ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিটি ভোটে কারা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন- চলছে বিশ্লেষণ

প্রকাশিত: ১০:০৮, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯

  সিটি ভোটে কারা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন- চলছে বিশ্লেষণ

মশিউর রহমান খান ॥ সব দলের অংশগ্রহণে জমে উঠেছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। সব দলই তাদের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে ব্যস্ত। প্রতিটি দলই ব্যস্ত দুই সিটির মেয়র ও ১৭২ কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন কাকে দেয়া হবে, কে যোগ্য তা নির্ধারণে। প্রার্থীদের অনেকেই ইতোমধ্যেই তাদের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। কয়েক দল মনোনয়ন ফরম ইতোমধ্যেই জমা দেয়ার কাজও শেষ করেছে। কেউ কেউ আবারও সময় বাড়িয়েছে। তবে প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি বামদলসহ সব দলই তাদের প্রার্থী মনোনয়নে চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই করছে। কে হবে দলের মনোনীত প্রার্থী এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সর্বশেষ তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম, এফবিসিসিআই পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীর, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম-সম্পাদক শহীদুল্লাহ ওসমানীসহ নয় ও কাউন্সিলর পদে ৪৭৩ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। দক্ষিণে মেয়র পদে বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকন, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক এ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরুসহ মোট সাত ও কাউন্সিলর পদে ৩৩৬ জন মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। শুক্রবার উত্তরের কাউন্সিলর পদে ৭০ ও দক্ষিণে ৭২ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। শুক্রবারই ছিল দলীয় ফরম জমা দেয়ার শেষ দিন। এদিকে মেয়র পদে ধানের শীষের প্রার্থী হতে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন দলীয় তিন প্রার্থী। ঢাকা দক্ষিণে ফরম জমা দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন ও উত্তরে দিয়েছেন ড. আসাদুজ্জামান রিপন ও তাবিথ আউয়াল। এ সময় দলীয় কার্যালয়ে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে তারা এ মনোনয়ন ফরম জমা দেন। এ উপলক্ষে আজ শনিবার বিকেল চারটায় চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে তিন প্রার্থীর সাক্ষাতকার নেবে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড। এ সময় লন্ডন থেকে তারেক রহমানও স্কাইপিতে মনোনয়ন বোর্ডে দলীয় মেয়র প্রার্থীদের সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে থাকবেন। মনোনয়ন বোর্ডেই দুই সিটিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। দুই সিটিতে কাউন্সিলর পদে বিএনপির মনোনয়ন ফরম জমা পড়েছে ৪৭৬। আজ শনিবার কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হতে পারে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির দফতর সম্পাদক সাইদুর রহমান মিন্টু সাংবাদিকদের জানান, দক্ষিণে অংশ নিতে ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর দু’দিনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ২২০, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরদের জন্য ৬০। আর এই ২৮০ ফরমই মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে জমা পড়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির দফতর সম্পাদক এবিএমএ রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানান, উত্তর সিটির নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে অংশ নিতে ফরম বিক্রি হয়েছে ১৬২টি। আর সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে বিক্রি হয়েছে ৩৪টি ফরম। আর ১৯৬টি ফরমই মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে জমা পড়েছে। দুই সিটিতে কাউন্সিলর পদে জমা পড়েছে ৪৭৬টি ফরম। এছাড়া জাতীয় পার্টিতে উত্তর সিটিতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল ইসলাম (অব) আর দক্ষিণে আলমগীর শিকদার লোটন ও হাজী সাইফুদ্দিন মিলন। এছাড়া বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দুই সিটি মিলিয়ে উত্তরে ১০০ জন ও দক্ষিণে ৫০ জন মোট ১৫০ জনের বেশি দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়, গ্রহণযোগ্য এবং ভোটারদের মধ্যে ভাবমূর্তির বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় গণভবেনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সভাপতিত্বে দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা হবে। সেখানে দুই সিটির মেয়র ও ১৭২ জন কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যারা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য বিতর্কিত হয়েছে, আমরা এমন কাউকে মনোনয়ন দেব না । বিতর্কের উর্ধে যারা আছে, যাদের কোন অপকর্মের রেকর্ড নেই, তাদের আমরা চয়েস করব। একসেপটেবল এ্যান্ড পপুলার ক্যান্ডিডেট, অর্থাৎ জনগণের কাছে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য এই ধরনের প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার জন্য আমাদের বোর্ড বসবে। সর্বাত্মকভাবে আমাদের নেত্রীরও ইচ্ছা ক্লিন ইমেজের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া। উল্লেখ্য,৩০ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। ২ জানুয়ারি যাচাই-বাছাই শেষে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে। ১০ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করতে পারবেন।
×