ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হোম কন্ডিশনে প্রথম গোলাপি বলের টেস্ট খেলতেই অস্ট্রেলিয়ার সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছিল ভারত

এমনটাই চেয়েছিলেন কোহলি

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ২২ নভেম্বর ২০১৯

এমনটাই চেয়েছিলেন কোহলি

জিএম মোস্তফা ॥ অবশেষে গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলতে আজ মাঠে নামছে ভারত। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের এই ম্যাচ দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে গোলাপি বলের অভিজ্ঞতা লাভ করতে যাচ্ছেন রোহিত-কোহলিরা। এর আগেও অবশ্য প্রস্তাব পেয়েছিল ভারত। ২০১৭-১৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার দেয়া সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেয় তারা। বড় সফরে গুরুত্বপূর্ণ কোন সিরিজের আগে হঠাৎ করে পাওয়া সেই প্রস্তাব মেনে নেয়নি ক্রিকেটে পরাশক্তিতে পরিণত হওয়া দেশটি। বরং সময় নিয়ে, বুঝে-শুনে, পুরোপুরি প্রস্তুতি হয়েই গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলতে চেয়েছিল ভারত। শুধু তাই নয়, এই অভিজ্ঞতা লাভের জন্য হোম কন্ডিশনও চেয়েছিল বিরাট কোহলির দল। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের আগে এমনটাই জানিয়েছেন ভারতের অধিনায়ক। এ প্রসঙ্গে বিরাট কোহলি বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম গোলাপি বলের অভিজ্ঞতা পেতে। তবে হঠাৎ করেই একটা বড় সফরে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এমন সময়ে পিঙ্ক বলের টেস্টের আয়োজন করা হয়েছিল যখন আমরা কেউই গোলাপি বলে অনুশীলন করিনি। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তো অনেক দূরের কথা। সে কারণেই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেয়া হয়। গোলাপি বলে অভিজ্ঞতা লাভ করাটা ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম টেস্ট ম্যাচটা তাই হোম কন্ডিশনেই খেলতে চেয়েছিলাম। এরপর আমরা বিশ্বের যে কোন দেশে খেলতে পারব। একবার যদি আপনি এই বলে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তখন আর কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’ বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে তিনদিনেই অনায়াস জয় তুলে নেয় ভারত। এরপর থেকেই গোলাপি বলে পুরোদমে অনুশীলন শুরু করে দেয় কোহলির দল। কয়েকদিনের অনুশীলনের পর কোহলি গোলাপি বল নিয়ে জানালেন, লাল বলের ক্ষেত্রে দুরন্ত কৌশলের পাশাপাশি জটিল খেলা প্রয়োজন। তবে গোলাপি বলে এর সঙ্গে যোগ হয় বলের রঙের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা। কোহলির মতে, ‘ভারতে গোলাপি বলের চ্যালেঞ্জ একটাই, তা হলো শিশির। শিশির এমন একটা বিষয়। যা আগে থেকে আঁচ করা যায় না। সময় অনুযায়ী শুধু খেলতে হয়।’ চ্যালেঞ্জ থাকলেও তা মোকাবেলা করতে প্রস্তুত বিরাটবাহিনী। কোহলি বলেন, ‘মাঠে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ক্যাচ নেয়ার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। অতিরিক্ত এজের কারণে বল খুব দ্রুত মুভ করবে। নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য আমরা প্রস্তুত।’ ভারতীয় অধিনায়ক এ সময় আরও বলেন, ‘গোলাপি বলে ফিল্ডিং সেশনটাই সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের হয়ে থাকল। দর্শকরা সম্ভবত বুঝতেই পারবেন না, ফিল্ডিং করা কতটা কঠিন। অন্যান্য বলের তুলনায় গোলাপি বল একটু বেশিই ভারি। কোন সন্দেহ নেই, বলের ওজন একই। তবে হাতে নিলে মনে হচ্ছে সামান্য ভারি।’ সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সৌরভ গাঙ্গুলী। মূলত তার আপ্রাণ চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত দুই দল রাজি হয় কৃত্রিম আলোয় টেস্ট খেলার জন্য। যার ফলেই ইডেন গার্ডেন্সে রচিত হচ্ছে আজ নতুন ইতিহাস। দিন-রাতের টেস্ট করার পেছনে আসল উদ্দেশ্য সমর্থক বাড়ানো। খেলার এই প্রাচীন ও দীর্ঘ ফরমেটের জন্য টিভির সামনেও দর্শক সংখ্যা বাড়াতে মরিয়া আয়োজকরা। ২০১৫ সালে প্রথম গোলাপি বলে টেস্ট খেলা হয়। কিন্তু এতদিন ভারত-বাংলাদেশ এই বলে টেস্ট খেলেনি। দুই দলের জন্যই তাই আজ নতুন অভিজ্ঞতা। আগামী বছরেই অস্ট্রেলিয়া সফর করবে ভারত। সেই সিরিজেও গোলাপি বলের টেস্ট দেখা যেতে পারে। সেই ইঙ্গিত বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাঠে নামার আগেই দিয়ে রাখলেন কোহলি। পাশাপাশি ভারতীয় অধিনায়ক আরও জানিয়েছেন, ‘যেখানেই খেলা হোক না কেন, তার আগে একটা অনুশীলন ম্যাচ রাখতেই হবে।’ তবে সেটা এখন সময়ের হাতে। কোহলির নজর এখন শুধুই বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে। ইন্দোরে বাংলাদেশকে চূর্ণ করে ভারত সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে। ইডেনের ঐতিহাসিক টেস্ট জিতে সিরিজটাকেও নিজেদের করে রাখতে মরিয়া কোহলি-রোহিত-সামিরা।
×