কের রাষ্ট্রপতি তাইয়েপ এরদোগান। ডি-৮ (ডেভেলপিং এইট) বা উন্নয়নশীল ৮ ১৯৯৬ সালের অক্টোবরে ৮টি দেশ, নামত বাংলাদেশ, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজিরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক নিয়ে তুরস্কের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. নেকমেতিন এরবাকানের প্রস্তাব অনুযায়ী ইস্তানবুুলে গঠিত হয়। ১৯৯৭ সালের ১৫ জুন ইস্তানবুুল ঘোষণার অবয়বে ডি-৮ সংঘের উদ্দেশ্যাবলী সকল সদস্য দেশসমূহের সমর্থনের ভিত্তিতে ঘোষিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালের সম্মেলনে যোগ দিয়ে ডি-৮ সংঘকে বাংলাদেশের তরফ থেকে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েছিলেন। ঘোষণা অনুযায়ী এই সংঘের উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয় যে, সদস্য দেশসমূহ (১) বিশ্ব অর্থনীতিতে উন্নয়নশীল দেশসমূহের অবস্থান উন্নীতকরণ, (২) নতুন বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি ও বিস্তৃত করা, (৩) আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সিদ্ধান্তায়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং (৪) সদস্য দেশসমূহের জনগণের জীবনের মান উন্নয়নে ব্রতী থাকবে। এসব উদ্দেশ্য অর্জনের প্রক্রিয়ায় সদস্য দেশসমূহ আর্থিক, ব্যাংকিং, গ্রামীণ উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মানবিক উন্নয়ন, কৃষি, জ্বালানি, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে একে অন্যের সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে এই ঘোষণায় অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়। এও বলা হয় যে, সদস্য দেশসমূহের এসব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ বা কার্যাবলী তাদের আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অন্যান্য সংঘ বা প্রতিষ্ঠানের সাথে ভিন্নতর প্রক্রিয়ায় ও সমঝোতা বা চুক্তির আওতায় যোগাযোগ ও সহযোগিতায় কোন বাঁধা বা ব্যত্যয় সৃষ্টি করবে না। সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডি-৮ সংঘের সচিবালয় তুরস্কের ইস্তানবুুলে প্রতিষ্ঠা হয়। ডি-৮ সংঘ অনেকাংশে জি-৭ (গ্রুপ ৭) ও জি-২০ (গ্রুপ ২০) সম্মেলনে উন্নত ও ধনী দেশসমূহের কার্যক্রমে যাতে উন্নয়নশীল দেশসমূহের অবস্থান ও প্রয়োজন যথার্থভাবে প্রতিফলিত হয় তার জন্য প্রতিষ্ঠা হয়। সম্প্রতি জি-৭ দেশসমূহের সম্মেলনে উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশসমূহকে নির্বাচিতভাবে আমন্ত্রণ জানান হয়ে থাকে। ২০১৬ সালে জাপানে অনুষ্ঠিত জি-৭ এর সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। এই সম্মেলনে শেখ হাসিনা জি-৭-এর দেশসমূহের নেতাদের সামনে বিশ্বব্যাপী সর্বজনীন উন্নয়নের লক্ষ্যে উন্নত ও বিত্তশালী দেশসমূহ থেকে অধিকতর সহায়তা উন্নয়নশীল দেশসমূহের অনুকূলে সঞ্চালন, উন্নত দেশসমূহের বাজার অনুন্নত দেশসমূহের জন্য অধিকতর মাত্রায় উন্মুক্ত করা এবং জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রতিহত করণে উন্নত দেশসমূহ কর্তৃক বিশ্বব্যাপী কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া এবং বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশে অধিকতর বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান (দ্রষ্টব্য, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, জি-৭ সম্মেলন ২০১৬ এ শেখ হাসিনার ভূমিকা, দৈনিক জনকণ্ঠ, জুন ৭, ২০১৬)। ডি-৮ এর ঢাকা সম্মেলনে শেখ হাসিনার ভাষণে জাপানে অনুষ্ঠিত জি-৭ এ উত্থাপিত বক্তব্যের অনুরণন ধ্বনিত হয়েছে। ডি-৮ সংস্থার সদস্য দেশসমূহের সমকালীন সম্মিলিত লোকসংখ্যা প্রায় ৬০ বিলিয়ন, যা বিশ্বের লোকসংখ্যার প্রায় ১৬%, আয়তন ৭.৬ মিলিয়ন বর্গ কিমি, যা সারা বিশ্বের ৫% এবং পারস্পরিক বাণিজ্যের পরিমাণ বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৪.