ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্কুলছাত্র রবিনের রোবট

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ৩০ নভেম্বর ২০১৯

 স্কুলছাত্র রবিনের রোবট

অত্যাধুনিক রোবট রবিন। যে বাংলা ও ইংরেজী দুই ভাষাতেই কথা বলতে পারে। শুধু তাই নয়; রোবট রবিন বলতে পারে তাকে সৃষ্টি করা ক্ষুদে বিজ্ঞানীর নাম, দেশের নাম, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির নাম। সে অকপটে যেকোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। এছাড়া কৃষকের জমিতে কখন কি পরিমাণ কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে তা সে নিজে থেকেই বলে দিতে পারবে এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও শিক্ষাবিষয়ক তথ্য বলে দিতে পারে। এমনকি তার আশপাশে আগুন লাগলে সে খবর দিতে পারবে ফায়ার সার্ভিসে এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তার অবস্থান দেখতে পাবে গুগল ম্যাপে। রবিন নামের অত্যাধুনিক এ রোবটটি আবিষ্কার করেছে আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা কালুপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী সন্তোষ কর্মকার ও গৃহিণী দীপ্তি কর্মকারের পুত্র স্কুলছাত্র শুভ কর্মকার। মা-বাবার দুই সন্তানের মধ্যে শুভ বড়। সে (শুভ কর্মকার) সরকারী গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। ছোট বেলা থেকেই বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করতেন বিজ্ঞানবিষয়ক আগ্রহ থেকেই। শুধু অংশই নিতেন তা নয়, সেসব প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও জিতে নিয়েছে শুভ। আর এসব কাজে থাকতে থাকতে একসময় তার মনে হলো সে একটা রোবট বানাতে পারবে। তবে তার রোবট হবে গতানুগতিক রোবট থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আর সে লক্ষ্য নিয়েই ২০১৮ সালের মে মাসে রোবট তৈরির কাজ শুরু করে শুভ। যা প্রাথমিকভাবে শেষ করা হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। রোবটের নাম রাখা হয় রবিন। শুভ কর্মকার জানায়, আমেরিকার একটি কার্টুন শোর সুপার হিরোর নামানুসারে তার আবিষ্কার করা রোবটটির নামকরণ করা হয়েছে। ক্ষুদে বিজ্ঞানী শুভ কর্মকার বলেন, ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে এবং ইউটিউব থেকে বিভিন্ন ভিডিও দেখে রোবট রবিনকে তৈরি করা হয়েছে। আগামীতে আমি রবিনকে আরও উন্নত করতে কাজ করছি। বর্তমানে তার দৃষ্টিশক্তি নেই-আগামীতে সে সকলকে দেখতে পারবে। সেই সঙ্গে কারও সঙ্গে একবার পরিচিত হলে তাকে পরবর্তীতে দেখলে চিনতে পারবে এবং বিভিন্ন সমস্যা নিজে দেখে সমাধান করতে পারবে। শুভ বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আমার এই রোবট অনেক কিছু নিজে নিজেই শিখতে পারে। এজন্য কোন কোডিংয়ের প্রয়োজন হয় না অর্থাৎ কিছুটা সেল্ফ লার্নিং আয়ত্ত করে নিয়েছে। সূত্রমতে, ক্ষুদে বিজ্ঞানী শুভ কর্মকার ইতোমধ্যে উপজেলা, জেলা ও ঢাকায় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছে। এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস জানান, শুভ শুধু উপজেলার নয় গোটা বরিশালের গর্ব। সে যে বাংলায় ও ইংরেজীতে কথা বলা রোবট তৈরি করেছে এটা পুরো বাংলাদেশের জন্য একটি সাফল্য। তার এ কাজের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। -খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল থেকে
×