ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঘরে বসেই দেখা যাবে গোয়ালঘর, কেনা যাবে কোরবানির পশু

প্রকাশিত: ২১:২৩, ৮ জুলাই ২০২০

ঘরে বসেই দেখা যাবে গোয়ালঘর, কেনা যাবে কোরবানির পশু

জনকণ্ঠ ফিচার ॥ কোরবানি ঈদের বিশেষ বাকি নেই। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে প্রস্তুতি। তবে এবার কোভিড পরিস্থিতির কারণে সব কিছু এলোমোলা। সাধারণ কোন নিয়মই আর কাজ করছে না। প্রতিদিনের জীবন, অভ্যাস সব একে একে বদলে যাচ্ছে। ঘরে থাকা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এখন সময়ের দাবি। আর সে দাবির কথা মাথায় রেখে পরিবর্তন আনা হচ্ছে কোরবানির পশু বেচাকেনায়। এবার সরকারী উদ্যোগে বসানো হচ্ছে ডিজিটাল হাট। ঘরে বসেই দেখা যাবে গোয়ালঘর। লাইভ ভিডিয়ো দেখে পশু পছন্দ করা ও কেনা যাবে। না, অনলাইনে কোরবানির পশু বেচাকেনা নতুন নয়। কয়েক বছর আগে দেশে এ ধরনের কেনাকাটার সূচনা করা হয়। বেসরকারী উদ্যোগ। প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত অপেক্ষাকৃত স্মার্ট ক্রেতারা ঝামেলামুক্ত এ কেনাকাটার সঙ্গে যুক্ত হন সহজেই। এখনও বেঙ্গল মিট বা বিক্রয় ডট কমের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি করছে। তবে হাটে গিয়ে পশু দেখা, দামাদামি করে কেনা বহুকালের চর্চা। অধিকাংশ ক্রেতা হাটে সশরীরে উপস্থিত হয়ে পশু কেনেন। এটাই ছিল স্বাভাবিক ছবি। এবার পরিস্থিতি, আগেই যেটি বলা হলো, সম্পূর্ণ আলাদা। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে পশুর হাটের সংখ্যা অনেক কমিয়ে আনা হচ্ছে। রাজধানীতে বসবে অল্পসংখ্যক হাট। ক্রেতারাও সচেতন। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না। এ অবস্থায় ক্রেতাদের উল্লেখযোগ্য অংশ অনলাইন হাটের প্রতি ঝুঁকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সব দিক বিবেচনায় মঙ্গলবার থেকে সরকারী উদ্যোগে চালু করা হয়েছে ডিজিটাল হাট। আগ্রহীরা ওয়েবসাইটে ঢুকে নিবন্ধন করে পশু বিক্রি বা কেনার কাজে অংশ নিতে পারবেন। উদ্যোগটির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছে সরকারের আইসিটি বিভাগ। ‘ফুড ফর নেশন’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কর্মসূচীটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিভাগটি বলছে, এই হাটের ক্রেতারা ঘরে বসেই গরু ছাগলের ছবি ও লাইভ ভিডিয়ো দেখতে পারবেন। পশুর ওজন ওজনসহ অন্যান্য তথ্য জানতে পারবেন। গরু চাষী, খামারি বা ব্যাপারীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগেরও সুযোগ রাখা হয়েছে। কথা বার্তায় উপয় পক্ষ সন্তুষ্ট হলে পশু হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা করা হবে। ক্রেতা নিজ উদ্যোগেও পশু সংগ্রহ করতে পারবেন। আইসিটি বিভাগ জানাচ্ছে, নিবন্ধনের পর বিক্রেতাদের নিজস্ব প্যানেল থেকে পশুর ছবি, ভিডিয়ো ও অন্যান্য তথ্য আপলোড করতে হবে। এসব ছবি ও তথ্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার তার নিজ খরচে প্রচার করবে। ফলে ক্রেতারা সহজেই তাদের কোরবানির পশু পছন্দ করার সুযোগ পাবেন। সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, ইতোমধ্যে সারাদেশ থেকে বিক্রেতারা নিবন্ধিত হতে শুরু করেছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭০ খামারি, ৩৯ স্বাধীন বিক্রেতা ও ১৩ ব্যাপারী নিবন্ধন করেছেন। ডিজিটাল হাট চালু করা ও এর লক্ষ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল। বর্তমান সরকার এ খাতটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। আজ তার সুফল পাচ্ছি আমরা। করোনার প্রাদুর্ভাবে সব যখন অচল হতে চলেছে তখন ডিজিটালি সব কিছু করছি আমরা। এরই অংশ হিসেবে হাট চালু করা হলো। এটি দেশের সবচেয়ে বড় ম্যাচ মেকিং ডিজিটাল হাট হতে যাচ্ছে বলেও আশা করেন প্রতিমন্ত্রী। বলেন, খামারি ও মালিকদের অর্থনৈতিক ক্ষতি ও তাদেরসহ ক্রেতাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আমরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমি সারাদেশের খামারি ও মালিকদের অনুরোধ জানাচ্ছি, আপনারা আপনাদের পশুর তথ্য নিয়ে এ প্ল্যাটফর্মে আসুন। আমরা দেশের সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষা অটুট রেখেই আমাদের অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় কর্মকা-গুলো চালু রাখতে চাই।
×