ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনা আজ বিশ্বের এক অনুকরণীয় নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত ॥ হাছান মাহমুদ

প্রকাশিত: ২২:২১, ১৮ মে ২০২০

শেখ হাসিনা আজ বিশ্বের এক অনুকরণীয় নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত ॥ হাছান মাহমুদ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ শেখ হাসিনার ৪০তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন শুধু ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রত্যাবর্তন নয়, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অগ্নিবীণার প্রত্যাবর্তন। রবিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ সচিবালয়ে নিজ দফতরে সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী একথা বলেন। এ সময় ব্যক্তি শেখ হাসিনাকে পৃথিবীর সৎ ও কর্মঠ রাষ্ট্রনায়কদের অন্যতম হিসেবে বর্ণনা করে ড. হাছান বলেন, মাদার অব হিউম্যানিটি, চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ হিসেবে অভিষিক্ত শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের রাষ্ট্রনায়ক নন, শুধু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নন, তিনি আজ বিশ্বের সামনে একটি অনুকরণীয় নেতৃত্বের উদাহরণ। ড. হাছান বলেন, ১৯৮১ সালের এই দিন ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশে পদার্পণ করেছিলেন। তখন জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রকে বাক্সবন্দী করে মার্শাল ডেমোক্রেসি চালু করেছিল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নির্বাসিত করে দেশে পাকিস্তানী ভাবধারা ফিরিয়ে এনেছিল। তাই ১৭ মে ১৯৮১ সালে শুধু ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল না, এদিন ছিল গণতন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অগ্নিবীণার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন। ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু কন্যা যখন বাংলাদেশে ফিরে আসার প্রত্যয় ঘোষণা করেন, তখন জিয়াউর রহমান নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। পরবর্তীতে তাঁর অর্থাৎ জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা মনোভাব, তাঁর দেশে আসার প্রত্যয় ঘোষণা এবং আন্তর্জাতিক চাপের কারণে জিয়াউর রহমান তাঁকে দেশে আসতে দিতে বাধ্য হয়েছিল। দুঃখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, এমনকি দেশে আসার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর রক্তে ভেজা ৩২ নম্বর বাড়িতে গিয়ে একটি মিলাদ পড়াতে চেয়েছিলেন, জিয়াউর রহমান সে অনুমতিও দেয়নি। বাধ্য হয়ে রাস্তায় শামিয়ানা টাঙিয়ে মিলাদের ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। এমনই জিঘাংসা পরায়ণ ছিল জিয়াউর রহমান। সেদিনের প্রবল বর্ষণে মনে হচ্ছিল, প্রকৃতি বঙ্গবন্ধু কন্যাকে কাছে পেয়ে আনন্দাশ্রু বর্ষণ করছে আর মেঘের প্রচ- গর্জনে মনে হচ্ছিল, প্রকৃতি বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের প্রতি ধিক্কার প্রদর্শন করছে। সেদিন আমরা স্লোগান দিয়েছিলাম- ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, শেখ হাসিনা, আমরা আছি তোমার সাথে। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে একটি সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশের কথা উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ পরিচালনার জনগণের ম্যান্ডেট পেয়ে ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর বাংলাদেশের মানুষকে, এই জাতিকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য, বাংলাদেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করার জন্য প্রাণান্তর চেষ্টা করেছেন, দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন। তার নেতৃত্বে প্রথম ’৫০-এর দশক থেকে বহু বছরের খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ আজ ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, কোন কোন বছর খাদ্যে উদ্বৃত্ত। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে নাম মুছে ফেলে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, মহান ভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের সামনে উন্নয়নের রোলমডেল। আমরা কে কতটুকু শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকতে পেরেছি জানি না, কিন্তু গত ৩৯ বছরের পথ চলায় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ছিলেন এবং আজও আছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাঁকে ১৯ বার হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। কোটালিপাড়ায় ৭৬ কেজি বোমা পুঁতে, ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে পাখি শিকার করার মতো মানুষ শিকার করে, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুড়েও তাঁকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। বার বার মৃত্যুর উপত্যকা থেকে ফিরে এসেও মৃতুঞ্জয়ী শেখ হাসিনা বিচলিত হননি, দ্বিধান্বিত হননি, বরং আরও দীপ্তপদভারে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
×