ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ভারতের উপহার ২০ লাখ ডোজ টিকা আসছে কাল

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ২০ জানুয়ারি ২০২১

ভারতের উপহার ২০ লাখ ডোজ টিকা আসছে কাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভারত থেকে বাংলাদেশে অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকা বৃহস্পতিবার আসবে। কূটনৈতিক সূত্র মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে। এর আগে বুধবার কিংবা বৃহস্পতিবার টিকা আসবে বলে মঙ্গলবার দুপুরে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। প্রথম আসা টিকা দেয়া শুরু হবে ঢাকায়। শুরুতে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেয়া হবে না। টিকা দেয়া হবে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে। স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা প্রয়োগ করে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। টিকা বহনে যানবাহনের বিবরণ চেয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জরুরী ভিত্তিতে পাঠাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। করোনা টিকার অপেক্ষায় দেশবাসী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক মঙ্গলবার ভারত থেকে আসা টিকার ব্যবস্থাপনা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর আগে গত ১১ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে যে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনা হবে সেটি দেশে আসছে ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির ভেতরে। আর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে টিকা দেয়া শুরু হবে। সেজন্য আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকেই শুরু হবে অনলাইনে নিবন্ধন। তারই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছে যাবে টিকার প্রথম চালান। মঙ্গলবার এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা প্রয়োগ করে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। শুরুতে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেয়া হবে না। টিকা দেয়া হবে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে। প্রথম আসা টিকা দেয়া শুরু হবে ঢাকায়। বিশ্বের বিভিন দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী শুরুতেই টিকা নিচ্ছেন- বাংলাদেশে এমন হবে কিনা জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, আপাতত এ ধরনের চিন্তা নেই। আমরা চিন্তাভাবনা করছি যাদের সবচেয়ে আগে প্রয়োজন, ফ্রন্টলাইনার, তাদের আগে দেব। ডাক্তার, নার্স, পুলিশ প্রথমে পাবেন। সাংবাদিকদেরও দেয়া হবে। যেটা প্ল্যান করা আছে সেভাবেই হবে। ভিভিআইপিরা আগে পাবেন না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, জেলা পর্যায়ে চারটি, উপজেলায় দুটি এবং মেডিক্যাল কলেজে ছয়টি দল টিকা দেয়ার কাজ করবে। কয়েকটি দল কাজ করবে বিভিন্ন হাসপাতাল এবং সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। প্রায় ২৮ হাজার ভলান্টিয়ার এই কাজে যুক্ত থাকবেন। প্রাথমিকভাবে আমরা ইউনিয়নগুলো বাদ দেব। শুধু জেলা, উপজেলা এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকা হিসাব করে প্রতিদিন আনুমানিক ২ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া যাবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ বলেন, এসব টিকা সিএমএসডি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ইপিআই এবং তেজগাঁও হেলথ কমপ্লেক্সের কোল্ডস্টোরেজে সংরক্ষণ করা হবে। সরকারের কেনা ৩ কোটি ডোজ টিকার প্রথম চালান হাতে পাওয়ার পর সব জেলায় একসঙ্গে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের কিছু টিকা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এক সপ্তাহ পর সব জেলায় শুরু করা হবে। এটাই আমাদের পরিকল্পনা। ভারতের উপহার ২০ লাখ ডোজ টিকা কখন কাকে দেয়া হবে জানতে চাইলে খুরশীদ আলম বলেন, মন্ত্রণালয় আমাদের যেভাবে জানাবে, সেভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভ্যাকসিন (টিকা) বহনে যানবাহনের বিবরণ চেয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন ॥ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশকে উপহার দেবে ভারত। এ ভ্যাকসিন বিমানবন্দর থেকে পরিবহনের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রাক ও ভ্যানের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন। ভ্যাকসিন পরিবহনের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রাক-ভ্যান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়ে সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের (জনসংখ্যা-২) সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা স্বাক্ষরিত একটি চিঠি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে জানানো হয়, সরকার করোনা মোকাবেলায় জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে জাতীয় ভ্যাকসিন কর্মপরিকল্প গ্রহণ করেছে। এর ধারাবাহিকতায় ভারত সরকার বাংলাদেশকে সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রস্তুত করা দুই মিলিয়ন (২০ লাখ) অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দেবে। এ ভ্যাকসিনের চালান ভারতের একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। বিমানবন্দর থেকে ভ্যাকসিন পরিবহনের যেসব যানবাহন (ট্রাক/ভ্যান) ব্যবহার করা হবে তার বিস্তারিত বিবরণ ভারতীয় হাইকমিশন থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় বিমানবন্দর থেকে ভ্যাকসিন পরিবহনে যেসব ট্রাক-ভ্যান ব্যবহার করা হবে তার বিস্তারিত প্রতিবেদন জরুরী ভিত্তিতে পাঠাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ভারতীয় হাইকমিশনের চিঠিতে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন বহনে কোন ধরনের যানবাহন ব্যবহার হবে তার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে হবে। এছাড়া ভ্যাকসিনের ইমপোর্ট লাইসেন্স ইস্যু করা, ভ্যাকসিনের গ্রহণ প্রক্রিয়া, কাস্টমসে শুল্ক ছাড়, ভ্যাকসিন টেস্ট করা যাবে না। একই সঙ্গে বিমানবন্দরের কাছাকাছি সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা এবং সংরক্ষণের জায়গাটি অবশ্যই দুই থেকে আট ডিগ্রী তাপমাত্রা নিশ্চিত করতে হবে।
×