ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেট পাস ॥ সংক্ষিপ্ততম সময়ে দেশের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ

প্রকাশিত: ২২:২৩, ১ জুলাই ২০২০

বাজেট পাস ॥ সংক্ষিপ্ততম সময়ে দেশের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মহামারী করোনার কারণে সংক্ষিপ্ততম সময়ে মঙ্গলবার ইতিহাসের সর্ববৃহৎ বাজেট পাস হয়েছে। জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে নির্দিষ্টকরণ বিল ২০২০ পাসের মধ্য দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের নতুন বাজেট পাস হয়েছে। আর এই বাজেট পাসের মধ্যদিয়ে জাতীয় সংসদ ২০২০-২১ অর্থবছরের ব্যয় নির্বাহের জন্য সংযুক্ত তহবিল থেকে ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪২ কোটি ৪৪ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয় করার অনুমতি দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে কঠোর সতর্কতার মধ্যে এই বাজেট পাসে সব থেকে কম সময় ব্যয়ের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। গত ১১ জুন অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন। আর মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪২ কোটি ৪৪ হাজার টাকার বাজেট। আসলে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পাসকৃত বাজেটটি সরকারের ব্যালেন্সশিট অনুয়ায়ী এটি গ্রস বাজেট, যা পুরোপুরি ব্যয় হবে না। ব্যয় হবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত ১১ জুন ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার যে নিট বাজেট দিয়েছেন তা। সরকারের কিছু বাধ্যবাধকতার কারণে গ্রস বাজেটে অনেক ব্যয় দেখাতে হয়, যা ব্যয় হয় না। কিন্তু সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে বাজেটের ব্যালেন্সশিটে দেখাতে হয়। কারণ বিভিন্ন দাতাসংস্থা ও অন্যান্য খাতে বাজেটে সরকারের কিছু অর্থ বরাদ্দের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যা বাজেটের আয় ব্যয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে হিসাবে মেলানো হয়। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে আজ বুধবার ১ জুলাই থেকে এই বাজেট বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। বাজেট পাস উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে দেয়া বরাদ্দের অনুমোদন পেতে ৫৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা মোট ৫৯টি মঞ্জুরি দাবি সংসদে উত্থাপন করেন। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোট ৪টি মঞ্জুরি দাবি সংসদে উত্থাপন করেন। এগুলো হলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন বিভাগ। ৫৯টি দাবির মধ্যে সংসদ সচিবালয় এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগে কোন ছাঁটাই প্রস্তাব নেই। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অভ্যন্তরীণ সম্পদবিভাগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের একটি করে ছাঁটাই প্রস্তাব রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের চার থেকে ৯টি করে ছাঁটাই প্রস্তাব রয়েছে। দাবিগুলো নিষ্পত্তি শেষে বাজেট পাসের জন্য অর্থমন্ত্রী মোস্তফা কামাল নির্দিষ্টকারণ বিল ২০২০ সংসদে পেশ করেন। উপস্থিত সদস্যরা কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতিক্রমে অর্থমন্ত্রীর এই আইন অনুমোদনের মধ্যদিয়ে বাজেট পাস করে দেন। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দলীয় উপ-নেতা জিএম কাদেরসহ সরকার ও বিরোধী দলের কিছু সদস্য এ সময় উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, মহামারী করোনার কারণে পুরো বাজেট অধিবেশনেই সদস্যদের উপস্থিতি সীমিত রাখা হয়। বাজেট বরাদ্দ কাটছাঁটের জন্য প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিরোধী দল বিএনপি সদস্যরা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের উত্থাপিত ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে ৪২১টি ছাঁটাই প্রস্তাব অনেন। নিয়ম অনুযায়ী সবগুলো দাবির ওপর আলোচনার সুযোগ থাকলেও সময় স্বল্পতার কারণে সরকার ও বিরোধী দলের হুইপের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী ২টি মঞ্জুরি দাবির ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। দাবিগুলো হলো- আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্ব্য সেবা বিভাগ। এই দুই দাবির ওপর আনা ছাঁটাই প্রস্তাবগুলোর ওপর আলোচনা করেন জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু, পীর ফজলুর