ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা মেডিক্যালে লাশ নিয়ে তুলকালাম

প্রকাশিত: ০৯:২৪, ২০ মে ২০১৯

 ঢাকা মেডিক্যালে  লাশ নিয়ে  তুলকালাম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এক ব্যক্তির মরদেহ নিয়ে তুলকালাম কা- ঘটেছে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে লাশ আটক রেখে স্বজনদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের ধাক্কাধাক্কি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সোয়া ৩টা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এ হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মিরপুরের পল্লবী জুটপট্টি এলাকায় রবিবার সকালে সড়ক দুর্ঘটনায় আমিন নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিয়ম অনুযায়ী তাকে মৃত ঘোষণার পর ঢামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মর্গে রাখা হয়। খবর পেয়ে আমিনের স্বজনরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। এসেই মর্গের ট্রলির ওপর মরদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার করে ওঠেন তারা। বলতে থাকেন, আমিন বেঁচে আছে, সে শ্বাস নিচ্ছে। এরপরই শুরু হয় মরদেহ নিয়ে টানাহেঁচড়া। স্বজনরা ছুটে যান মেডিক্যাল অফিসারের কাছে। তাদের অভিযোগ, আমিন বেঁচে থাকতে তাকে কেন মর্গে রেখেছেন? মেডিক্যাল অফিসার তাদের বক্তব্য শুনে ওয়ার্ড বয়দের নির্দেশ দেন, মর্গে থাকা আমিনের মরদেহ নিয়ে আসতে। তিনি আবার পরীক্ষা করে দেখতে চান। মর্গ থেকে ওয়ার্ড বয়রা মরদেহ বের করার সঙ্গে সঙ্গে আমিনের স্বজনরা তাকে নিয়ে দ্রুত জরুরী বিভাগ থেকে বের হয়ে রাস্তায় চলে যান। তারা বলতে থাকেন, আমিন মরেনি, এখনও শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে। তাই তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাবো। এ নিয়ে আবারও শুরু হয়ে যায় আনসার সদস্যদের সঙ্গে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কি। খবর পেয়ে পুলিশও সেখানে ছুটে যান। এ সময় জরুরী বিভাগে গেট বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে জরুরী বিভাগে চিকিৎসা সেবা আধা ঘণ্টা বন্ধ ছিল। জরুরী বিভাগ সূত্র জানায়, স্বজনদের সঙ্গে আনসারদের ধাক্কাধাক্কি, হট্টগোল ও বাঁশির আওয়াজে হাসপাতালে আসা রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এতে সেখানে আগত অনেক রোগী চিকিৎসা না পেয়ে অন্য হাসপাতালে চলে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ৫০-৬০ জন আনসার সদস্য যদি একসঙ্গে বাঁশি বাজায়, সেখানে কী অবস্থা হতে পারে ভাবুন। এটা তো হাসপাতাল। নাকি খেলার মাঠ। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া ও হাসপাতালের কর্মকর্তারা স্বজনদের বুঝানো হয়, আমিন আর বেঁচে নেই। নিয়ম মেনে মরদেহ মর্গে রাখা হয়। পরে মৃতের স্বজনরা তা মেনে নেয়। ঢামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ সাদ জানান, আবেগের কারণে স্বজনরা অনেক দাবি করতে পারেন। সে দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে বলা হয়েছে, আমিন অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। এ কারণে তার মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
×