ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

নজরুলের সৃষ্টির আলোয় ছায়ানটের সম্মিলনী আয়োজন

প্রকাশিত: ২২:২৪, ২০ ডিসেম্বর ২০২০

নজরুলের সৃষ্টির আলোয় ছায়ানটের সম্মিলনী আয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাঙালীর মানস বিকাশের নিত্যসঙ্গী কালজয়ী দুই কবি রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল। প্রাণের মানুষ হয়ে তারা আলো ছড়ান আপন সৃষ্টির নির্যাসে। সেই সৃষ্টির আলোয় হয়ে ওঠেন আনন্দ-বেদনা থেকে দুঃসময়ের পথ প্রদর্শক। আর এই কীর্তিমানদ্বয়কে সঙ্গী করে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের সম্মিলনী আয়োজন। দুই পর্বে সাজানো হয়েছে এ আয়োজন। ১৯৬১ সালে যাত্রা শুরুর সূচনালগ্ন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সংগঠনটির সঙ্গে সম্পৃক্ত দেশ-বিদেশে অবস্থানকারী শিল্পী, সংগঠক, স্বেচ্ছাসেবী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সম্মিলিত হয়েছেন এ আয়োজনের মাধ্যমে। উপস্থাপন করছেন নাচ-গান কিংবা কবিতা আবৃত্তি। কেউ বা অংশ নিচ্ছেন বিষয়নির্ভর আলোচনায়। এভাবেই সজ্জিত ‘জাগ্রত করো, নির্ভয় করো হে’ শীর্ষক প্রথম পর্বের আয়োজনে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিবেদিত স্মরণানুষ্ঠান। ‘নাই দুঃখ, আছে শুধু প্রাণ’ শীর্ষক চার দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের তৃতীয় দিন ছিল শনিবার। বৈচিত্র্যময় আয়োজনটি সেজেছে নজরুলের ভক্তিমূলক, রাগাশ্রয়ী, গীতিআলেখ্য, স্বদেশ, উদ্দীপনা, আধুনিক ও লোক অঙ্গের গান, পাঠ-আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশনায়। সঙ্গে ছিল আলোচনা ও প্রয়াত গুণী শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। রাত নয়টায় অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয় ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে। আজ রবিবার সমাপনী দিনেও একই সময় সম্প্রচারিত হবে এ আয়োজন। সম্মেলক সঙ্গীতের আশ্রয়ে সূচনা হয় অনুষ্ঠানের। অনেকগুলো কণ্ঠ মিলে যায় এক সুরে। ছায়ানটের শিল্পীদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় - মৃত্যু নাই, নাই দুঃখ, আছে শুধু প্রাণ/অনন্ত আনন্দ হাসি অফুরান ...। গান শেষে অঞ্জলি রায়কে নিবেদিত দ্রশ্য-শ্রাব্য পাঠে অংশ নেন একবিংশ শতকের ছায়ানটের শিক্ষক ও সংগঠক জয়ন্ত রায়। ‘পিউ পিউ বিরহী পাপিয়া বোলে’ শিরোনামের সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রিয়াংকা গোপ। শারমিন সাথী ইসলাম ময়নার কণ্ঠে গীত হয় ‘নয়ন মুদিল কুমুদিনী হায়’। নাসিমা শাহীন ফ্যান্সির গাওয়া গানের শিরোনাম ছিল ‘ভবনে আসিল অতিথি সুদূর’। কানিজ হুসনা আহম্মাদীর কণ্ঠে গীত হয় ‘কার বাঁশরী বাজে মুলতানী সুরে’। জান্নাত-এ-কাওসারী পরিবেশন করেন ‘কে তুমি দূরের সাথী’ শীর্ষক সঙ্গীত। সারাহ্্ নাজ বিল্লাহ গেয়ে শোনান ‘শূন্য এ বুকে পাখি মোর আয়’ শিরোনামের গান। ‘নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে’ শীর্ষক সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী। মাকসুদুর রহমান মোহিতের গাওয়া গানের শিরোনাম ছিল ‘পরজনমে দেখা হবে প্রিয়’। রেজাউল করিম শুনিয়েছেন ‘অরুণকান্তি কে গো যোগী ভিখারি’ শীর্ষক সঙ্গীত। অলকানন্দা সুবৃতা পরিবেশন করেন ‘নীলাম্বরী শাড়ি পরি নীল যমুনা কে যায়’। মঈদুল ইসলাম গেয়েছেন ‘নিশি রাতে রিম ঝিম ঝিম বাদল নূপুর’। সুমন মজমুদারের কণ্ঠে গীত হয় ‘শোন্্ ও সন্ধ্যামালতী’। নবনীতা চক্রবর্তী গেয়েছেন ‘দোলন চাঁপা বনে দোলে’। খায়রুল আনাম শাকিল শুনিয়েছেন ‘বেণুকা ও কে বাজায় মহুয়া বনে’। গানের মাঝে কথনে অংশ নেন সাদিয়া আফরিন মল্লিক। স্বরবীথি থিয়েটারের শাস্তি নাটকের মঞ্চায়ন ॥ শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হলো স্বরবীথি থিয়েটারের নাটক ‘শাস্তি’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শাস্তি গল্প অবলম্বনে নির্মিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন শওকত হাসান। নাটকের গল্পে উঠে এসেছে গ্রাম-বাংলার খেটে খাওয়া মানুষের কথা। ছিদাম, দুঃখীরামকে ঘিরে এগিয়ে যায় কাহিনী। তাদের অর্ধাহার-অনাহারের সংগ্রামী জীবনকে আগলে রাখে বড় বউ মাধবী। দৃশ্যপটে জীবনের তাগিদে আসে চন্দরা, ছিদামের স্ত্রী। ছিদাম চন্দরাকে শুধু অবহেলাই করেনি, চন্দরার বুকে জমে থাকা হিমালয়ের মতো ভালবাসার বিন্দুমাত্রও তাকে স্পর্শ করেনি। তাই তো সে বলে, ‘বউ গেলি বউ পাব ফের, কিন্তু দাদা গেলি তো দাদা পাবনি।’ এই দুর্বোধ্য সহোদরপ্রীতির সূক্ষ্ম ছিদ্র গলে ঢুকে পড়ে কুটিল জমিদার, নায়েবদের নিপীড়ন ও দুঃশাসন। ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়ানো চন্দরার অভিমানের তীব্রতা আবেগতাড়িত করে ওয়ার্ডেনকে। এভাবেই এগিয়ে যায় কাহিনী। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শওকত হাসান, মিজানুর রহমান, পূর্ণিমা সরকার, শিখা রহমান, আরিফ আল মামুন, রুহুল আমিন, সুবর্ণা রায়, মোঃ জাহিদ, সাজ্জাদ হাসান ও মোঃ সেলিম। ঠাকুরগাঁওয়ে পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে যাক প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে পৃথক দুটি পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন হিন্দোল সঙ্গীত বিদ্যালয় ও নারী ঐক্য উন্নয়ন সংঘ। শুক্রবার রাতে হিন্দোল সঙ্গীত বিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি সহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিকর্মী দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে তারা বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। তিনটি বিভাগে প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করে প্রিয়তমা, ঐশী ও মারিয়া। এদিকে নারী ঐক্য উন্নয়ন সংঘ শনিবার সকালে শহরের গোবিন্দনগর ক্যাম্পপাড়ায় সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সভাপতি দিপালী খালকোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত সমীর বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
×