ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পেঁয়াজ খালাসে ব্যাপক প্রস্তুতি শাহজালাল বিমানবন্দরে

প্রকাশিত: ১০:৫৭, ২০ নভেম্বর ২০১৯

পেঁয়াজ খালাসে ব্যাপক প্রস্তুতি শাহজালাল বিমানবন্দরে

আজাদ সুলায়মান ॥ পেঁয়াজ খালাসে প্রস্তুত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফ্লাইট অবতরণের এক ঘণ্টার মধ্যেই পেঁয়াজ খালাস করাসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে। ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর বিমানবন্দরে খোলা হয়েছে বিশেষ ডেস্ক। এদিকে আকাশপথে জরুরী ভিত্তিতে পেঁয়াজ আমদানির খবর ছড়িয়ে পড়ায় বাজারে দাম কমছে ব্যাপকহারে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় যেভাবে দাম বেড়েছিল, সেভাবেই দাম কমে আসছে। সোমবার যে পেঁয়াজ ছিল ২৩০ টাকা, সেটা মঙ্গলবার বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। দু’দিনেই পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিপ্রতি এক শ’ টাকায়। আকাশপথে আমদানি আর নতুন মুড়ি কাটা পেঁয়াজের আগমনে বাজারে যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে। আজ রাতে পেঁয়াজ আসার এক ঘণ্টার মধ্যেই তা খালাস করে টিসিবির হাতে দেয়া হবে। আগামীকাল সকালে যে কোন মূল্যে সেই পেঁয়াজ টিসিবি বাজারজাত করবে বলে নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্যসচিব ড. জাফর উদ্দিন। টিসিবি সেই পেঁয়াজ বিক্রি করবে মাত্র ৪৫ টাকায়। তখন বাজার আরও পড়ে যাবে। তিনি আশার বাণী শুনিয়েছেন, আগামীকাল পেঁয়াজের মূল্য নেমে আসবে ৭০-৮০ টাকায়। এদিকে গত দু’দিন ধরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আলোচনার শীর্ষে রয়েছে পেঁয়াজ। বিমানন্দরের কার্গো হাউসে ব্যতিব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে বিমান, কাস্টমস, ফ্রেইট ফরোয়ার্ড ও নিরাপত্তাকর্মীদের। তারা কত দ্রুততম সময়ে পেঁয়াজ খালাস করার কৌশল ঠিক করেন। জানা গেছে, মঙ্গলবার মিসর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজবাহী কার্গো বিমান আসার কথা ছিল। কিন্তু সেটা সিডিউল না পাওয়ায় আসতে পারেনি। এজন্য আজ বুধবার রাতে ঢাকায় আসবে তবে কার্গোতে নয়। একটি যাত্রীবাহী বিমানে করে আসবে পেঁয়াজের এই চালান। তার পাশাপাশি কার্গো বিমানেও আসবে একটি চালান। এরপর আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে প্রতিদিন একটি করে কার্গো বিমান পেঁয়াজ আনা হবে ঢাকায়। এ সম্পর্কে সিভিল এভিয়েশনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মিসর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ নিয়ে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ ঢাকার পথে রয়েছে। পেঁয়াজবাহী এই উড়োজাহাজ এসভি-৩৮০২ মিসরের কায়রো বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের জেদ্দা হয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে আজ রাতে। পেঁয়াজের এসব চালান সরকারী সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) হস্তান্তর করা হবে। যা টিসিবির ব্যবস্থাপনায় বাজারজাত করে ক্রেতার হাতে পৌঁছানো হবে। এ বিষয়ে বিমানবন্দরের সূত্র জানিয়েছে, সাউদিয়া এয়ারের ওই ফ্লাইটটিতে যে পেঁয়াজ আসছে তার আমদানিকারক এস আলম গ্রুপ। ওই পেঁয়াজ খালাসের পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিসমিল্লাহ এয়ারলাইন্সের কার্গো বিমান (বিএইচএ-৫৪১৯) পেঁয়াজ নিয়ে কায়রো থেকে সরাসরি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৬টায়। ওই ফ্লাইটের পরেরদিন অর্থাৎ আাগামী শুক্রবার রাত ১টায় সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি কার্গো ফ্লাইট কায়রো থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আসবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। প্রথম চালান কেন যাত্রীবাহী বিমানে আনা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, জরুরী ভিত্তিতে নন সিডিউল কার্গো ফ্রেইট পাওয়া যায়নি। সেজন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে পেঁয়াজের প্রথম চালানটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে করে আনা হচ্ছে। এরপর সবগুলো চালান আসবে কার্গো ফ্রেইটেই। এতে দেশীয় বিসমিল্লাহ কার্গো এয়ার ও তার্কিশ এয়ারের ফ্রেইটের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। সিভিল এভিয়েশনে এ দুটো এয়ারলাইন্স নন সিডিউল ফ্লাইট হিসেবে অনুমতিও পেয়েছে বলে জানিয়েছেন একজন কর্মকর্তা। কতদিন চলবে এ আমদানি জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব ড. জাফর উদ্দিন গতরাতে দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম যৌক্তিক ও সহনশীল পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত এভাবে প্রতিদিনই আসতে থাকবে। কার্গো বিমানে করে যতটা বেশি আনা সম্ভব ততটাই আনার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। আকাশপথে মিসর থেকে আনা পেঁয়াজ দিনে দিনেই বিমানবন্দর থেকে খালাস করার সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এরপর থেকে প্রতিদিন একটি করে পেঁয়াজবাহী কার্গো বিমান সরাসরি মিসরের কায়রো থেকে ঢাকায় আসবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিমানবন্দর থেকে এসব পেঁয়াজ ছাড়করণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডেলিং, সিভিল এভিয়েশন এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
×