ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তেজনা সত্ত্বেও কাশ্মীর নিয়ে যুদ্ধের ইচ্ছা নেই ভারতের

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

উত্তেজনা সত্ত্বেও কাশ্মীর নিয়ে যুদ্ধের ইচ্ছা নেই ভারতের

বিরোধপূর্ণ কাশ্মীর নিয়ে উত্তেজনা বাড়লেও ভারত সরকার জানিয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের কোন ইচ্ছা নেই তাদের। সংঘাতের যেকোন কথাবার্তা আতঙ্ক সৃষ্টি করা মাত্র। নিউইয়র্ক টাইমস। ভারত সরকারের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, যুদ্ধের সম্ভাবনাসহ ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতির যে কথা পাকিস্তান প্রচার করছে, তার লক্ষ্য হলো আতঙ্ক সৃষ্টি। এটা বাস্তব অবস্থা থেকে অনেক দূরে। ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা’ বাতিলের পর ওই অঞ্চলকে অবরুদ্ধ করে রাখা, হাজার হাজার মানুষকে গ্রেফতার এবং ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে ভারত। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যেকার পার্বত্য অঞ্চল কাশ্মীরের কিছু অংশ নিজেদের বলে দাবি করে আসছে পাকিস্তানও। এর ফলে কয়েক দশক ধরে সেখানে অস্থিরতা বিরাজ করছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে, ভারত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় সেখানে ব্যাপক সহিংসতা দেখা দেবে। তাদের আশঙ্কা পরমাণু শক্তিধর চিরবৈরী দুই দেশের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাত দেখা দিতে পারে। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, কাশ্মীর ও এর জনগণের ওপর নির্যাতন বন্ধে বিশ্ব যদি পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এর ফলে পুরো বিশ্বকেই ফল ভোগ করতে হবে। কারণ পরমাণু শক্তিধর দেশ দুটি সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। ভারত জানায়, পাকিস্তানের কৌশল হচ্ছে পরিস্থিতির ভয়াবহ অবস্থা তুলে ধরা, পরমাণু যুদ্ধের ভয় দেখানো এবং কাশ্মীরে হস্তক্ষেপ করার জন্য সবাইকে সতর্ক করা। কিন্তু ভারত এটাকে অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে দেখছে। অতীতে বেশ কয়েকবার কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধ হয়েছে। বিতর্কিত সীমানা নিয়ে আবারও দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে এবং এই প্রেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ সমঝোতার জন্য ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তিক্ততা ক্রমেই বাড়ছে এবং এটা আরও নিজস্ব দিকে মোড় নিচ্ছে। ইমরান খান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বকে জার্মানির নাৎসির সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বলেন, শুধু বাণিজ্য ও ব্যবসার কারণে ভারতকে খুশি করা উচিত নয় বিশ্বের। ভারতের অর্থনীতি পাকিস্তানের চেয়ে ৯ গুণ বড়। বিষয়টি অনেক দেশই বিবেচনা করছে এবং তারা এখানে ব্যবসা করতে আগ্রহী। এ কারণে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের পদক্ষেপের সমালোচনা করতে আগ্রহী নয়। কাশ্মীরের নির্বাচিত প্রায় সব নেতাকে গ্রেফতার করার অবশ্য সমালোচনা করা হয়েছে। দিল্লীতে মার্কিন দূতাবাসের মুখমাত্র বলেন, কাশ্মীরীদের চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা এবং আটকের খবরে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। তবে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা যত শীঘ্র সম্ভব তুলে নেয়া হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা। কোথাও কোথাও টেলিফোন সংযোগ চালু করা হলেও বেশিরভাগ এলাকায় অঘোষিত কার্ফ্যু চলছে। রবীশ কুমার বলেন, কোন প্রাণহানি যাতে না ঘটে, সেটাই আমাদের অগ্রাধিকার। এই ধারণা থেকেই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পাকিস্তানী কর্মকর্তারা বলেছেন, কার্যত পুরো কাশ্মীরের লোকজনকেই বন্দী করে রাখা হয়েছে।
×