ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সফর

রাতে জেগে দিনে ঘুমাতে হয় টাইগারদের

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ৩ মার্চ ২০২১

রাতে জেগে দিনে ঘুমাতে হয় টাইগারদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিউজিল্যান্ডে গিয়ে কোয়ারেন্টাইনে আছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। এই কোয়ারেন্টাইনের সময়ও প্রতিদিন দুই বেলা ৩০ মিনিট করে হোটেলের আঙিনায় বের হতে পারছেন ক্রিকেটাররা। তবে তাদের একটি সমস্যা হচ্ছে। রাতে জেগে দিনে ঘুমাতে হচ্ছে। কেন এমনটি হচ্ছে? বিষয়টি নিয়ে নিউজিল্যান্ড সফরে দলের সঙ্গে যাওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘প্রথম ২-৩ দিন অনেকেরই সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু পরে যখন বের হওয়া শুরু করল, আমরা এখন দিনে দুইবার বের হয়ে ৩০-৪০ মিনিট হাঁটা যায়। সবার সঙ্গে সবার দেখা হওয়াতে অনেকেই মানসিকভাবে ফ্রেশ হয়ে গেছে। আসলে আর কোন অভিযোগ নেই, একটা অভিযোগ হলো কয়েকজনের ঘুমের সমস্যা হয়েছে। সময়ের কারণে হতে পারে। অনেকে রাতের বেলা না ঘুমিয়ে দিনের বেলায় ঘুমাচ্ছে। আশাকরি আবার যখন ওরা আউটডোরে যাবে তখন মানিয়ে নিবে।’ করোনা পরবর্তী সময় ক্রিকেট শুরু হওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে গেলেন ক্রিকেটাররা। নিউজিল্যান্ডে গেছেন। যে দেশটিতে করোনা পরিস্থিতি আছে নিয়ন্ত্রণে। তবে দেশটিতে বিদেশ থেকে যাওয়া যে কাউকেই কঠোর কোয়ারেন্টাইন শর্ত মানতে হয়। বাংলাদেশকেও তাই করতে হচ্ছে। খুবই কঠোর কোয়ারেন্টাইন নীতি মেনে চলতে হয়। একটি রুমে একাই থাকতে হচ্ছে। কারও সঙ্গে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দেখাও করা যাচ্ছে না। দেখা করা যাচ্ছে শুধু সকালে এবং বিকেলে ৩০ মিনিট করে। তাও একইদিনে সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। একেকদিন একেক জনের সঙ্গে দেখা করা যাচ্ছে। একেকদিন একেক গ্রুপ করে ৩০ মিনিট সকালে ও ৩০ মিনিট বিকেলে বের হতে হয়। শুরুতে খাবার নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সেই সমস্যাও এখন ‘উবার ইটসে’র মাধ্যমে দূর হয়েছে। বাইরে থেকে অনলাইনে অর্ডার করে পছন্দমতো খাবার এনে খাওয়া যাচ্ছে। জালাল ইউনুস জানান, ‘মানসিকভাবে সবাই ফিট, খাওয়া-দাওয়ারও কোন অভিযোগ নেই কারও। হিল্টন হোটেলে আছি আমরা। প্রকৃতপক্ষে স্ট্যান্ডার্ড খাওয়া দাওয়া। খুবই ভাল। অপশনও আছে, কেউ চাইলে উবার ইটসের মাধ্যমে খাবার আনাতে পারে। দুই একজন খাচ্ছেও। তবে মোটামুটি সবাই হোটেলের খাবারই খাচ্ছে।’ সঙ্গে সবার সঙ্গে দেখা হওয়া নিয়ে বলেন, ‘সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে, যখন আমরা গ্রুপ হয়ে বের হচ্ছি। গ্রুপগুলো আবার পরিবর্তন করে দেয়া হয়। প্রতিদিন একই গ্রুপ থাকে না। এতে করে প্রতিটি খেলোয়াড়ের সঙ্গেই সশরীরে কথা বলতে পারি। দেখা সাক্ষাত হচ্ছে। সবাই আলহামদুলিল্লাহ মানসিকভাবে ফিট আছে। একটাই সমস্যা যে ঘুম। আশাকরি এটাও আউটডোর অনুশীলনের পর ঠিক হয়ে যাবে।’ কোয়ারেন্টাইন ইস্যুতে নিউজিল্যান্ড যেমন কঠোর। বাংলাদেশ ক্রিকেটার, কোচরাও খুব ভালভাবেই তা মানছেন। নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে কোভিড প্রোটোকল ভেঙ্গে সমালোচনা হয়েছিল পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলকে নিয়ে। কিন্তু নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড থেকে প্রশংসাই কুড়াচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটার, কোচ, দলের সব সদস্য। দলের সঙ্গে তিন ওয়ানডে ও তিন টি২০ খেলতে যাওয়া ক্রিকেটার ও বাংলাদেশ সদস্যদের আচরণে সন্তুষ্টিও প্রকাশ করেছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। সবকিছু ঠিক থাকলে বৃহস্পতিবার থেকে গ্রুপে ভাগ হয়ে অনুশীলনও শুরু করা যাবে। এরমধ্যে শেষবারের মতো কোভিড-১৯ পরীক্ষায় সকল সদস্যকে নেগেটিভ হতে হবে। তা হলেই বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে অনুশীলন। সতেরদিন পর ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। ২০, ২৩ ও ২৬ মার্চ যথাক্রমে প্রথম ওয়ানডে, দ্বিতীয় ওয়ানডে ও তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ওয়ানডে সিরিজ শেষে ২৮, ৩০ মার্চ ও ১ এপ্রিল যথাক্রমে প্রথম টি২০, দ্বিতীয় টি২০ ও তৃতীয় টি২০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এরআগে কুইন্সটাউনে পাঁচদিনের অনুশীলন ক্যাম্পও হবে। জালাল ইউনুস জানান, ‘আমরা সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছিলাম। কোনক্রমেই যেন মাস্ক ছাড়া ঘর থেকে বের না হয়। খাওয়া নিতেও মাস্ক ছাড়া যাওয়া যাবে না। মাস্ক ছাড়া বাইরে না যেতে বারবার বলা হয়েছে। সবাই সেই প্রটোকল মেনে চলছে। নিউজিল্যান্ড বোর্ড ও স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছিল। তারা আমাদের সবকিছুতেই সন্তুষ্ট। এখন পর্যন্ত তাদের নির্ধারিত প্রটোকলে কোন ব্যত্যয় ঘটেনি। সবাই চাচ্ছে অনুশীলন শুরু করতে। সবাই চায় বাইরের কন্ডিশনে গিয়ে নক করতে। আশা করছি খুব শীঘ্রই সেটা করতে পারব।’
×