ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডিজিটাল মাধ্যমে চলছে ঢাকা কমার্স কলেজ

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

ডিজিটাল মাধ্যমে চলছে ঢাকা কমার্স কলেজ

মহামারী করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘমেয়াদি ছুটির ফাঁদে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঢাকা কমার্স কলেজ প্রথম থেকেই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অনলাইনে ডিজিটাল শিক্ষার প্রশিক্ষণ ও প্রাকটিস থাকায় কঠোর লকডাউনের সময়ও ঢাকা কমার্স কলেজের অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম শুরু থেকেই অব্যাহত আছে। এ কলেজের অনেক শ্রেণীকক্ষই মাল্টিমিডিয়াযুক্ত। এখানকার অধিকাংশ শিক্ষক মাল্টিমিডিয়ায় পাঠদানে সক্ষম। কলেজের একাদশ, অনার্স, মাস্টার্স ও প্রফেশনাল শ্রেণীর প্রয় ৫ হাজার শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের আওতাধীন। এমনকি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্যও বিশেষ প্রণোদনা ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষার্থী উপস্থিতি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সেকশনভিত্তিক অনলাইন অভিভাবক সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অনলাইন শিক্ষা ও অনলাইন পরীক্ষা পরিচালনায় কলেজের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ সন্তুষ্ট। কলেজ কর্তৃপক্ষের অনলাইন শিক্ষায় আগাম প্রস্তুতির কারণে করোনার মধ্যেও এ কলেজের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার গতি অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষায় দক্ষ নাগরিক গড়ার সুমহান লক্ষ্যে ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা কমার্স কলেজ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিক্ষানুরাগী ও বিদ্যুতসাহী উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে গঠিত গবর্নিং বডি কর্তৃক দক্ষ প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে কলেজটি। একাডেমিক কার্যক্রমসহ সার্বিক নিয়মশৃঙ্খলা রক্ষায় আপোসহীন মনোভাব ও সুদৃঢ় নীতিই কলেজটির উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে। আর এভাবেই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ঈর্ষণীয় ফলাফল করার মধ্য দিয়ে সীমিত সময়েই কলেজটি দেশ সেরা কলেজে উন্নীত হয়। শুরু থেকেই এ কলেজ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের মেধাক্রমে শীর্ষস্থান অর্জন করে আসছে। বোর্ড মেধা তালিকায় এ কলেজের শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে প্রতি বছরই মেধাস্থান অর্জন করে আসছে। এমনকি এ কলেজ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ১ম, ২য় ও ৩য় স্থানসহ ২০টি মেধাস্থানের মধ্যে ১৩টি মেধাস্থান অর্জন করে এক বছর রেকর্ড সৃষ্টি করে। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ঢাকা কমার্স কলেজ ১৯৯৬ ও ২০০২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শ্রেষ্ঠ কলেজের স্বীকৃতি লাভ করে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ র‌্যাংকিং ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭-এ পরপর তিনবার ঢাকা কমার্স কলেজ জাতীয় পর্যায়ে সেরা বেসরকারী কলেজ নির্বাচিত হয়েছে। ২০১৯ সালে ঘোষিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি প্রাক-মডেল কলেজের মধ্যে ১ম স্থান অর্জন করেছে ঢাকা কমার্স কলেজ। উচ্চমাধ্যমিকে ৯৯ ও ¯œাতকে মাত্র ১৮ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শ্রেণী কার্যক্রম শুরু করা এই কলেজের বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। শিক্ষক সংখ্যা ১৭০, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংখ্যা ১২৫ এবং পরিচালনা পর্ষদ ১৬ সদস্য বিশিষ্ট। এ কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণী ছাড়াও রয়েছে ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, মার্কেটিং, ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং, ইংরেজী, অর্থনীতি ও বাংলা বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স এবং বিবিএ (অনার্স) প্রফেশনাল, বিএসসি (অনার্স) ইন সিএসই কোর্স ও এমবিএ প্রফেশনাল কোর্স। ঢাকা কমার্স কলেজ এখন আর শুধু কমার্সের নয় প্রতিষ্ঠানটিতে বিজ্ঞান শাখাও খোলা হয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষার দেশ সেরা এ কলেজটি বিজ্ঞান বিষয়েও শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের অঙ্গীকার নিয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীতে বিজ্ঞান শাখায় ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করে আসছে। ঢাকা কমার্স কলেজের রয়েছে অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম, বৃহৎ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও সকল সম্মান শ্রেণীর বিভাগে স্বতন্ত্র সেমিনার লাইব্রেরি। কলেজের ৪ তলায় রয়েছে অত্যাধুনিক ৪টি কম্পিউটার ল্যাব। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও গণিতের ব্যবহারিক শিক্ষার জন্য রয়েছে আধুনিক সরঞ্জামসম্বলিত ৮টি সায়েন্সল্যাব। ডাইনামিক ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে কলেজের গুরুত্বপূর্ণ কার্যাদি সফটওয়্যারে সম্পাদন করা হয়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শ্রেণীকক্ষসমূহ শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণের সম্পূর্ণ উপযোগী করে গড়া হয়েছে। কলেজে গবর্নিং বডির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. সফিক আহমেদ সিদ্দিক। অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর মো. শফিকুল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ- প্রফেসর ড. মোঃ আবু মাসুদ এবং এ্যাকাডেমিক উপদেষ্টা প্রফেসর মোঃ মোজাহার জামিল। ঢাকা কমার্স কলেজ আইটি সেন্টারের পরিচালক এস এম আলী আজম বলেন, অনলাইন শিক্ষা, অনলাইন পরীক্ষা পদ্ধতি এবং অনলাইন এটেনডেন্স বিষয়ে শিক্ষকদের প্রথমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। কলেজে রয়েছে হাইস্পিডযুক্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ এবং করোনাকালে আইএসপি থেকে ইন্টারনেট এমবিপিএস বৃদ্ধি করা হয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাসে বসবাসরত সকল শিক্ষকের বাসভবনেও ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। পূর্বেই গঠিত কলেজ ভিডিও পোর্টাল ও চ্যানেলে শিক্ষকদের রেকর্ডকৃত ক্লাস প্রকাশিত হচ্ছে। ফলে এ কলেজে অনলাইন শিক্ষা ও পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সম্প্রতি উচ্চমাধ্যমিক স্তরে একসঙ্গে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থীর অনলাইনে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করে এ কলেজ রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন এটা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ।
×