ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রামেকে হামলার প্রতিবাদে মাঠে মুক্তিযোদ্ধারা

প্রকাশিত: ২১:১৮, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

রামেকে হামলার প্রতিবাদে মাঠে মুক্তিযোদ্ধারা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যু এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হামলায় মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজশাহীতে বিশাল মানববন্ধন পালন করা হয়েছে। শনিবার সকালে নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে কর্মসূচীর আয়োজন করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের রাজশাহী জেলা ও মহানগর ইউনিট কমান্ড। মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যু এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের ওপর হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছেন ইন্টার্ন নামের কিছু মাফিয়া চিকিৎসক। এ হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা। আর বিচার না হলে মুক্তিযোদ্ধারা শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করবেন। আগুন জ¦লবে পুরো রাজশাহীতে বলেও হুঁশিয়ারি দেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মহানগর শাখার সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে এবং সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ’৭১ রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, চিকিৎসা অবহেলায় মৃত্যু এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। বক্তারা বলেন, রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনা তদন্তে যে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এটি নিরপেক্ষ নয়। তদন্ত কমিটির সদস্যরা সকলেই চিকিৎসক। এ কারণে তারা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের রক্ষা করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। অচিরেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা না হলে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবেন। যেসব ইন্টার্ন চিকিৎসক হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আর এটি না হলে আমরাই তাদের বিচার করব। মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ভাল চিকিৎসক হওয়ার আগে ভাল মানুষ হতে হবে। কিন্তু চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবা দেন না। শুধু মুক্তিযোদ্ধারাই নন, দেশের সাধারণ মানুষও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত। কিছু চিকিৎসককে মনে হয়, এরা মাফিয়া গ্যাংয়ের সদস্য। তারা বলেন, রামেক হাসপাতালে বর্তমানে দুর্নীতি চরমে পৌঁছেছে। আর এ দুর্নীতি আড়াল করতেই হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেন না পরিচালক। আমরা অবিলম্বে রামেক হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চাই। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- মুক্তিযুদ্ধকালীন গেরিলা কমান্ডার শফিকুর রহমান রাজা, কবিকুঞ্জের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক, মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, রবিউল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, হাকিম আতাউর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মোর্শেদ রঞ্জু, মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন মোল্লা, নাজিম উদ্দিন প্রমুখ। এদিকে নতুন কর্মসূচী ঘোষণার জন্য সোমবার বেলা ১১টায় রাজশাহী মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলেও মানববন্ধন কর্মসূচী থেকে ঘোষণা করা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের বিচার নিশ্চিত করেই তারা ঘরে ফিরবেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে পারুল বেগম (৬৫) নামের এক নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে ওই নারীর ছেলেকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সেদিন বিকেলে আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাকিবুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তি মায়ের দাফনের কাজে অংশ নেন।
×