ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাবস্থা

প্রকাশিত: ০৮:৫৬, ৫ জানুয়ারি ২০২০

বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাবস্থা

বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার প্রভাব গত এক দশকে তেমন দৃশ্যমান না হলেও চলতি বছরে তা প্রকট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক গবেষক, বিশ্লেষক এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থা। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্ব বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যে নিম্নগতি, তা বাংলাদেশের ওপরও ফেলতে পারে নেতিবাচক প্রভাব। বিশ্ব অর্থনীতির দুরবস্থার প্রতিবেদন উঠে এসেছে দ্য অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশনের (ওইসিডি) তথ্যে। সারা বছরই বিশ্ব বাণিজ্যের অসম প্রতিযোগিতায় আন্তর্জাতিক বলয়ে যে সঙ্কট তৈরি করে সেখানে বাংলাদেশও কোনভাবেই বিচ্ছিন্ন নয়। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক সংঘাত সব দেশের জন্য যে টানাপোড়েন তৈরি করেছে, বাংলাদেশও অনিবার্যভাবে তা থেকে মুক্ত থাকতে পারেনি। দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সংঘাতের অশুভ পাঁয়তারার জাল ক্রমশ বিস্তৃত হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠানোর আর্থিক সূচকে শক্তিশালী অবস্থানের কারণে সঙ্কট উত্তরণ করে যাচ্ছে। আমদানি ও রফতানি বাণিজ্যে সারা বিশ্বে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে বাংলাদেশেও পড়েছে তার নেতিবাচক প্রভাব। তথ্য-উপাত্ত থেকে জানা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় আমদানি কমেছে ৩.১৭ শতাংশ। প্রভাব পড়েছে আমদানিকৃত অনেক শিল্পপণ্যের ওপর। শিল্প বিকাশের প্রধান উপকরণ যান্ত্রিক কলা-কৌশলেরও আমদানি হ্রাস পেয়েছে। রফতানির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা লক্ষণীয়। জুলাই থেকে নবেম্বর পর্যন্ত রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ হাজার ৮০৫ কোটি ডলার। কিন্তু রফতানি হয়েছে ১ হাজার ৫৭৮ কোটি ডলার। বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, প্রধান রফতানি পণ্য গার্মেন্টসেই ৮% রফতানি ঘাটতি রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের অর্থনৈতিক শক্তি নির্ভর করে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধিকে নিয়ামক হিসেবে ধরে। তেমন মূল্যমানে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে উন্নত প্রবৃদ্ধির অঞ্চল বাংলাদেশের অবস্থান নজরকাড়া। তেমন ধারাবাহিকতায় এবারও বাংলাদেশ ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়া নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। বিশ্ব বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় দেশেও এর দাম বেড়েছে। ইতোমধ্যে চিনির দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু দিন আগে নিয়ন্ত্রণহীন পেঁয়াজের মূল্যের কারণে পণ্যটি খাদ্য থেকে বাদ দেয়া যায় কিনা তাও বিবেচনায় আসে। নতুন বছরের শুরুতে প্রতিদিনের ভোগ্যপণ্যের যাতে কোন সঙ্কট তৈরি না হয় সেদিকে তীক্ষè নজরদারি করতে হবে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে। এপ্রিলে শুরু হবে পবিত্র রমজান। সময় মতো প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর দাম সহনীয় এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা যা করতে হয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সবই করতে হবে জনস্বার্থেই।
×