ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফুটবল উন্নয়নে কাজ করবেন জামাল-সাবিনা

প্রকাশিত: ২২:০০, ২৯ জুন ২০২০

ফুটবল উন্নয়নে কাজ করবেন জামাল-সাবিনা

জাহিদুল আলম জয় ॥ যে কোন খেলাতেই সাফল্য পেতে হলে তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিভা বিকাশের বিকল্প নেই। তবে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিষয়টা প্রত্যাশিত নয়। এখনও ঠিকঠাকভাবে তৃণমূল পর্যায় থেকে পর্যাপ্ত খেলোয়াড় বেরিয়ে আসছে না। যে কারণে জাতীয় দলে মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ের সঙ্কট দেখা দেয়। দেশের ফুটবলে এ চিত্র চিরচেনা। মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ের অভাবে ভুগতে হয় জাতীয় ফুটবল দলকে। এ কারণে দেশের ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় বের করে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগে তারা যুক্ত করেছেন বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী ফুটবলের দলের অধিনায়ককে। অর্থাৎ পুরুষ দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও নারী দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনকে গ্রাসরুট ফুটবলের ব্র্যান্ড এ্যাম্বাসেডর বা শুভেচ্ছাদূত মনোনীত করা হয়েছে। রবিবার বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক জানান, তৃণমূলের ফুটবল কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার জন্য বাফুফে প্রাথমিকভাবে চার জেলাকে বেছে নিয়েছে। জেলাগুলো হলো- ঢাকা, ফেনী, নীলফামারী ও মাদারীপুর। আবু নাইম সোহাগ বলেন, ‘জামাল ভূঁইয়া ও সাবিনা খাতুন দুইজনই এ দায়িত্ব পালনে সম্মতি দিয়েছেন। তারা এই চার জেলায় গিয়ে সেখানে তৃণমূল ফুটবল উন্নয়নে সবাইকে কাজে উদ্বুদ্ধ করবেন। আমরা এএফসির গ্রাসরুট কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারলে সে আওতায় গ্রাসরুট কার্যক্রমগুলো সম্পাদন করতে পারব। এ জন্যই আমরা দুইজন এ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দিয়েছি। তাদের প্রধান কাজ হবে বাফুফের তৃণমূল কার্যক্রমের আওয়াতাধীন কাজে সম্পৃক্ত থাকা’। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) গ্রাসরুট চার্টারে তিনটি ক্যাটাগরি আছে। এগুলো হলো- ব্রোঞ্জ, সিলভার ও গোল্ড। ইতোমধ্যে এশিয়ার ২৮ দেশ এই গ্রাসরুট কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আগামী ডিসেম্বরে এএফসির কাছে ব্রোঞ্জ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করবে। মূলত এ লক্ষ্য সামনে রেখেই কাজ শুরু করেছে বাফুফে। তৃণমূলের ফুটবলের ব্র্যান্ড এ্যাম্বাসেডর করায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে ধন্যবাদ জানিয় জাতীয় পুরুষ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারশনকে ধন্যবাদ আমাকে তৃণমূল ফুটবলের ব্র্যান্ড এ্যাম্বসেডর হিসেবে বেছে নেয়ার জন্য। আমাকে মহতী এই উদ্যোগের পাশে নেয়ায় নিজেকে সম্মানিত বোধ করছি। আমি চেষ্টা করব যেন তরুণ প্রজন্মের খেলোয়াড়দের মাধ্যমে দেশের ফুটবল আরও এগিয়ে যায়। এই কাজে সম্পৃক্ত থাকতে পারাটা অনেক আনন্দের।’ বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে আমাকে তৃণমূল ফুটবলের ব্র্যান্ড এ্যাম্বাসেডর করার জন্য। ইচ্ছা থাকবে তৃণমূলের ফুটবল যেন আরও এগিয়ে যায়, ফুটবল নিয়ে যেন আমরা আরও কাজ করতে পারি। তৃণমূলের ফুটবল যেন আরও অনেক সমৃদ্ধ হয় সেই প্রত্যাশা। ধন্যবাদ সবাইকে।’ এর আগে ২০১৯ সালের আগস্টে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা- সেভ দ্য চিলড্রেনের ‘ইয়ুথ এ্যাম্বাসেডর’ হয়েছেন সাবিনা খাতুন। এক বছরের জন্য সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। তবে চুক্তির মেয়াদ আরও বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। এর ফলে প্রথম ফুটবল অঙ্গনের কেউ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের এ্যাম্বাসেডর হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। শিশুদের জন্য নানা সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি কিশোরীদের নিয়ে সংস্থাটির বিশেষ ‘সূচনা প্রোগ্রাম’ এ কাজ করছেন সাবিনা। সিলেট ও মৌলভীবাজারে এক লাখ কিশোরী নিয়ে কাজ করে ‘সূচনা প্রোগ্রাম’। কিশোরীদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখছেন তিনি। জামালের জাদুর ছোঁয়ায় আলাউদ্দিনের চেরাগের মতো পাল্টে যায় বাংলাদেশের ফুটবল। ইংলিশ কোচ জেমি ডে ও অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া লাল-সবুজের দেশের গেল বছরে চোখ ধাঁধানো সাফল্যের রূপকার। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে ভুটানের কাছে হারের পর নির্বাসনে চলে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু ২০১৮ সালের ২৭ মার্চ থেকে। ১৭ মাস আন্তর্জাতিক ফুটবলের বাইরে থাকার পর বাংলাদেশের ফুটবলে এসেছে আমূল পরিবর্তন। ২০১৯ সালে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স প্রদর্শন করেন সাদ, রায়হানরা। এখন যে কোন দলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে জানেন বেঙ্গল টাইগার্সরা। লড়াইয়ের এ ধারা ধরে রাখতে তৃণমূল থেকে ভাল মানের ফুটবলার বেরিয়ে আসার বিকল্প নেই। এবার সেই প্রচেষ্টার অংশীদার হলেন তারকা মিডফিল্ডার জামাল।
×