ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এরশাদের আসন নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপার সমঝোতা চেষ্টা

প্রকাশিত: ১১:০৬, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

এরশাদের আসন নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপার সমঝোতা চেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসন নিয়ে জোট সঙ্গী আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে জাতীয় পার্টি। এ আসনের উপনির্বাচনে এরশাদের ছেলে রাহগীর আল মাহী সাদের (সাদ এরশাদ) পথ পরিষ্কার করতেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনা করছে জাতীয় পার্টি। তবে এ বিষয়ে এখনও কোন অগ্রগতি হয়নি বলে জানা গেছে। সোমবার বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, এখনও স্পষ্ট কিছু বলার সময় আসেনি। তবে ১৬ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, রংপুর-৩ আসন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার কোন সম্ভাবনা আছে কি না। উত্তরে জিএম কাদের বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা বলতে পারছি না। হবে না এটাও বলতে পারছি না। এ বিষয়ে আমরা কথা বলার চেষ্টা করছি, আলাপ আলোচনা কিছুটা করেছি। আমরা এখনও কোন ঐকমত্যে আসতে পারিনি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছি, উনারাও বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত আর দুই চারদিনের মধ্যেই আমরা নিশ্চিত হব।’ ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিকুল গণি স্বপন জেতার পর থেকে রংপুর আসনটি আর কখনও জাতীয় পার্টির হাতছাড়া হয়নি। সর্বশেষ দুটি নির্বাচনে এ আসন থেকে এমপি হয়েছিলেন পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের ওই নির্বাচনে এরশাদের বিপরীতে কোন প্রার্থী দেয়নি মহাজোটে তাদের শরিক আওয়ামী লীগ। চলমান একাদশ সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা এরশাদ গত ১৪ জুলাই মারা গেলে রংপুর-৩ আসনটি শূন্য হয়। ৫ অক্টোবর ভোটের দিন রেখে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগ আভাস দিয়েছিল, এবার তারা আর রংপুরে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিতে চায় না। এরশাদের আসনে উপনির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজুর নাম ঘোষণা করা হয় গত শনিবার। এদিনে নানা নাটকীয়তার পর জাতীয় পার্টি রবিবার জানায়, দলের প্রতিষ্ঠাতার আসনে তার ছেলে রাহগীর আল মাহী সাদকেই (সাদ এরশাদ) মনোনয়ন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই উপনির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করা নিয়ে বিভেদ থেকে নেতৃত্বের কোন্দল তুঙ্গে ওঠায় জাতীয় পার্টি ভেঙ্গে যাওয়ারও উপক্রম হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ এবং ভাই জিএম কাদেরের মধ্যে দল ও সংসদে ক্ষমতা ভাগাভাগির রফায় আপাতত রক্ষা হয়। এরশাদের স্ত্রী ও দলের জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান রওশন এই আসনে ছেলে সাদকে প্রার্থী করতে চাইলেও তার বিরোধিতা করছিলেন রংপুরের নেতারা। এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফের সমর্থকরা সাদের কুশপুতুল পোড়ান। জাপার সাবেক সংসদ সদস্য আসিফ সোমবার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ফলে রাজনীতিতে নবিস সাদকে এখন নিজের চাচাত ভাইয়ের বিরুদ্ধেও লড়তে হবে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা যারা কমিটিতে ছিলাম, তারা বসে আলোচনা করেছি এবং তার বাইরেও কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে আমরা খোলামেলা আলোচনা করেছি। সার্বিক বিবেচনায়, সবকিছু হিসাব করে আমরা তাকে (সাদ) নমিশেন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আশা প্রকাশ করেন, দল যেহেতু মনোনয়ন দিয়েছে নেতাকর্মীরা তার হয়েই কাজ করবে। আসনটি জাতীয় পার্টির হাতেই থাকবে। রংপুর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই আসনের প্রার্থিতা নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে দলের জেলা ও মহানগর কমিটির মধ্যে।
×