রহমান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বেগম রওশন আরা মান্নান ও বিএনপির হারুনুর রশীদ- এই পাঁচজন সংসদ সদস্য। মূলত তাদের আনা ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো ছিল নীতি অনুনমোদন, মিতব্যয় ও প্রতীক ছাঁটাই। এসব ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোনায় অংশ নিয়ে তারা সরকারের দুই মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির সমালোচনা করেন এবং করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ করেন। আলোচনা শেষে মঞ্জুরি দাবিগুলো কণ্ঠভোটে সংসদে গৃহীত হয়। সবমিলিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা আলোচনা শেষে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বাজেট পাস হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ উপস্থিত সরকারী ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়িয়ে ইতিহাসের সর্ববৃহৎ বাজেট পেশ করার জন্য অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। এরপর স্পীকার আগামী ৮ জুলাই সকাল ১১টা পর্যন্ত সংসদ অধিবেশন মূলতবি করেন। আইন মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের বিরোধিতা ॥ আইন মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের বিরোধিতা করে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা অভিযোগ করেন, প্রজাতন্ত্রের মালিক হচ্ছেন জনগণ, আমরা সেবক। আইন সবার জন্য প্রয়োগ হচ্ছে না। গরু চোররা বছরের পর বছর আদালতে ঘুরে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, আর হাজার হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠনকারীরা সামান্য একটা স্টে অর্ডার নিয়েই মুক্তভাবে ঘুরছেন। সরকারী কর্মকর্তাকে গ্রেফতারে অনুমতি লাগে, কিন্তু মন্ত্রী-এমপি-জনপ্রতিনিধিদের গ্রেফতারে কোন অনুমতি লাগে না। ৪৫ লাখ বিচারপ্রার্থীর বিপরীতে এতই বিচারক স্বল্পতা যে, এসব মামলাজট এক শ’ বছরেও শেষ হবে না। বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়, মনে হয় এখনও নির্বাহী বিভাগের অধীনে। মাদকসম্রাট, লুটেরা, ব্যাংক ডাকাত, বড় দুর্নীতিবাজরা এখনও বিচারের আওতার বাইরে। আইনের ফাঁক-ফোকরগুলো বন্ধ করতে হবে। জবাবে আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, মামলাজট অবশ্যই বর্তমান সরকার কমিয়ে আনবে, বিচারক নিয়োগ দেবে। অল্প সময়ে আমরা ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করতে পেরেছি বলেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ভার্চুয়াল কোর্ট চালু হলে মানুষ ঘরে বসে মামলা করতে পারবে, মামলা পরিচালনা করতে পারবে, বিজ্ঞ আইনজীবীরা বিদেশে বসেও আদালতে মামলা পরিচালনা করতে পারবেন। এমনি একটি নতুন যুগে আমরা প্রবেশ করতে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা যেভাবে কাজ করে যাচ্ছি, ইনশাল্লাহ মামলাজট বহুলাংশে হ্রাস পাবে। স্বাস্থ্য খাতের কঠোর সমালোচনা ॥ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের সমন্বয়হীনতায় ক্ষোভ এবং মন্ত্রী পরিবর্তনের দাবি তুলে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা। তারা মন্ত্রী পরিবর্তন করে প্রয়োজনে সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের দেশের সব কাজই করতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে, তাহলে এত মন্ত্রণালয় রাখার তো প্রয়োজন নেই। এখানে শুধুই সরকারী অর্থ ব্যয় হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কোন সমন্বয় নেই। রুগ্ন স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি সর্বত্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিমা কার্টুনে পরিণত হয়েছে। তাই চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। নকল মাস্ক-পিপিই সরবরাহে চিকিৎসক-নার্সরা আক্রান্ত হচ্ছে, অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। মন্ত্রী কোথাও যান না। দাবি উঠেছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অন্যত্র সরিয়ে মন্ত্রিত্ব পরিবর্তন করা উচিত। দেশে কোন হেলথ ডাটাবেজ নেই। স্বাস্থ্য বিভাগে চিকিৎসকদের নিয়োগ দেয়া হয় না, অন্য পেশার লোকদের নিয়োগ দেয়া হয়। করোনায় আল্লাহর রহমতে মৃত্যুর সংখ্যা কম হলেও আক্রান্ত ক্রমেই বাড়ছে। বেসরকারী হাসপাতালগুলো করোনা রোগী নেয় না, নিলেও লাখ লাখ টাকা বিল নেয়। সব হাসপাতালকে অধিগ্রহণ করতে হবে। জবাবে করোনা মোকাবেলায় সবার সহযোগিতা কামনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বলেন, আমাদের মধ্যে কোন সমন্বয়হীনতা নেই। করোনার চিকিৎসা কী, সংক্রমণ কীভাবে হয়- এসব বিশ্বের