৫% বা ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলার। এসব দেশের পারস্পরিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১৯৯৭ সালের ১৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০১৮তে ৭ গুণ বেড়ে ১১১ বিলিয়ন হয়েছে। ইসলামিক সম্মেলন সংঘের সদস্য দেশসমূহের প্রায় ৫০% বাণিজ্য ডি-৮ সদস্য দেশসমূহ থেকে উৎসারিত হয়। ডি-৮ এই প্রেক্ষিতে ১টি আঞ্চলিক নয়, বিশ্বব্যাপ্ত সংঘ। ডি-৮ এর সদস্য পদের যোগ্যতা সদস্য দেশসমূহের সঙ্গে সংঘবহির্ভূত দেশসমূহের পারস্পরিক বা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর অভিঘাত বা প্রভাব বিস্তারণের কারণ বা ভিত্তি হিসেবে কাজ করে না বলে বলা হয়েছে। ১৯৯৭ সালে ডি-৮ এর প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য দেশসমূহ (১) সংঘাতের বদলে শান্তি, (২) বিরুদ্ধাচারণের বদলে আলোচনা, (৩) শোষণের বদলে সহযোগিতা, (৪) দ্বিতীয় মানের বদলে ন্যায়নীতি, (৫) বৈষম্যের বদলে সমতা এবং (৬) অত্যাচারের বদলে গণতন্ত্র অনুসরণ করবে বলে ঘোষণা করেছে। তিন পর্যায়ে ডি-৮ এর কার্যাদি নির্বাহ করা হয়। উচ্চতম পর্যায়ে রয়েছে সংঘের শীর্ষ- যা সকল সদস্য দেশের সরকার প্রধান নিয়ে গঠিত। প্রতি ২ বছর অন্তর সংঘের এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা সম্মেলনসহ এ পর্যন্ত এই সংঘের ১০টি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শীর্ষ পর্যায়ের নিচে আছে কাউন্সিল বা পরিষদ। এই পরিষদ সদস্য দেশসমূহের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত এবং সংস্থাটির সিদ্ধান্ত রূপায়ণের বা প্রণয়নের মূল পরিষদ। এর নিচে রয়েছে ৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিশন, যা সদস্য দেশসমূহ কর্তৃক নিযুক্ত প্রতিনিধি নিয়ে গঠিত। এই কমিশন সংস্থাটির নির্বাহী কর্তৃপক্ষ। ১৯৯৯ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সংঘের দ্বিতীয় সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। এর আগে ১৯৯৭ সালে ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত প্রথম সম্মেলনে শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। এই বছর ২০২১ সালে সংঘের দশম প্রকৃত বা ভার্চুয়াল অধিবেশনে আবারও শেখ হাসিনা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সংঘ বিধি অনুযায়ী আগামী ২ বছর পর্যন্ত সংঘের সভাপতির দায়িত্ব বহন করবেন। মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত দাতো কো জাফর কু শাহারী সংঘটির বিদায়ী মহাসচিব। ঢাকা সম্মেলনে পরবর্তী ৩ বছরের জন্য সংঘের মহাসচিব হিসেবে সর্বসম্মতভাবে নিযুক্তি দেয়া হয়েছে নাইজিরিয়ার ইসাইকা আব্দুল কাদের ইমামকে। ডি-৮ সংঘের ঢাকা অধিবেশনে নির্বাচিত সভাপতি শেখ হাসিনা সদস্য দেশসমূহকে অধিকতর চলিষ্ণু, স্বাপ্নিক ও সম্মুখ দৃষ্টিসম্পন্ন সংঘ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সকলকে এক সঙ্গে কাজ করে ৮ সদস্য দেশসমূহকে নতুনতর উচ্চতায় নিবিড়তর অর্থনৈতিক ও সামাজিক বন্ধন গড়ে তুলতে উজ্জীবিত করেন (দ্রষ্টব্য, ঢাকা ট্রিবিউন, ৯ এপ্রিল, ২০২১)। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সদস্য দেশসমূহে দ্রুততর ও ব্যাপকতর উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যক্তি খাত ও উদ্যম অধিকতর উৎপাদনশীল ভূমিকা পালন করবে। শেখ হাসিনার প্রস্তাব অনুযায়ী এবং অন্যান্য ৭ সদস্য দেশের সমর্থনে সংঘটির উদ্দেশ্য ও দায়িত্ব বিষয়ে ঢাকা ঘোষণা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। ঢাকা ঘোষণার আরেক প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল- যুব সম্প্রদায় ও প্রযুক্তির ক্ষমতা রূপান্তরীয় পৃথিবীতে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে আহরণ। এই ঘোষণায় (১) জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানো, (২) ইরানের হামদানে ডি-৮ আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, (৩) পাকিস্তানের ফয়সালাবাদে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, (৪) ডি-৮ সংঘভুক্ত দেশসমূহে (উন্নয়ন) প্রকল্প সমর্থনের জন্য বিশেষ তহবিল স্থাপন এবং সাম্য ও অন্তর্ভুক্তিয় উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার (আনকটাড) সহযোগিতায় প্রণীত পথক্রম অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া, (৬) সদস্য দেশসমূহে পর্যটন শিল্পের সহযোগিতামূলক প্রসার, (৭) ডি-৮ বাণিজ্য ও শিল্পের (যৌথ) প্রতিষ্ঠান স্থাপন, (৮) প্রযুক্তির উন্নয়ন ও প্রসার (৯) জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়নের লক্ষণীয় বাস্তবায়ন এবং এই প্রক্রিয়ায় দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধা ও অনাহার দূরীকরণ এবং সকলের