ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আদমদীঘিতে কাবিখা প্রকল্পে নয় ছয় কারবার !

প্রকাশিত: ১২:১৭, ২৭ জুলাই ২০২০

আদমদীঘিতে কাবিখা প্রকল্পে নয় ছয় কারবার !

নিজস্ব সংবাদদাতা, সান্তাহার ॥ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় কাবিখা প্রকল্পে নয়-ছয় কারবার করার অভিযোগ উঠেছে। পুকুর-জলাশয়, খাল-বিল খননে কর্মহীন শ্রমিকের পরিবর্তে মেশিন দিয়ে মাটি কাটা, সরকারি সম্পত্তির কাটা মাটির বিক্রি করে দেওয়া, বরাদ্দ করা খাদ্যের পরিবর্তে নগদ টাকায় কাজ করানো, মাটি কাটা শ্রমিক দিয়ে কাজ না করিয়ে শ্রমিকের ভুয়া তালিকা প্রদান, দায়সারা কাজ করে কাগজ-কলমে শতভাগ কাজ দেখানো হয়ে থাকে। সব শেষ ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের কাবিখা প্রকল্পের কাজেও নয়-ছয় কারবার করা হয়েছে বলে তথ্য মিলেছে। জানা গেছে, ওই অর্থ বছরে আদমদীঘি উপজেলার ছয় ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা)’র প্রায় এক ডজন প্রকল্পে ১৪৩ মেট্টিক গম বরাদ্দ হয়। প্রতিটি প্রকল্পের সভাপতি একজন করে ইউপি সদস্য। এর মধ্যে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে মরাকুড়ি নামক একটি সরকারি পুকুর খননে ৩০ মেট্টিক এবং সরু আকারের মাটির রাস্তা সংস্কারে ছয় মেট্টিক টন গম বরাদ্দ করা হয়। নীতিমালা মোতাবেক এই পুকুর খননে কর্মহীন শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটার কাজ করানোর কথা। কিন্তু তা করা হয়নি। মাটি কাটা হয়েছে ভেকু মেশিন দিয়ে। কিন্তু কাগজ-কলমে মাটি কাটা শ্রমিক দেখানো হয়েছে। এছাড়া এই পুকুর খননের অধিকাংশ মাটিগুলো মাটি ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করে দিয়েছেন। মাটি ক্রেতাদের একজনের সাথে আলাপে জানান, তারা মরাকুড়ি পুকুর থেকে কমপক্ষে তিন হাজার ট্রাক্টর মাটি কিনেছেন। এই প্রকল্পের সভাপতি ৩নং ইউ,পি সদস্য আলী মর্তুজা ওরফে কিনা মেম্বার তার আরেক প্রকল্প ছোট আখিড়া পাকা রাস্তা থেকে ইদগা পর্যন্ত পায়ে হাঁটা সরু রাস্তার উপর দুই পাশের জমি থেকে সামান্য মাটি ফেলে কাজ শেষ করেছেন। এবিষয়ে প্রকল্প সভাপতি আলী মর্তুজা’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দাবী করেন ওই পুকুর ১৮ফুট গভীর করে খনন করেছেন। প্রায় দুই বিঘা আয়তনের পুকুর ১৮ফুট গভীর করা হলে পুকুরের চার পাশে দ্বিগুন পরিমানেরও বেশী উচ্চতার মাটির স্তুপ থাকার কথা। কিন্তু সরেজমিন দেখা গেছে সামান্য পরিমান মাটি রয়েছে পুকুর পাড়ে। বিপুল পরিমান মাটি রাখার জায়গা না থাকায়“এদিক-সেদিক” দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন প্রকল্প সভাপতি। তবে কত ট্রাক্টর মাটি এবং কত টাকায় বিক্রি করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি মোটর সাইকেলে রয়েছেন এই অজুহাত দেখিয়ে ফোন সংযোগ কেটে দেন। এববিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমির হোসেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ ছাড়া কোন কথা বলতে পারবেন না বলে গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন।
×