ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রদর্শনী

ইতিহাসের রঙে রেখায় প্রিয় পিতার মুখ

প্রকাশিত: ২৩:১০, ২৫ নভেম্বর ২০২০

ইতিহাসের রঙে রেখায় প্রিয় পিতার মুখ

মোরসালিন মিজান ॥ বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে আরও একটি প্রদর্শনী। আরও একটি বলার কারণ, এ জাতীয় প্রদর্শনী প্রায়শই হয়। হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার থেকে শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি আয়োজক বিবেচনায় আলাদা বৈশিষ্ট্যের। ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাস্কৃতিক কেন্দ্র এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। কোভিডের কাল। সবকিছুই এলোমেলো। এ অবস্থায় প্রদর্শনী আয়োজনের হ্যাপা আছে বৈকি। তবুও মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিল্পকলা একাডেমিকে সঙ্গে নিয়ে সীমিত পরিসর আয়োজন। শিরোনাম ‘বঙ্গবন্ধু স্টেটসম্যান অব দ্য এরা।’ সন্ধ্যায় চিত্রশালা প্লাজায় প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। শিল্পী তালিকায় রয়েছেন আব্দুল মান্নান, মুনিরুজ্জামান, কাদের ভূঁইয়া, কিরীটী রঞ্জন বিশ্বাস, সঞ্জিব দাস অপু, প্রশান্ত কর্মকার সৈয়দা মাহবুবা করিম মিনি, এস এম মিজানুর রহমান, জাকির হোসেন পুলক, মনজুর রশিদ, সৌরভ চৌধুরী ও মানিক বণিক। সকলেই বিভিন্ন সময়ে নিজেদের মতো করে মহান নেতার পোরট্রেইট গড়েছেন। নতুন পুরনো সেইসব ছবি নিয়েই চলমান প্রদর্শনী। এক শিল্পীর এক বা একাধিক ছবি দিয়ে দেয়াল সাজানো হয়েছে। অধিকাংশই পোরট্রেইট। মূলত বাঙালীর মহান নেতার অভিব্যক্তিগুলো রঙে রেখায় ফুটিয়ে তেলা হয়েছে। একেক অভিব্যক্তি যেন ইতিহাসের একেকটি ধাপ। বাঙালীর দুঃখ ক্ষোভ সংগ্রাম স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা জয়ের আনন্দকে ধারণ করে আছে। ক্ষণজন্মা নেতা ব্যক্তিত্বের গুণেও আর সবার থেকে আলাদা। এই ব্যক্তিত্বকে ক্যানভাসে ধারণ করা খুবই মুশকিলের কাজ। খ্যাতিমান শিল্পী আব্দুল মান্নান মুশকিলের কাজটিই আশ্চর্য সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছেন। তার এ্যাক্রেলিক অন ক্যানভাসকে ফটোরিয়ালিজম বলেই বোধ হয়। শিল্পী মুনিরুজ্জামানের ক্যানভাসেও ব্যক্তিত্ববান প্রাণবান পিতাকে খুঁজে পাওয়া যায়। আর কাদের ভূঁইয়ার ক্যাম্পাসে বিজয়ী মহানায়কের বেশে শেখ মুজিব। বিশাল ক্যানভাসে স্পেসের চমৎকার ব্যবহার করে বাঙালীর সংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরেছেন তিনি। প্রায় অভিন্ন অনুভূতি ক্যানভাসে তুলে ধরেছেন কিরীটী রঞ্জন বিশ্বাস। তেলরঙে আঁকা একটি ছবি এত বিশাল যে, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সুন্দর মানিয়ে যায়। তবে মাধ্যম ও মৌলিকত্ব বিবেচনায় ভীষণ নজর কাড়ে মিজানুর রহমানের ছবি। তিন ছবির একটি সিরিজ করেছেন তিনি। বোর্ডের ওপর ডেনিম। সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কোলাজ। কোথাও রঙের ব্যবহার করা হয়নি। তুলির ব্যাপার নেই। কাপড়ের টুকরোই রং রেখার বিকল্প হয়েছে। তার চেয়ে বড় কথা, প্রতিটি ছবিতে ভরপুরপ্রাণ বঙ্গবন্ধুকে পাওয়া যায়। প্রশান্ত কর্মকার অবিসংবাদিত নেতাকে তাঁর জনগণের মাঝ থেকে, ইতিহাসের পাতা থেকে খুঁজে নিয়েছেন। জাতীয় পতাকার রক্তলাল বৃত্তে তাঁকে আবিষ্কার করেছেন। শিল্পীর এ্যাক্রেলিক মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন অভিব্যক্তিতে ধরা দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। ইতিহাসের রঙে রেখায় আঁকা প্রিয় পিতার মুখ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেশ কিছুদিন দেখা যাবে। সুযোগ করে ঘুরে আসুন। অনুভব করুন পিতার সানিধ্য।
×