জন্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ, (১০) কোভিড-১৯ উৎসারিত শিল্প বাণিজ্যের স্থবিরতা দূরীকরণ, (১১) অতিমারীর রোগ নিরাময়ের জন্য যৌথ তহবিল সৃষ্টি করণ, (১২) আন্তর্জাতিক ঋণভার লাঘবকরণ সমর্থন এবং (১৩) দেশচ্যুত জনগণের দুর্দশা দূরীকরণ বিষয়ক ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ কার্যক্রম গ্রহণ ও অনুসরণের আহ্বান জানানো হয়। ঢাকা সম্মেলনে ডি-৮ সংঘের তরফ থেকে সদস্য দেশ ইরানের হামদানে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা অনুধাবন করা সহজ বলে মনে হয় না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ইরানের ডি-৮ এর অন্য সদস্য দেশসমূহের আপেক্ষিকতায় সামনে সকলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা এ পর্যায়ে সুস্পষ্টভাবে বলা যায় না। তদুপরি ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সমকালীন বৈরিতা এক্ষেত্রে এই ধরনের পদক্ষেপ ডি-৮ দেশসমূহের সঙ্গে পাশ্চাত্যের দেশসমূহের ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করতে পারে। এক্ষেত্রে এরূপ সিদ্ধান্ত সংঘের অন্য যে কোন সদস্য দেশে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনে ইরানের সহযোগিতা স্বাগত করা হবে বলে ঘোষণা করা যৌক্তিকতর হবে বলে বিজ্ঞজনদের ধারণা। এর বাইরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ওয়াকিফহাল মহলের আশা অনুযায়ী অবশ্য দুটি প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে এই সংঘ এই সম্মেলনে কোন সুদৃঢ় ও স্পষ্টতর ঐকমত্য প্রকাশ করেনি। এক, বাংলাদেশের ওপর অন্যায়ভাবে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে চাপিয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে এবং উদ্ভূত দেশচ্যুতির সমস্যার সমাধান কল্পে কোন দৃঢ় অবস্থান ও কর্মসূচী এই সংঘ নির্দেশ করতে সমর্থ হয়নি। এই সম্মেলনের পরে আসিয়ান সম্মেলনে মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠার অনুকূলে যে সাহসিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, সেখানেও সুস্পষ্টভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধানে তেমন কোন কার্যক্রম প্রস্তাব করা হয়নি। এর পরে অনুষ্ঠিত এসকাপ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার দৃঢ় আহ্বান জানিয়েছেন (দ্রষ্টব্য, দৈনিক জনকণ্ঠ, এপ্রিল ২৭, ২০২১)। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী দেশচ্যুতি উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে প্রত্যক্ষ প্রতিবাদ ও পদক্ষেপ শনাক্তকরণে ডি-৮ সংঘের অধিকতর বলিষ্ঠ পদচারণা আন্তর্জাতিক সুধী মহলে প্রত্যাশিত ছিল। দুই, বাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে আটকে থাকা লক্ষাধিক পাকিস্তানী নাগরিকের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সে দেশে নিয়ে যাওয়া এবং ১৯৭২ সালের সিমলা সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশকে তার সম্পদ ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে কোন কথা এই সম্মেলনে অনানুষ্ঠানিক বা আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচিত হয়নি। শোনা গেছে যে, ডি-৮ সংঘের সদস্য দেশসমূহ দ্বিপাক্ষিক কোন বিষয় বা সমস্যা আলোচনা কিংবা সমাধানে এগিয়ে আসবে না- এই সূত্র অনুসরণ করে এ দুটি বিষয় ডি-৮ এর এই শীর্ষ সম্মেলনে উত্থাপিত বা আলোচিত হয়নি। বিজ্ঞজনদের বিবেচনায় এই দুটি বিষয় বিশ্ব মানবাধিকার ঘোষণা ১৯৪৮ ও নাগরিকত্বের অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের ১৯৬২ সালের সমঝোতা বা কভেনান্ট সংশ্লিষ্ট এবং ডি-৮ সংঘের দেশসমূহে ৯৫% মুসলিম নাগরিকদের উৎকণ্ঠার বিষয় বিধায় এই সম্মেলনে সমাধানের জন্য উত্থাপিত হতে পারত। ডি-৮ সংঘের সমকালীন বিবেচনার ক্রমে এবং পরবর্তী সম্মেলনে এই দুটি বিষয় উত্থাপিত ও আলোচিত হয়ে সমাধানের পথে এগিয়ে গেলে তা সংঘটিকে অধিকতর সংঘবদ্ধ ও ক্রিয়াশীল করবে বলে আমাদের ধারণা। বাংলাদেশের দৃঢ়চেতা ও ন্যায়নীতি অনুসরণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমকালীন ২ বছরে ডি-৮ সংঘ ঢাকায় ঘোষিত অন্য সব উদ্দেশ্য ও কার্যক্রমের সঙ্গে উপরোক্ত দুটি বিষয়ে যথার্থ প্রগতিশীল পদক্ষেপ নিতে পারবে বলে আমরা আশা করি। লেখক : সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী
×