ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিউটি বোর্ডিংয়ে বিপ্লবী সতীর্থদের মিলনমেলা

প্রকাশিত: ০৭:৪৯, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

 বিউটি বোর্ডিংয়ে  বিপ্লবী সতীর্থদের  মিলনমেলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলদেশের বিপ্লব, আন্দোলন, সাহিত্যের সঙ্গে মিশে আছে বিউটি বোর্ডিং। বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বাপ্নিকদের সঙ্গে মিশে আছে পুরান ঢাকার এই বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্থানটি। বিউটি বোর্ডিংয়ের আড্ডায় রাজনীতি, সংস্কৃতিতে অবদান রাখা বিপ্লবীরা এদেশ গঠনে ভূমিকা রেখেছেন। ষাটের দশকের সেই সকল বিপ্লবী ও স্বাপ্নিকদের মিলনমেলা বসেছিল সেখানে। আরও একবার তারা মুখর হয়ে উঠেছিলেন প্রাণবন্ত আড্ডায় অর স্মৃতি রোমন্থনে। পাশাপাশি তারা দাবি জানালেন, বিউটি বোর্ডিংয়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণের। শুক্রবার বিউটি বোর্ডিং প্রাঙ্গণে ‘ঢাকা শহরের ষাট দশকের ও একাত্তরের বিপ্লবী সতীর্থদের মিলনমেলা’ ব্যানারে এ আয়োজনটি করেন পুলিশের সাবেক ডিআইজি ফিরোজ কবির মুকুল। এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সংসদ সদস্য ও রাজনীতিক কাজী ফিরোজ রশীদ, সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক), ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক আবেদ খানসহ সেই সময়ের নানা অঙ্গনের সতীর্থরা। সেসব অগ্নিঝরা বিপ্লবী দিনগুলোর স্মৃতিচারণের পাশাপাশি তারা দাবি জানালেন, পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এই বিউটি বোর্ডিং সংরক্ষণের। তারা আরও বলেন, এই বিউটি বোর্ডিং ছিল তাদের আন্দোলন, সংগ্রামের আঁতুড়ঘর। এখানে আড্ডায়, আলোচনায় তারা দেশ বিনির্মাণ, সংগ্রাম পরিচালনার পরিকল্পনা করতেন। গান, কবিতার ভাষায় ছড়িয়ে দিতেন বিপ্লবের স্ফুলিঙ্গ। বহুদিন পর এমন আড্ডায় অনেকে গান গেয়েও মাতিয়ে রাখেন। প্রথমে বিউটি বোর্ডিং জমিদার বাড়ি হিসেবে নির্মাণ হলেও মালিকানা পরিবর্তনে পরবর্তীতে পরিণত হয়েছে ছাপাখানায়, বর্তমানে এটি একটি আবাসিক হোটেল। যেখানে শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক রাজনীতিকের প্রাাণের জায়গা। বাঙালীর শিল্প-সংস্কৃতির ইতিহাস জড়িত এবং বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির গুণী মানুষদের আড্ডার একটি কেন্দ্র এটি। বিউটি বোর্ডিংয়ের জন্মলগ্ন থেকেই এখানে আড্ডা দিতেন প্রথিতযশা কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সাংবাদিক, চিত্রপরিচালক, নৃত্যশিল্পী, গায়ক, অভিনেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। এখানে যারা আড্ডার আসরে আসতেন এদের মধ্যে কবি শামসুর রাহমান, রণেশ দাসগুপ্ত, ফজলে লোহানী, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, শিল্পী দেবদাস চক্রবর্তী, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, ব্রজেন দাস, হামিদুর রহমান, আহমেদ ছফা, সত্য সাহা, এনায়েত উল্লাহ খান, আল মাহমুদ, আল মুজাহিদী, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, ফতেহ লোহানী, জহির রায়হান, খান আতা, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, সৈয়দ শামসুল হক, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, নির্মল সেন, ফয়েজ আহমদ, গোলাম মুস্তাফাসহ নানা অঙ্গনের বিখ্যাতজনরা। পুরো ষাটের দশকে জায়গাটিকে ঘিরে এক সংগ্রামী সমাজ তৈরি হয়।
×