ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রুহুল আমিন ভূঁইয়া

চিত্রপুরীর দুই বন্ধুর গল্প

প্রকাশিত: ০০:১৫, ২৫ জুন ২০২০

চিত্রপুরীর দুই বন্ধুর গল্প

চিত্রতারকা নিরব ও ইমন, শোবিজ দুনিয়ায় পর্দা এবং পর্দার বাইরে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত। বিষয়টা তাদের ভক্তরা বেশ উপভোগ করেন। রিয়েল লাইফ বন্ধুত্ব ঢাকাই সিনেমায় আগে অনেক দেখা যেত। যদিও শোবিজ দুনিয়ায় এ রকম বন্ধুত্ব এখন আর তেমন দেখা যায় না। নিরব ও ইমন বড় হয়েছেন আলাদা-আলাদা পরিবেশে। পড়াশোনাও করেছেন ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। তাদের প্রথম দেখা হয় র‌্যাম্পে। দুজনের অভিষেকও র‌্যাম্প মডেলিংয়ের মাধ্যমে। প্রথম পরিচয়ে বন্ধুত্ব হয়নি, বলা যায় একে অপরের সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। দুই হাজার ছয় সালে একটি টেলিফোন কোম্পানির বিজ্ঞাপনে কাজ করতে গিয়ে বন্ধুত্বের যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে আজ অবদি চলছে তাদের বন্ধুত্বের রথ। নিজের সম্পর্কে এভাবেই জানালেন তারা। বন্ধুত্বের শুরুটা জানতে চাইলে নিরব বলেন, দুই হাজার ছয় সালে দুজনই মডেলিং করি। কাজের সূত্রে দুজনের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় দেখা হতো। তবে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয় বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনের সময়। বিজ্ঞাপনের শূটিংয়ের পনেরো দিন আগে গ্রুমিংয়ের জন্য এক জায়গায় থাকতে হয়। আমি আর ইমন একই রুমে ছিলাম। ব্যাচেলররা যে রকম একসঙ্গে রুম শেয়ার করে সে রকমই আমরা ছিলাম। একসঙ্গে থাকায় চেনা জানার পরিধি বাড়তে থাকে। ওই সময়টাই বেশি বোঝাপাড়া হয়েছে। এভাবেই বন্ধুত্ব শুরু। একসঙ্গে কাজ ও করছি। কখনও ভুল বোঝাবুঝি কিংবা মান-অভিমান হয়েছে? না সে রকম কখনই হয়নি। কেউ চেষ্টা করলেও পারেনি কারণ, আমাদের ভেতর বিশ্বাস এবং ভালবাসা ছিল। তৃতীয় পক্ষ কোন সুযোগ নিতে পারেনি। বন্ধুত্ব এমন একটা আস্থার জায়গা যে বিষয়টা অন্যের সাঙ্গে শেয়ার করা যায় না সেটি বন্ধুর সঙ্গে নির্দ্বিধায় শেয়ার করা যায়। পৃথিবীর সবাই ছেড়ে যাবে কিন্তু বন্ধু কখনও ছেড়ে যাবে না! ইমন বলেন, বন্ধুত্ব এমনই হওয়া উচিত। দুজন-দুজনকে বুঝবে। বন্ধুত্বে কখনও প্রতিযোগিতা থাকতে নেই। শত মান-অভিমান ভুলেও বন্ধুর ডাকে বন্ধু সাড়া দেবে। যেমনটা আমরা দুজনে সুখে-দুঃখে একে অপরকে পাই। আস্থার জায়গা থেকে অনেক কিছু শেয়ার করতে পারি। সার্কেল, শূটিং, কাজ ওঠাবসা সবকিছুই একসঙ্গে। আমাদের বন্ধুত্ব ছাপিয়ে যাওয়ার মতো কোন বন্ধুত্ব ইন্ডাস্ট্রিতে এখনও তৈরি হয়নি! করোনার সময়ও গত তিন মাসে দুজনের মধ্যে প্রচুর কথা হয়েছে। আমরা সবকিছু শেয়ার করি। আমরা একসঙ্গে আড্ডা দিলে সেই আড্ডাটি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। ভবিষ্যতেও এই বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। একসঙ্গে দুই বন্ধু আবারও কাজ করব। বারো বছরের বন্ধুত্বে কখনও ভুল বোঝাবুঝি হয়নি, ছিল পরস্পরের প্রতি অগাধ বিশ্বাস। এদিকে নতুন একটি কাজে একসঙ্গে পাওয়া যাবে এই দুই ইয়ার দোস্তকে। একটি রেডিওর শোতে উপস্থাপনা করবেন নিরব-ইমন। তাদের দুজনের উপস্থাপনায় অতিথি হিসেবে হাজির হবেন তারকারা। শোনাবেন তাদের তারকা হওয়ার গল্প। নিরব অভিনীত মুক্তির অপেক্ষায় আছে সৈকত নাসির পরিচালিত ‘ক্যাসিনো’ এবং ইমন অভিনীত সৈকত নাসিরের নির্মাণাধীন ‘আকবর’ চলচ্চিত্র। করোনারকালীন চিত্রনায়ক ও প্রযোজক অনন্তজলিল নতুন একটি সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। সেখানে নায়ক হচ্ছেন ইমন। দুই বন্ধু একসঙ্গে কাজ করলেও নিজেদের ভেতর কখনও প্রতিযোগিতা অনুভব করেননি। তৃতীয় পক্ষ তাদের বন্ধুত্বে কখনও ফাঁটল ধরাতে চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েছে বারবার। আগামীতে ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা ভাল হলে এবং নিয়মিত কাজ করলে তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত অপেক্ষায় থাকছে। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা এমনটা মানে করেন। তাদের ঘিরে সোনালি স্বপ্ন অনেকেরই।
×