ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঝলক

প্রকাশিত: ১১:২০, ১২ এপ্রিল ২০১৯

ঝলক

৫ হাজার নবজাতক অদল-বদল নার্সের নার্সিং মহৎ পেশা। হাসপাতালে রোগীর সেবায় নিয়োজিত থাকেন নার্স। তারা রোগীকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করেন। কিন্তু এমনও কেউ কেউ আছেন যারা পেশাগত জীবনে সৎ থাকেন না। আর তখনই এই মহৎ পেশার প্রতি মানুষের মনে ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়। কিছু নার্সের ভয়ঙ্কর কর্মকা-ের কথা শোনা যায়। তারা সংবাদের শিরোনামও হন। তেমনি একজন ভয়ঙ্কর নার্স এলিজাবেথ মুয়াওয়া। তিনি পেশাজীবন কাটিয়েছেন আফ্রিকার জাম্বিয়ার লুসাকায় ইউনিভার্সিটি টিচিং হসপিটালে। সেখানে ১২ বছরের কর্মজীবনে স্রেফ মজা করে প্রায় ৫ হাজার নবজাতককে তিনি অদল-বদল করেছেন। হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই শিশুদের বদলে দিতেন তিনি। ফলে নবজাতকেরা হারিয়েছে তাদের প্রকৃত বাবা-মাকে। তিনি এতদিন পর নিজেই জানিয়েছেন নিছক মজা করার জন্যই তার এমন কাজ করা। এলিজাবেথ এখন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছেন। তিনি এখন অতীতের এই গর্হিত কাজের জন্য ভীষণ অনুতপ্ত। হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি তাই নিজের পাপের কথা স্বীকার করেছেন। সৃষ্টিকর্তার কাছে করছেন ক্ষমা প্রার্থনা। এলিজাবেথ বলেন, ‘১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ইউটিএইচে জন্ম নেয়া কোন শিশুই তাদের প্রকৃত বাবা-মায়ের কোলে যায়নি। মজা করতে গিয়ে নবজাতকদের বদলে দেয়া অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল আমার। এতদিন এ ঘটনা আমি লুকিয়ে রেখেছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘আমি এখন ক্যান্সারে আক্রান্ত। শীঘ্রই আমি মারা যাব। সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চেয়ে আমার এ পাপের কথা স্বীকার করলাম। আমি ক্ষমা চাচ্ছি সেইসব পরিবারের কাছে, যাদের প্রতি আমি এ অন্যায় করেছি।’ -জাম্বিয়ান অবজারভার বাবার দেহাবশেষের সঙ্গে ছবি তুলতে ৩০ বছর আগে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বাবা। এতদিন পর ছেলের শখ হলো বাবার দেহাবশেষের সঙ্গে ছবি তুলবেন। যেই ভাবনা সেই কাজ। ইট-সিমেন্টের তৈরি সমাধিস্থল ভেঙ্গে ফেলে বের করে আনলেন বাবার দেহাবশেষ। এখানেই শেষ নয়। নগ্ন হয়ে দেহাবশেষের সঙ্গে ছবি ওঠালেন। পরে ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েও ছিলেন। এমন ঘটনা ঘটেছে চীনে। ওই ব্যক্তির নাম সুইয়ান ঝুজু (৩৩)। ডাকনাম সি লুলু। তিনি পেশায় একজন চিত্রকর। তিনি সমাধি ক্ষেত্রের তত্ত্বাবধায়কের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে বাবার সমাধি ভাঙ্গার কাজ শুরু করেন। তার এ কাজে কয়েকজন সহযোগিতা করেন। পরে সমাধিস্থল থেকে একে একে বের করে আনা হয় দেহাবশেষগুলো। এরপর সেগুলো সাজিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কঙ্কালে রূপ দেয়া হয়। তারপরই বাবার কঙ্কালের পাশে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে শুয়ে পড়েন। তোলা হয় কয়েকটি ছবি। তার ছবি তোলাতে সহযোগিতা করেন তার স্ত্রী লিন শান। সি লুলুর অনেক আগে থেকেই একটি স্বপ্ন ছিল- তার বাবার হাড়গুলো পাশে রেখে ছবি উঠাবেন। ছবি তোলার উপলক্ষ হিসেবে চীনের ঐতিহাসিক কুয়িং মিং ফেস্টিভ্যালকে (টম্ব সুইপিং ডে) বেছে নেন। টম্ব সুইপিং ডে’তে চীনারা তাদের পূর্বপুরুষদের বিশেষভাবে স্মরণ করে থাকেন। বাবার সঙ্গে বিভিন্ন পোজে ছবিগুলো তোলার পর সম্প্রতি চিত্রকর্ম বিষয়ক ওয়েবসাইট আর্ট্যান্ড ও চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইবোতে ছড়িয়ে দেন সি লুলু। পোস্ট করার পর ছবিগুলো এ পর্যন্ত ২৮০ লাখ বার দেখা হয়েছে। তবে সমাধি থেকে বাবার দেহাবশেষ তুলে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ায় তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ সমালোচনাকারীই বলছেন, তিনি যা করেছেন তা রীতিমতো মৃতদের প্রতি ‘অসম্মান’ প্রদর্শনের বহির্প্রকাশ ও অত্যন্ত ‘লজ্জাজনক’। নিজে রাতারাতি খ্যাতি লাভ করতেই তিনি এমন পন্থা অবলম্বন করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘আপনি যদি খ্যাতি লাভ না করতে এসব করে থাকেন তাহলে ছবিগুলো অনলাইনে দিলেন কেন? ঘরে ঝুঁলিয়ে রাখলেই তো পারতেন।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘আপনি বাবার দেহাবশেষ সমাধি থেকে তুলে পাশে শুয়ে ছবি তুলেছেন- এ পর্যন্ত সবই ঠিক আছে। আপনি তা করতেই পারেন। তবে আপনি সীমা অতিক্রম করেছেন তখনই যখন ওই ছবি ক্যামেরার সাহায্যে তুলেছেন।’ তবে এ ঘটনায় বেশিরভাগ ব্যক্তি ক্ষুব্ধ হলেও ওই ব্যক্তিকে বাহবা দিয়েছেন কেউ কেউ। তারা এ ঘটনাকে অত্যন্ত ‘হৃদয়স্পর্শী’ বলে অভিহিত করেছেন। এ বিষয়ে চিত্রকর সি লুলুর ভাষ্য, এটা ছিল অসাধারণ। তিনি এটা করার মাধ্যমে তার বাবাকে অনেক কাছ থেকে তার নিজের মতো করে অনুভব করেছেন। কারণ, এর আগে তিনি তার বাবাকে এত কাছ থেকে অনুভব করতে পারেননি। নগ্ন হয়ে ছবি তোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি এর মাধ্যমে এটা বোঝাতে চেয়েছি যে, আমরা নগ্নভাবেই পৃথিবীতে এসেছি এবং এভাবেই আমাদের পৃথিবী ত্যাগ করতে হবে।’ -ডেইলি মেইল
×