ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিত্য নতুন ভয়ঙ্কর কৌশল আবিষ্কার দেশী প্রতারকদের পাশাপাশি রয়েছে বিদেশী

বিকাশ প্রতারক চক্র সক্রিয়

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ১৮ অক্টোবর ২০২০

বিকাশ প্রতারক চক্র সক্রিয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মেধাবী যুবকদের আইটি এক্সপার্ট বানানোর টোপ দিয়ে লাগানো হয় বিকাশ প্রতারণায়। তাদের চার ভাগে বিভক্ত করে পাঠানো হয় মাঠপর্যায়ে। তখনই তারা বুঝতে পারে এটা প্রতারণা করে বিকাশের টাকা আত্মসাত ছাড়া আর কিছুই নয়। কিন্তু আর ফেরার উপায় থাকে না। এ ধরনের ভয়ঙ্কর প্রতারক চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতারের পর ডিবি পুলিশ জানতে পারে মাঠ পর্যায়ে কতটা ভযঙ্কর এ চক্র। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সাইবার এ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ সাইফুল ইসলাম (২২), মোঃ লিটন হোসেন (২৩), মোঃ জুবায়ের শেখ (২২), মোঃ গোলাম কিবরিয়া ম-ল (১৯), মোঃ ইমরান মোল্লা (২৩), মোঃ শাওন হোসাইন ম-ল (১৮), মিনজারুল ইসলাম মোল্লা (২৫), মোঃ আশরাফ মোল্লা (২৬) ও সাগর আহম্মেদ (২৫)। গত শুক্রবার রাজধানীসহ ঢাকা এবং গাজীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের নিকট থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মডেলের ৫টি মোবাইল ফোন, ১০টি সিমকার্ড এবং ১টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বিকাশ প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রধানত ৪টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতারণা কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে। প্রথম গ্রুপ মাঠ পর্যায়ে অবস্থান করে বিভিন্ন বিকাশের দোকানে টাকা বিকাশ করার কথা বলে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে পূর্বে লেনদেনকৃত বিকাশ খাতার ছবি তুলে নেয় তারা। পরবর্তী সময়ে উক্ত ছবি হোয়াটসএ্যাপে দ্বিতীয় গ্রুপের কাছে স্থান উল্লেখ করে পাঠিয়ে দেয়। দ্বিতীয় গ্রুপ তার কাছে পাঠানো বিকাশ খাতা থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন নম্বরে বিকাশ দোকানদার সেজে কল করে এবং জানতে চায় যে, তাদের কাছে পাঠানো টাকা তারা পেয়েছেন কিনা এবং ক্যাশ আউট করেছেন কিনা। যদি বলে পেয়েছে কিন্ত ‘টাকা তুলেনি বা ক্যাশ আউট করেনি তখন প্রতারকরা তাদের প্রতারণার বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার শুরু করে। প্রতারণার ছলে বলতে থাকে যে, আমার দোকান হতে একই সময়ে কয়েকটি নাম্বারে পাঠানো টাকা নিয়ে অভিযোগ আসায় তাদের নাম্বার লক করতে গিয়ে আপনার নাম্বারও লক হয়ে গেছে। আপনাকে বিকাশ আফিস হতে ফোন করে আনলক করে দেবে। অল্প সময়ের ব্যবধানে তৃতীয় গ্রুপ বিকাশ কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস অফিসার পরিচয় দিয়ে, অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন এ্যাপসের মাধ্যমে বিকাশ অফিসের নাম্বার ক্লোনিং করে ফোন দেয়। ফোন করে বিভিন্ন কথার ছলে ওটিপি এবং বিকাশ পিনকোড নিয়ে নেয়। পরবর্তী সময়ে গ্রাহকের বিকাশ এ্যাকাউন্ট হ্যাক করে প্রতারক চক্র এ্যাকাউন্ট আনলক করার কথা বলে ভিকটিমের বিকাশ এ্যাকাউন্ট এবং প্রতারক চক্রের বিকাশ এ্যাকাউন্টে বিভিন্ন পরিমাণ টাকা দিতে বলে। এই ভাবে হাতিয়ে নেয়া টাকা মাঠ পর্যায়ে থাকা সর্বশেষ অর্থাৎ চতুর্থ গ্রুপের নিকট পাঠানো হয়। যারা বিভিন্ন হাত বদল করে ক্যাশ আউট করে, ফলে প্রতারকদের অবস্থান শনাক্ত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। উক্ত প্রতারকদের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
×