ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভূ-রাজনৈতিক কারণে মিয়ানমারকে তোয়াজ করা হচ্ছে ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০০:৩১, ২১ অক্টোবর ২০২০

ভূ-রাজনৈতিক কারণে মিয়ানমারকে তোয়াজ করা হচ্ছে ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ জাতিসংঘ ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও অনেক রাষ্ট্র এর কোনটিই মানছে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। খবর ওয়েবসাইটের। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ ও কানাডিয়ান দূতাবাস এবং কমনওয়েলথ আয়োজিত রোহিঙ্গা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়া এবং কোন কিছুকে তোয়াক্কা না করার বিপজ্জনক সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে। মিয়ানমার গণহত্যা, নারী নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ করার পরে কোন ধরনের দায়বদ্ধতা প্রদর্শন করেনি। একইসঙ্গে ভূ-রাজনৈতিক কারণে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়ন সহযোগিতা দেয়ার মাধ্যমে মিয়ানমারকে তোয়াজ করা হচ্ছে।’ রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার জন্য সবচেয়ে প্রথমে মিয়ানমার সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়াই দ্বিপক্ষীয়ভাবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো রোহিঙ্গা ইস্যুটি চাপা পড়ে ছিল এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুরু হওয়ার পরে রোহিঙ্গা সমস্যাটি বিস্ফোরিত হয়। ২০১৭ সালে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকার থাকলেও সমস্যাটি এত বিকট আকার ধারণ করে যে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মানবিক ও মানবাধিকার বিপর্যয়। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, গত তিন বছর ধরে ১১ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা টেনে চলেছে বাংলাদেশ এবং এই বোঝা আর টানতে ইচ্ছুক নয় সরকার। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মনে করিয়ে দিতে চাই, রোহিঙ্গাদের এই অন্যায় ও অন্যায্য বোঝা টানার সক্ষমতা এবং ইচ্ছা কোনটাই বাংলাদেশের নেই। তিনি বলেন, মিয়ানমারের মানবাধিকার লঙ্ঘন, বৈষম্যমূলক আচরণ ও গণহত্যা মেনে নিচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। চীন, ভারত, জাপান, আসিয়ানকে উদ্দেশ্য করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আরও যোগাযোগ করুন এই সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য, যাতে আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে যাতে করে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের দাবি মেনে নিয়ে তাদের আস্থা অর্জন করতে পারে। টেকসই প্রত্যাবাসনের চাবি মিয়ানমারের হাতে আছে এবং তারাই এই অচলাবস্থা ভাংতে পারে। অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মোনা তাসনিম, কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ডসহ অনেকে অংশ নেন।
×