ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা ফ্লিনকে ক্ষমা করে দিলেন ট্রাম্প

পেনসিলভানিয়ায় ভোট সার্টিফিকেশনের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ২২:৫৭, ২৭ নভেম্বর ২০২০

পেনসিলভানিয়ায় ভোট সার্টিফিকেশনের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য সমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ভোট সার্টিফিকেশনের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন সেখানকার এক বিচারক। অঙ্গরাজ্যটির সব কাউন্টির সার্টিফিকেশন হয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার ওই বিচারক এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন। আর সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনকে ‘ক্ষমা’ করে দিলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে করোনাভাইরাস মোকাবেলাই বাইডেনের অগ্রাধিকার বলে জানা গেছে। খবর বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, রয়টার্স, ফক্স নিউজ, ইউএসএ টুডে, এবিসি নিউজ, ফোর্বস নিউজ ও লস এ্যাঞ্জেলেস টাইমসের। পেনসিলভানিয়ায় ডাকযোগে গ্রহণ করা ভোট গণনা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষ থেকে অঙ্গরাজ্যের আদালতে নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানানো হয়েছিল। পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা মাইক কেলিসহ কয়েকজন ট্রাম্প-সমর্থক ভিন্ন আরেকটি মামলা করেন। এই মামলায় ভোট সার্টিফিকেশনের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। মামলায় বলা হয়, অঙ্গরাজ্যের নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন করেছে। পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের সংবিধান ডাক ভোটের ঢালাও অনুমোদন দেয় না। সংবিধান সংশোধন না করে শুধু অঙ্গরাজ্য সভায় আইন করে এমন ভোট গ্রহণ করার কোন সুযোগ নেই। বিচারক পেট্রিসিয়া ম্যাককুলহ ট্রাম্প-সমর্থকদের আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর শুক্রবার পর্যন্ত অঙ্গরাজ্যের ভোট সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার আদেশ জারি করেন। শুক্রবার আদালতে এ ব্যাপারে পূর্ণ শুনানি হবে বলে জানানো হয়। অঙ্গরাজ্যের এ্যাটর্নি জেনারেল জোসে শাপিরো এক টুইট বার্তায় বলেন, বিচারকের এমন আদেশে নির্বাচনে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। কারণ, অঙ্গরাজ্যের ভোট ইতোমধ্যে সার্টিফাই করা হয়ে গেছে। তারপরও অঙ্গরাজ্য থেকে এমন আদেশের বিরুদ্ধে আপীল করা হবে। জোসে শাপিরোর এমন ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অঙ্গরাজ্যের সুপ্রীমকোর্টে এ নিয়ে নোটিস অব আপীল আবেদন করা হয়। পেনসিলভানিয়ার রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা ভোট জালিয়াতি নিয়ে নিজেরা একটি শুনানি গ্রহণ করেন। ঐতিহাসিক গেটিসবার্গ নগরীতে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের শুনানিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানিসহ অন্যান্য প্রচার কর্মকর্তা যোগ দেন। শুনানি চলাকালীন কিছু ভোটার উপস্থিত হয়ে তারা ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন। এ সময় কিছু ট্রাম্প-সমর্থক শুনানি স্থলের বাইরে ভোট বাতিলের জন্য স্লোগান দেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিজেরও পেনসিলভানিয়ার শুনানির সময় স্বশরীরে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করে শুনানি চলাকালে তিনি ফোন করেন। খোলা স্পীকারে শুনানি গ্রহণের জন্য নিজ দলের আইনপ্রণেতাদের তিনি ধন্যবাদ জানান। আবার বলেন, ভোট জালিয়াতি হয়েছে। এ নির্বাচনের ফল পাল্টে দিতে হবে। অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা চাচ্ছেন, আদালতের মাধ্যমে ভোটের সার্টিফিকেশন বাতিলের নির্দেশ নিয়ে আসা। এরপর তারা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন, অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট কোন প্রার্থীর পক্ষে যাবে। ফ্লিনকে ক্ষমা করে দিলেন ট্রাম্প ॥ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআইকে মিথ্যা বলার দায় স্বীকার করে নেয়া সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে ‘নির্দোষ’ একজন মানুষের পেছনে ডেমোক্র্যাটদের অন্তহীন তাড়ার চূড়ান্ত সমাপ্তি ঘটল বলে মন্তব্য করেছে হোয়াইট হাউস। ট্রাম্প বলেছেন, ফ্লিনকে ক্ষমা করার বিষয়টি ছিল ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত এবং শেষ পর্যন্ত তা করতে পেরে তিনি নিজেকে ‘সম্মানিত’ মনে করছেন। করোনা মোকাবেলাই বাইডেনের অগ্রাধিকার ॥ করোনা মোকাবেলাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে চাইছেন যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিভক্তির অবসান ঘটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কোভিড-১৯ মোকাবেলার ডাক দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, মানুষে মানুষে যুদ্ধ নয়, আমাদের যুদ্ধটা করোনার বিরুদ্ধে। ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যে দেয়া বক্তব্যে বাইডেন আরও বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণ ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে রায় দিয়েছে। ‘থ্যাংকস গিভিং’ ছুটির প্রাক্কালে নিজ এলাকা ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যের উইলমিংটনে বক্তব্য দেন বাইডেন। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বলেন, মার্কিনীরা নির্বাচনের ফল ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার পক্ষে দাঁড়াবে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরাজয় অস্বীকার করে নির্বাচনের ফল পাল্টে দেয়ার আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে বাইডেন এ কথা বলেন। বাইডেনের প্রথম ১০০ দিনের পদক্ষেপ ॥ যুক্তরাষ্ট্রের যেকোন প্রেসিডেন্টের জন্য প্রথম ১০০ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ের মধ্যে বোঝা যায় নতুন প্রশাসনের নীতি কি ধরনের হবে? ‘এ ফার্স্ট হান্ড্রেড ডে স্ট্যান্ডার্ড’ বা মানসম্মত প্রথম ১০০ দিনের পরিকল্পনা আসে ১৯৩৩ সালে প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের মাথা থেকে। তারপর থেকে এটি নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ কারণে অভ্যন্তরীণ তো বটেই, বহির্বিশ্বও মার্কিন নতুন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রথম ১০০ দিনের দিকে তাকিয়ে থাকবে। দেখে নেয়া যাক বাইডেন প্রশাসনের প্রথম ১০০ দিনের অগ্রাধিকারভিত্তিক কাজগুলো কি হবে? ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব নেবেন বাইডেন।
×