ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বৃষ্টি হলে আবার শীত বেড়ে যাবে

আজ থেকে বেশিরভাগ এলাকায় তাপমাত্রা বাড়বে

প্রকাশিত: ১১:১৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯

আজ থেকে বেশিরভাগ এলাকায় তাপমাত্রা বাড়বে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রোদে উত্তাপ আসায় আগামী দুদিন সারাদেশে স্বাভাবিক শীত অনুভূত হবে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে ঘন কুয়াশা সরে যাওয়ায় এবং আকাশ থেকে মেঘ কেটে যাওয়ার কারণে দুদিন ধরে রোদের উত্তাপ পাওয়া যাচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে দিনেরবেলায় শীতের অনুভূতি কম অনুভূত হচ্ছে। আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থা চলতে পারে। এর পর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পুনরায় বৃষ্টিপাত হলে তাপমাত্রা কমে শীত আরও বাড়বে। এদিকে শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে সোমবার আরও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে উত্তরের জনপদে শীতে প্রান্তিক মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। মাঝারি থেকে তীব্র শৈতপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে কোথাও কোথাও। সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আগের দিন এই এলাকায় ৪.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এছাড়া ধারাবাহিকভাবে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে গত কয়েকদিন ধরেই। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এতে আগামী দু-তিন দিন স্বাভাবিক শীতের অনুভূতি থাকতে পারে। তবে নতুন বছরের শুরুতে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় আবারও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হতে পারে। এতে শীতের কষ্ট বাড়বে। আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, কুয়াশা ও মেঘ কমে আসায় দিনেরবেলা সূর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে তাপমাত্রাও বাড়ছে। তবে রাতের তাপমাত্রা আজও কিছুটা কমতে পারে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের কয়েক দিন বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈত্য উত্তরের জেলা ছাড়া বর্তমানে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাতে ছড়িয়ে পড়েছে। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, টাঙ্গাইল, মৌলভীবাজার ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। দেশের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ এবং টাঙ্গাইল, মৌলভীবাজার, কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। সোমবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বনিম্ন। সে সময় ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এছাড়া টাঙ্গাইলে ৯.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস, শ্রীমঙ্গলে ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস, রাজশাহীতে ৮.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস, ঈশ্বরদীতে ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস, বগুড়ায় ৮.৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস, বদলগাছিতে ৭.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস, রংপুরে ৯.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস, দিনাজপুরে ৭.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস, সৈয়দপুরে ৭.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস, ডিমলায় ৬.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস, রাজারহাটে ৭.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস, যশোরে ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস, চুয়াডাঙ্গায় ৮.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস ও কুমারখালীতে ৯.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। তারা বলছে, দেশের কিছু এলাকায় যে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকতে পারে। সোমবার দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। অস্থায়ীভাবে আকাশ থাকতে পারে মেঘলা। সারাদেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। কোথাও কোথাও মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত থাকতে পারে ঘন কুয়াশা। পঞ্চগড় রোদের উত্তাপ বাড়ায় বাড়ল তাপমাত্রা। তবে, বিকেলের পর সেই উত্তাপও কমে গেল। টানা ১২ দিন তীব্র ঠাণ্ডার পর রোদের উঞ্চতায় কিছুটা স্বস্তি পেল পঞ্চগড়ের মানুষ ও প্রাণীকুল। এরপরও সোমবার সকাল ৯ টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ৫ দশমিক শূন্য ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে কুয়াশাও। সন্ধ্যার পর কুয়াশায় ঢেকে যায় আকাশ। দিনেরবেলায় রোদের উঞ্চতায় শীত কম থাকলেও শীতের তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে সকাল ও সন্ধ্যায়। বিশেষ করে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত শীতের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি থাকছে। কুড়িগ্রাম মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ চলছে। হিমেল হাওয়ায় ঠা-ার প্রকোপ কমেনি। ফলে জনমানুষের দুর্ভোগ এখনও চরমে। গরম কাপড়ের অভাবে শীতকষ্টে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী অনেক মানুষ। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ঘন কুয়াশা শুরু হয় চলে সকাল দশটা পর্যন্ত। সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়া কাবু করেছে। সকালে সূর্যের মুখ দেখা না যাওয়ায় কাজে বের হতে পারেন না শ্রমিকশ্রেণীর খেটে খাওয়া মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদ দেখা গেলেও উত্তাপ তেমনটা নেই। ফলে বিপাকে এসব শ্রমজীবী মানুষ। ১১দিনের ঘন কুয়াশার কারণে বোরোর অনেক বীজতলা কোথাও কোথাও আংশিক নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, ঘন কুয়াশা কমে যাওয়ায় বোরো বীজতলার তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। নীলফামারী দেশের উত্তরের প্রান্তিক জেলা নীলফামারীতে পারদ নেমে শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। কুয়াশা ও মেঘ কেটে সূর্য উঠলে উত্তুরী হিম বাতাসের দাপট কমেনি। এদিকে শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এদিকে সকাল ১০ পর্যন্ত জেলা শহরসহ এর আশপাশ এলাকা ঘন কুয়াশায় ঢেকে ছিল। কিন্তু ৯টার পর সূর্যের দেখা মেলে। চট্টগ্রাম ঘন কুয়াশার কারণে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারেনি তিনটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। সকালে নামতে না পারা এই ফ্লাইটগুলো চলে যায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। তবে দুপুর নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সারওয়ার ই জামান জনকণ্ঠকে জানান, ভোর থেকে কুয়াশাচ্ছন্ন ছিল বিমানবন্দর এলাকা। মধ্যপ্রাচ্যের দোহা থেকে আসা রিজেন্ট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট অবতরণ করার কথা ছিল সকাল ৭টার দিকে। কিন্তু কুয়াশার কারণে সেটি অবতরণ করতে না পেরে ঢাকায় চলে যায় এরপর ৮টা ২২ মিনিটে আসে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইট। একই কারণে এই ফ্লাইটটিও অবতরণ করতে পারেনি।
×