ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছুটির দিনের ক্যাম্পাস...

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ২ জুন ২০১৯

 ছুটির দিনের  ক্যাম্পাস...

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শিক্ষা জীবনের সত্যিকার আনন্দের জায়গা। বলা যায় বহু কষ্টের পর অর্জিত সাফল্যের স্থান এটি। কঠিন প্রতিযোগিতায় নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করে এখানে আসা। কলেজের বাধা ধরা নিয়মের গন্ডি পেরিয়ে পথচলার শুরু বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের। বাইরে থেকে কিছু রঙিন মনে হলেও তেমন নয় এ জীবন। বাস্তবে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। অনেকে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন পড়াশোনা নেই, চাপ নেই, নিশ্চিন্ত জীবন। ব্যাপারটা কিন্তু তেমন নয়। সারাদিন ক্লাস, রাতভর প্রাকটিক্যাল খাতা লেখা, সকালে উঠে আবার ক্লাসে দৌড়। পরীক্ষা তো আছেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা থেকে সকাল যেন ব্যস্ততায় কাটে ক্যাম্পাস লাইফ। সপ্তাহ কবে পার হয়, তা কেবল ছুটির দিনই বোঝা যায়। ক্লাস পরীক্ষার চাপে যখন সবাই অতিষ্ঠ তখন সাপ্তাহিক ছুটি, যেন কঠোর রোদে প্রশান্তির এক পসলা বৃষ্টি। সপ্তাহজুড়ে হাড়ভাঙা খাটুনির পর ছুটির অবসরে অনেকেই বালিশের কোলে আশ্রয় নেন। অনেকে আবার নিয়মের বেড়াজাল ভেঙে খেয়ালখুশি মতো ঘুরে বেড়ান। অনেকেই আবার ছুটির দিনে নিজের পছন্দ করা খাবার রান্না করেন। আবার কেউ কেউ সবকিছু ছাপিয়ে বেরিয়ে পড়ে অজানাকে জানতে, অচেনা কে চিনতে। কেউবা বেরিয়ে পড়ে ভ্রমণে। তবে দূরবর্তী স্থান দেখার জন্য বড় ছুটি অবধি অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়। হয় শীতকালীন অবকাশ না হয় গ্রীষ্মকালীন। আর কাছে বাসা হলে তো প্রতি শুক্রবারে বাসায় যাওয়ার জন্য অস্থির থাকে মন। ছুটির দিনে খেলার উপযুক্ত সময় খুব সকাল এবং বিকালে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রোগ্রামও অনুষ্ঠিত হয় ছুটির দিনে। ট্রুরের সময়ে ছুটির দিনকেই উপযুক্ত ধরা হয়। যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে আসে পড়াশোনার জন্য, তাদের কাছে পরিবার ও নিজের দেশের স্মৃতিগুলো বেশি মনে পড়ে ছুটির দিনে। ছুটির দিনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একেক জনের কাছে একেকভাবে কাটে প্রতিটি দিন। কেউ শুয়ে বসে কম পড়ে পার করে আর কেউ পড়ার মহাসমুদ্রে নিমগ্ন থাকে। আসলে এটা নিজের ব্যাপার কিভাবে নিজেকে নিয়ে আনন্দে সময় খাটানো যায় সেটাই সবাই চিন্তা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র সবুজ রায় বলেন, ছুটির দিনে পড়াশোনার বাইরে অনেক কিছু ভাবা যায়। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়ার অফুরন্ত সুযোগ এই ছুটির দিনগুলো। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের ছাত্র মোঃ সানজিদ হাসান বলেন, রংপুর থেকে এখানে এসেছি পড়তে, গবেষণা আর ক্লাস নিয়ে খুবই ব্যস্ত থাকতে হয়, ছুটির দিনে একটু আরাম পাই, বাসার কথা খুব মনে পড়ে, দূরে তাই যেতে পারি না। ভিডিও কলে কথা বলি। সুযোগ পেলে ফয়েজ লেক, পতেঙ্গা সী বীচে গিয়ে মন ভাল করি। ছুটির দিন একটু অন্যভাবে কাটায় বলে জানায় ইডেন মহিলা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্রী সুরাইয়া শারমিন। তিনি বলেন, ছুটির দিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়াশোনা করি, পোশাক পরিষ্কার করি। এছাড়াও ভাল রান্না করে খাওয়ার জন্য বাজার ও রান্না করি। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিভিএম শেষ বর্ষের ছাত্রী লাবণী আফরোজ বলেন, সুযোগ পেলে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কাটাই। আর বাসায় গেলে টিভি দেখে ছুটির দিনটা উপভোগ করি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লাকি, পড়াশোনা বাংলায় মাস্টার্স। বলছিল ছুটির দিনগুলো নিয়ে, আমি ঘুরতে খুব ভালবাসি তাই একটু ছুটি পেলে আমার দুই বান্ধবী তামান্না আর মিতুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি ঘুরতে। এইতো কয়দিন আগে একটু অবসরে ঘুরে এলাম দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাস লাইফের প্রতিটি দিনের আনন্দ আরও আনন্দঘন করে এই সব ছুটির দিন। মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল মোঃ তারিকুল ইসলাম
×