ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সব উদ্যোগ ব্যর্থ

নবগঙ্গা, চিত্রা, কাজলা, হরি নদীতে কচুরিপানা॥ দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৮:৫৯, ২৬ জুন ২০১৯

নবগঙ্গা, চিত্রা, কাজলা, হরি নদীতে কচুরিপানা॥ দুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল, ২৫ জুন ॥ নবগঙ্গা, চিত্রা, কাজলা ও হরি নদীর ৬০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কচুরিপানায় ভরে গেছে। এসব কচুরিপানা বিভিন্ন খালেও প্রবেশ করছে। বর্তমানে এ সমস্যা অনেকটা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। গত ৬ মাস ধরে কচুরিপানা একটানা আটকে থাকায় এসব নদীর ২৫ খেয়া ঘাটের দু’পারের হাজার হাজার মানুষ সময় মতো নদী পার হতে পারছেন না। আবার পারাপারে খরচও বেড়ে গেছে। এ কচুরিপানার কারণে নড়াইলে পণ্যবাহী কোন ট্রলার, কার্গো সময় মতো যাতায়াত করতে পারছে না। মাছ ধরতে না পারায় জেলেরাও হয়ে পড়েছে বেকার। কচুরিপানা অপসারণে জেলা প্রশাসন, নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্প্রতি উদ্যোগ নিলেও তা কাজে আসেনি। সরেজমিনে জানা যায়, এ কচুরিপানার উৎপত্তি মাগুরা-নড়াইলের নবগঙ্গা নদী থেকে। ষাটের দশকের মাঝামাঝি মাগুরা শহরের ওপর নবগঙ্গা নদীতে বাঁধ দিয়ে স্লুইসগেট করা হলে নদীর স্রোতধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে মাগুরার সাতদোয়া, বিনোদপুর, রাজাপুর, নহাটা, গঙ্গারামপুর, নড়াইলের মিঠাপুর ও নলদী এলাকায় জোয়ার-ভাটা না থাকায় এ অঞ্চলে জন্ম নেয়া কচুরিপানা ঠিকমতো সরতে পারে না। আবার বর্ষাকালে মাগুরার নাড়িখালী, নাদপুর খাল এবং এর পার্শ্ববর্তী নড়াইলের ছাতরা, ধোপাদা ও বাড়িভাঙ্গা খালের কচুরিপানা আশ্বিন-কার্তিক মাসে খাল থেকে এ অঞ্চলের নবগঙ্গা নদীতে নেমে আসে। কিন্তু প্রয়োজনীয় ভাটায় এসব কচুরিপানা লোনা পানিতে নামতে না পেরে নবগঙ্গা ও চিত্রার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বংশ বৃদ্ধি করছে এবং মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। এর ফলে চিত্রা নদীর পেড়লি, জামরিলডাঙ্গা, খড়রিয়া, রঘুনাথপুর, সুমেরুখোলা, বাগডাঙ্গা, গোবরা, মিরাপাড়া, ভদ্রবিলা, পংকবিলা, শিখেলি, রতডাঙ্গা, ধোন্দা, পাঝারখালি, নবগঙ্গা নদীর নলদী, ভুমুরদিয়া, কলাগাছি, চালিতাতলা, চন্ডিবরপুর, সিঙ্গে, মনোখালী, গঙ্গারামপুর, দরি-মিঠাপুর, হরি নদীর নিরালি ও কাজলা নদীর মুলিয়া খেয়া ঘাটে জরুরী প্রয়োজনে পারাপার, বিভিন্ন পেশা ও চাকরিজীবী শ্রেণী ও শিক্ষার্থীদের গন্তব্যে পৌঁছতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ কচুরিপানা অপসারণের জন্য গত ২৪ এপ্রিল জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা শহরের বাঁধাঘাট এলাকায় নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন, জেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে এসব নদীর প্রায় ৬০ কিলোমিটার মিটার এলাকার কচুরিপানা অপসারণ কাজের উদ্বোধন করলেও কয়েকদিন পর ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে তা ভেস্তে যায়।
×