ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কী কী নিয়ম মানলে শিশুদের করোনাভাইরাস থেকে দূরে রাখা যাবে

প্রকাশিত: ০৮:৫৭, ২৮ মার্চ ২০২০

কী কী নিয়ম মানলে  শিশুদের করোনাভাইরাস থেকে দূরে রাখা যাবে

অনলাইন ডেস্ক ॥ কয়েক দিন আগেও ভাবা হচ্ছিল যে কোভিড-২ করোনা ভাইরাসের কবল থেকে বাচ্চারা নিরাপদ। কিন্তু কাশ্মীর থেকে তেহট্ট সেই ভাবনাকে ভুল প্রমাণিত করল। যথেষ্ট সাবধান না হলে বাচ্চারাও রেহাই পায় না এই বিশ্ব মহামারি ডেকে আনা ভাইরাসের কবল থেকে। দেশ জুড়ে লকডাউনে সবারই আজ গৃহবন্দি থাকা উচিত। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা বেশ সমস্যা ডেকে আনছে। বদ্ধ ঘরে আটকে থাকতে অসুবিধে হচ্ছে। তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে বুঝিয়ে বলতে হবে। তাদের কিছু কাজে ব্যস্ত করে রাখলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এ বারে জেনে নিন কী কী নিয়ম মেনে চললে শিশুদের কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস থেকে দূরে রাখা যাবে। যে কোনও সংক্রমণ ঠেকানোর একমাত্র উপায় পরিচ্ছন্নতা, সে কথা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। লকডাউনের কারণে বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের অনেকটা সময় দিতে পারছেন। এই সুযোগটাকে কাজে লাগান। পরিচ্ছন্নতার পাঠ দিন। সারা জীবন ওরা এই নিয়ম মেনে চলবে। খাবার আগে হাতে সাবান দিতেই হবে, শুধুই যে ভাত খাবার সময় হাত সাবান দিয়ে ধোবে তা নয়, একটা চকোলেট খেতে গেলেও যে দু’হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। কেননা বাতাসে ভেসে থাকা করোনাভাইরাস-সহ নানান জীবাণু বাচ্চাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে মুখ দিয়েই। · অনেক শিশুর অভ্যাস দাঁত দিয়ে নখ কাটা আর আঙুল খাওয়া। এই অভ্যাস অবিলম্বে ছাড়াতেই হবে। কোনও অবস্থাতেই যেন মুখে, নাকে বা চোখে হাত না দেয়, তা পাখি পড়ার মতো করে শেখাতে হবে। · সার্স কোভ -২ করোনা ভাইরাস ড্রপলেট অর্থাৎ হাঁচি কাশি মারফৎ ছড়ায়। এই ব্যাপারে সাবধানে থাকতে হবে। কারুর সর্দি কাশি হলে তার ত্রিসীমানায় যেতে নেই এই বিষয়টা বাচ্চাদের বুঝিয়ে দিতে হবে। · প্রতিবেশী বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা একেবারেই মানা। · আত্মীয় বা বন্ধুদের বাড়িতে ডাকবেন না বা তাঁদের বাড়িতেও যাবেন না। সবাইকে বাড়িতেই থাকতে হবে। · কোনও প্রয়োজনে যদি নিজেদের বাজার-দোকান বা বাইরে যেতে হয়, হাজার বায়না করলেও বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে বেরবেন না। কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঠেকাতে এই ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি। বাইরে থেকে এসে সোজা বাথরুমে গিয়ে পোশাক বদলে হাত মুখ সাবান দিয়ে তবেই বাচ্চার কাছে যাবেন। কেননা বাইরে নানান মানুষের সংস্পর্শে থাকার জন্যে অদৃশ্য সার্স কোভ -২ করোনা ভাইরাস জীবাণু আপনার সঙ্গে বাড়িতে চলে আসতে পারে। · বাজারের ব্যাগ গরম জলে কেচে নেওয়া উচিৎ। বাচ্চা যেন বাজার সহ বাইরের কোনও জিনিসের সংস্পর্শে আসে। · যে সব বাচ্চার অ্যালার্জিজনিত হাঁচি সর্দি বা হাঁপানির প্রবণতা আছে তাদের সাবধানে রাখুন। দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টি অ্যালার্জিক অথবা প্রিভেন্টিভ ইনহেলার ব্যবহার করতে হবে। · অনেকেই বাড়িতে কার্পেট পেতে রাখেন ঘর পরিষ্কার রাখার জন্য। এই লকডাউনের সময়ে গৃহপরিচারিকার সমস্যায় অনেকেই কার্পেটের ওপর নির্ভরশীল। জেনে রাখুন, কার্পেট হল জীবাণুর আখড়া। তাই খোলা মেঝই ভাল। · অনেক ছোট বাচ্চা হামাগুড়ি দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এদের জন্যে দিনে নিদেনপক্ষে ২ বার ফ্লোরক্লিনার দিয়ে ঘর মুছে নেওয়া জরুরি। · ১ – ২ বছরের বাচ্চারা হাতের কাছে যা পায় মুখে দেওয়ার চেষ্টা করে। এই ব্যাপারেও সাবধান থাকতে হবে। কোভিড-১৯ ভাইরাস মুখ, নাক ও চোখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। তাই সব সময় খেয়াল রাখতে হবে। · বাচ্চাদের মল থেকে অনেক সময় করোনাভাইরাসের জীবাণু ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই পটির পর পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। · অনেক সময় মায়েরা আঁচল বা ওড়না দিয়ে বাচ্চার মুখ, নাক মুছিয়ে দেন। এর থেকে জীবাণুর সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। · বাড়িতে তৈরি পুষ্টিকর খাবার দিন। বাইরের খাবার একেবারেই দেবেন না। টাটকা চিকেন, ডিম, মাছ পাওয়া গেলে নির্ভয়ে খাওয়াতে পারেন। · কোভিড -১৯ করোনাভাইরাস নিয়ে আমরা আতঙ্কে থাকছি বটে, কিন্তু এই সময় বাচ্চাদের মধ্যে অ্যাডিনো ভাইরাস আর সোয়াইন ফ্লু-র ঝুঁকিও বাড়ছে। ভয় পাবেন না, কিন্তু সতর্ক থাকতে ভুলবেন না। পরিচ্ছন্নতাই সংক্রমণ রুখতে পারে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×