ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টিআইবিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন দুদকের আইনজীবী

প্রকাশিত: ১১:১৩, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

টিআইবিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন দুদকের আইনজীবী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী এ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। টিআইবির বিদায়ী চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল ও নতুন চেয়ারম্যান পারভীন হাসানের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এই আইনজীবী। তিনি বলেছেন, আপনি দুর্নীতি নিয়ে কথা বলার কে? আপনি কিভাবে দুর্নীতির ডাটা নিলেন? আপনাদের তো দুর্নীতির ওপর কোন জ্ঞানই নেই। আসুন আমার সঙ্গে বসুন। সামনা-সামনি ডিবেট (্বিতর্ক) করি। আপনাদের কাছে যে ডাটা আছে তার চেয়ে আমার কাছে ১০০ গুণ বেশি ডাটা আছে। আমি টিআইবিকে চ্যালেঞ্জ করছি। যারা দুদক সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান প্রদান করেন তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কি অবদান রেখেছেন? সম্প্রতি মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে দুদকের দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে টিআইবি যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তা প্রত্যাখ্যান করে দুদক আইনজীবী এ সমস্ত কথা বলেছেন। দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এ প্রতিনিধিকে বলেন, সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল ও নতুন চেয়ারম্যান পারভীন হাসানের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এ দুজনের মধ্যে একজন মানবাধিকারকর্মী অন্যজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক। ওনারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কি অবদান রেখেছেন? দুর্নীতি নিয়ে কি পড়াশোনা করেছেন। দুর্নীতির কি অবদানের জন্য তারা টিআইবির চেয়ারম্যান হলেন? সুলতানা কামাল সম্পর্কে খুরশীদ আলম খান বলেন, উনি মানবাধিকারকর্মী। মানবাধিকারকর্মী হলেই যে ওনার অগাধ জ্ঞান আছে অথবা উনি অত্যন্ত দক্ষ এটা বুঝার উপায় নেই। টিআইবির চেয়ারম্যান যিনি হবেন তার প্রোফাইল দিতে হবে। হাইকোর্টের বিচারপতি হলে তার যোগ্যাতা লাগে। ১০ বছর আইনজীবী অথবা জেলা জজ হিসেবে বিচার কাজ পরিচালনার অভিজ্ঞতা। সেই হিসেবে সুলতানা কামালের কোন যোগ্যতা নেই। নতুন চেয়ারম্যান যিনি হয়েছেন তারও কোন প্রোফাইল নেই। ২৫ ফেব্রুয়ারি ধানম-িতে টিআইবির কার্যালয়ে ‘দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ উদ্যোগ: বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর একটি ফলো-আপ গবেষণা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে বলা হয় , স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রশ্নে দুদককে পর্যাপ্ত স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে এবং আইনে কার্যক্রম সম্পর্কে বিশদভাবে বলা হয়েছে। তবে কার্যক্রম ও ক্ষমতার ব্যবহারের ক্ষেত্রে এর স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ। দুদক বিরোধীদলের রাজনীতিকদের হয়রানি, ক্ষমতাসীন দল ও জোটের রাজনীতিকদের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শন, রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ আচরণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। টিআইবির এই সংবাদ সম্মেলন প্রত্যাখ্যান করে দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, আপনি কে? আপনি কিভাবে ডাটা নিলেন? কয়টা কেসের ডাটা নিয়েছেন। আমার সঙ্গে বসুন। সামনা-সামনি ডিবেট করি। ওপেন লাইভ ডিসকাশন হবে। সরকারী কর্মচারীদের গ্রেফতার বিষয়ে যা বলা হয়েছে তাও সঠিক নয়। আমরা সরকারী কর্মচারীদের গ্রেফতার করেছি। ৩২(ক) সংশোধন করে যে ধারাটি যুক্ত করা হয়েছিল দুদক আইনে তা হাইকোর্ট অনেক আগেই বাতিল করেছে। রাষ্ট্রপক্ষ তা মেনে নিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ এতে কোন আপীল করেনি। এরপর থেকে অনেক সরকারী কর্মচারী দুদক আইনে গ্রেফতার হয়েছে। সরকারী কর্মচারী আইন ২০১৮ এটা দুদক আইনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আমি মনে করি টিআইবি ভবিষ্যতে শব্দ চয়নে সংশোধন হবে। টিআইবি যদি মনে করে তার রিপোর্টটি সঠিক তা হলে সামনা-সামনি বসার চ্যালেঞ্জ করছি। ওই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় খুরশীদ আলম খান টিআইবিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বিচারকরা দেখবেন আমাদের (দুদকের) গলদ কোথায়। আমরা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে আমি জানতে পেরেছি, টিআইবি দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট করেছে। এটা পক্ষপাতদুষ্ট। এটা প্রত্যাখ্যান করছি। কি বলব আর। আমার মুখের ভাষা নেই। খুরশীদ আলম খান আরও বলেন, সর্বোচ্চ আদালতে আমরা মামলা করি। আমরা লড়ছি। ওনারা বলছেন, আমরা পলিটিক্যাল পক্ষপাতদুষ্ট। কিভাবে বললেন?। টিআইবির একজন গবেষক আমার কাছে এসেছিলেন ইন্টারভিউয়ের জন্য। কথার ফাঁকে উনি বলছেন, ‘স্যার যদি আপনি নাম দিতে না চান, আমরা আপনার নাম দেব না। আমি বললাম নাম দিতে চাই। এই যে প্রশ্নটা, নাম যদি দিতে না চান, তথ্যদাতার নাম নিতে না চান, তথ্যদাতার নাম প্রকাশ না করেন, তাহলে কী ধরনের স্বচ্ছতা!। আমি কী করছি, কী পারফর্ম করছি, মধ্যমমান না নিম্নমান, এটা বেস্ট বলতে পারবে, যারা আমার অপজিশন ছিলেন তারা। যাদের বিরুদ্ধে আমরা মামলা করছি। তার চেয়ে বেশি জানবেন বিচারক। ওনারা দেখবেন আমাদের গলদ কোথায়।
×