সুমন মুহাম্মদ। ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলার মলংচড়ার মহাদেবপুর গ্রামের কৃষক মোঃ হোসেনের ৭ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ সন্তান। সুমন লেখা পড়ায় ভাল হওয়াতে আগ্রাহ বেশি হওয়ায় অভাব অর অনটনের মধ্যেও তার পিতা সুমনকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। ছেলেকে লেখাপড়া শেখাবে। মানুষের মতো মানুষ করবে। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবে। তার পর বড় চাকরি করে সচ্ছলতার মুখ দেখবেন। আর তাই অনেক কষ্ট করে ছেলেকে এমবিএ পাস পর্যন্ত লেখাপড়া করিয়ে শিক্ষিত করেন। কিন্তু স্বপ্নের দ্বারপ্রান্তে এসে যেন স্বপ্ন দূর আশায় পরিণত হয়ে যাচ্ছে। ৫ বছর আগে লেখাপড়া শেষ করলেও দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও সোনার হরিণ সরকারী চাকরি ভাগ্যে জুটছে না। তাই কোন উপায় না দেখে হতাশ হয়ে পড়েন। তার মতো ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার হাজিরহাটের ফৈজুদ্দিন গগ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের বেকার যুবক এম শরীফ আহমেদেরও একই অবস্থা। মনপুরা সরকারী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০১৪ সালে এইচএসসি পাস করেন। তার পর টিউশনি করে ও কোচিং সেন্টারে কাজ করে ভোলা সরকারী কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে পড়ালেখা শেষ করেন। ওই দুই যুবকই শিক্ষা জীবনে রোভার স্কাউটস সদস্য ছিলেন। সেই সবাদে তাদের পরিচয়। অবশেষে সময়গুলো ধরে রাখতে নিজেদের ভাগ্য বদলে বেকার দুই যুবক নিজেরাই আবার উদ্যমী হয়ে নানা সঙ্কট আর হতাশার মাঝেও স্বপ্ন দেখে। সুমন মুহাম্মদ ও এম শরীফ আহমেদ তারা দু’জনেই আত্মীয়ের কাছ থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে একটি আধুনিক ভ্রাম্যমাণ ফুডকোর্টে ‘পেটুক ফুড’ শপ নির্মাণ করেন। সেখানে পাস্তা, পায়েস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই, পুডিং, ফুচকা, পিঠা, কাটলেট, ওনথোনসহ রকমারি খাবার শৈল্পিক মাটির পাত্রে পরিবেশন করা হয়। ঘরোয়া পরিবেশে তৈরি করে স্বল্পমূল্যে এই খাবার বিক্রি করা হয়। এমনকি হোম ডেলিভারির ব্যবস্থাও রয়েছে। উচ্চ শিক্ষত বেকার ২ যুবক নিজেরাই এসব খাবার রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে স্বাছন্দ্যে বিক্রি করছে। প্রতিদিন এই ভ্রাম্যমাণ ফুডকোর্টে শহরে সরকারী স্কুল মাঠ পার্ক, কে জাহান মার্কেটের সামনের সড়ক, গার্লস স্কুল মোড় এলাকায় চলে তাদের বিক্রি। এদিকে ভোলায় এ ধরনের ফুডকোর্ট চালু হওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে।
-হাসিব রহমান, ভোলা থেকে