আগে কেউই জানত না, প্রস্তুতি ছিল না। ছাঁটাই প্রস্তাবে শুধুই আমাদের দোষারোপ করে গেলেন, কিন্তু গত চারটি মাস ধরে আমরা যে করোনা মোকাবেলায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি সে ব্যাপারে কেউ একটি কথাও বললেন না। সারাদেশে কমিটি গঠন করে কোভিড চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। সকলে মিলে কাজ করছে বলেই বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের মৃত্যুহার অনেক কম। কোভিডের জন্য ২ হাজার চিকিৎসক, ৬ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি, আরও ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে একটি ল্যাব ছিল, মাত্র দেড় মাসে ৬৮টি ল্যাবে উন্নীত করেছি। ৩০ লাখ পিপিই দেয়া হয়েছে, এক হাজার হাইফ্লো অক্সিজেনের অর্ডার দেয়া হয়েছে। এখনও ১৪ হাজার বেড করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এখানে দুর্নীতির কোন সুযোগ নেই। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের থাকা-খাওয়ার বিষয়ে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয় বলে দাবি করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকদের থাকা-খাওয়ার বিষয় নিয়ে যে কথা হয়েছে আমি খোঁজ নিয়েছি। ৫০টি হোটেল ভাড়া হয়েছে। সেখানে তিন হাজার ৭শ’ মানুষ এক মাস থেকেছেন। প্রত্যেকটি রুমের ভাড়া ১১শ’ টাকা। খাওয়ার খরচ যেটা বলা হয়েছে তা টোটালি রং (পুরোপুরি মিথ্যা)। সেখানে দিনের তিনটি খাবারের জন্য ৫০০ টাকা খরচ হয়েছে।’ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে জাতীয় পার্টির এমপি পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ডাক্তারদের খাবার বিল নিয়ে সংসদে কথা বলেছেন। সেখানে একটি কলার দাম দুই হাজার টাকা, একটি ডিমের দাম এক হাজার টাকা। একটি ব্রেডের এক স্লাইসের দাম তিন হাজার টাকা, দুই স্লাইস ছয় হাজার টাকা। করোনাকালেও স্বাস্থ্যখাতে এ অবস্থা।’ নির্দিষ্টকরণ বিল পাসের মাধ্যমে সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪২ কোটি ৪৪ লাখ ২১ হাজার টাকার মধ্যে সংসদের ওপর দায় ২ লাখ ৩৬ হাজার ১৯৮ কোটি ২০ লাখ ১৪ হাজার টাকা। এই টাকা অনুমোদনের জন্য সংসদ কর্তৃক কোন ভোটের প্রয়োজন হয় না। সরাসরি সংসদ এই টাকা অনুমোদন করে দেয়। অবশিষ্ট ৫ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৪ কোটি ২৪ লাখ ৭ হাজার টাকা ভোটের মাধ্যমে সংসদে গৃহীত হয়। গত ১০ জুন সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। এর পরের দিন ১১ জুন ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেটের শিরোনাম ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যত পথ পরিক্রমা’। অতীতে বাজেটের ওপর দীর্ঘ আলোচনার রেওয়াজ থাকলেও মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর ইতিহাসের সংক্ষিপ্ততম সময়ে বাজেট পাস হয়। এবার বাজেট অধিবেশনও ছিল অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে ভিন্ন। এবার প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা হয়েছে খুব সীমিত আকারে। যা দেশের সংসদীয় ইতিহাসে নতুন রেকর্ড। এবার সম্পূরক বাজেটের ওপর একদিন আলোচনা করে সেদিনই তা পাস করা হয়। মূল বাজেটের ওপর আলোচনা হয় মাত্র দুই দিন। সচরাচর বাজেট অধিবেশন দীর্ঘ হয়। অধিবেশনে সম্পূরক বাজেটের ওপর দুই থেকে চার দিন এবং সাধারণ বাজেটের ওপর ১২ থেকে ১৫ দিন আলোচনা হয়। বাজেট নিয়ে ৫০ থেকে শুরু করে ৬৫ ঘণ্টার মতো আলোচনা রেকর্ড রয়েছে। এর আগে ১৯৯৮ সালের বাজেট অধিবেশন ২০ কার্যদিবস চলেছিল। গত বছর ২০২০ সালে বাজেটের ওপর প্রায় ৫২ ঘণ্টার সাধারণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এবার মাত্র ৫ ঘণ্টার মতো মূল বাজেটের ওপর আলোচনা হয়। এক দিনের আলোচনার মাধ্যমে সম্পূরক বাজেট পাস হয়। আর বাজেটের ওপর আলোচনা হয় মাত্র দুদিন। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বসা অধিবেশনে সংক্রমণ এড়াতে প্রতিদিন ৮০-৯০ জন আইনপ্রণেতাকে নিয়ে কার্যক্রম চলেছে। এ পর্যন্ত মোট সাত কার্যদিবস চলে সংসদের অধিবেশন। গত সোমবার অর্থ বিল পাস করার পর মঙ্গলবার বাজেট জাতীয় সংসদে পাস হলো। এবারের বাজেট বর্তমান অর্থমন্ত্রীর দ্বিতীয় বাজেট। আর বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১২তম বাজেট। আজ ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে। নতুন বাজেটের আকার পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। মোট আয় তিন লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। জিডিপি আকার ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
×