ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নৌকার জোয়ারে ভেসে গেল স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ;###;মানুষ একবাক্যে বিএনপি জামায়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছে ;###;বিরাট বিজয়ের পথে মহাজোট

আবারও শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৯:২৪, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮

আবারও শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভূমিধস বিজয় পেয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট। রবিবার দিনভর উৎসবমুখর নির্বাচনে নির্বাচনে নৌকার পক্ষে এক গণজোয়ার সৃষ্টি করেছে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী এ রাজনৈতিক দলটি। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের মধ্যদিয়ে নতুন দু’টি রেকর্ড গড়ে টানা তৃতীয় বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এরপর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালের ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এই হিসেবে ২০০৮ সালের পর থেকে টানা তৃতীয় বার এবং ১৯৭৩ থেকে মোট পাঁচবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে দু’টি রেকর্ড সৃষ্টি করে। রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে গণনা শুরু হয়। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বেসরকারী ফলে ২৯৯ আসনের মধ্যে সবগুলো আসনের ফল পাওয়া গেছে। এরমধ্যে নৌকা প্রতীক নিয়ে মহাজোটের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন ২৮৯টি আসনে। ঐক্যজোট পেয়েছে ৭টি এবং স্বতন্ত্র পেয়েছে ৩টি আসন। মহাজোটের পাওয়া ২৮৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ এককভাবে পেয়েছে ২৫৫ আসন। অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২৩টি আসন। এছাড়া এ জোটের অন্যান্য শরীকদের মধ্যে আসন পেয়েছে ওয়ার্কাস পাটি ৩টি, ত্বরিকত ফেডারেশন ২টি, বিকল্পধারা ২টি, জেপি ১টি, জাসদ (ইনু) ২টি, জাসদ (আম্বিয়া) ১টি। ঐক্যফ্রন্টের ৭টি আসরে মধ্যে বিএনপি ৫টি এবং গণফোপরাম একটি ও ঐক্যফ্রন্ট ১টি আসন পেয়েছে। কিছু বিচ্ছিন্ন সহিংসতার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে। সহিংসতার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ২০ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। এর বাইরে নিহতের তালিকায় বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির কর্মী-সমর্থকও রয়েছেন বলে জানা গেছে। কমিশন জানিয়েছে, সারাদেশে মাত্র ২২ কেন্দ্রে নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন আসনে বিএনপি-জামায়াতের ৪২ জনের বেশি প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচন চলার সময়ে বর্জনের কোন ঘোষণা দেয়া হয়নি। এদিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে বাকি অধিকাংশ এলাকায় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। ভোটার নির্বিঘেœ ভোট দিতে পেরেছেন। প্রতিটি এলাকায় ভোটারের উপস্থিতি ছিল উৎসবমুখর। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বলেছেন, বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে ভোট শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন সহিংসতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪০ হাজার ১৮৩ কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ২২টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। সারাদেশে ভোট কেন্দ্রে হিসাবে এই সংখ্যা ০.০৫ ভাগ বলে জানিয়েছে ইসি সচিব। নির্বাচন শেষে সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রবিবার সারাদেশে ভোট উৎসব হয়েছে। ২৯৯ আসনে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়েছে। কিছু এলাকায় সহিংসতা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ভোটাররা। তিনি বলেন, প্রত্যেকটি সহিংস ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এদিকে বিদেশী পর্যবেক্ষকরাও পর্যবেক্ষণ শেষে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন মানুষ। জনগণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন। চারদিকে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করে। ভোটের মাঠে সব কিছু ঠিকঠাক ছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ ও ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু হয় কিনা, তা দেখার জন্য রবিবার বিদেশী পর্যবেক্ষকরা বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। ভারতের পর্যবেক্ষক গৌতম ঘোষ বলেন, স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ ভোট দিচ্ছে। ভোটের মাঠে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। কানাডা থেকে আগত পর্যবেক্ষক তানিয়া ফস্টার বলেন, আমরা কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। দেখেছি ভোটাররা ভোট দেয়ার জন্য কেন্দ্রে যেতে পারছে। রবিবার সকাল ৮টা থেকে সারাদেশে ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়। বিরতি ছাড়া একটানা ভোটগ্রহণ চলে। বিকেল চারটায় ভোটগ্রহণ শেষে গণনা ও ফল প্রকাশ শুরু হয়। নির্বাচনে ইসির নিবন্ধিত ৩৯ রাজনৈতিক প্রার্থীসহ ১ হাজার ৮৬১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী রয়েছেন ১ হাজার ৭৩৩ জন। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ১২৮ জন। ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ইসির পক্ষ থেকে সারাদেশে ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। এদিকে সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে দেখা গেছে। প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ঢাকা সিটি কলেজে কেন্দ্রে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোট প্রদান শেষে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, নৌকার জয় হবেই। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির জয় হবেই। বিশ্বাস করি উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত রাখতে বাংলদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দেবে। বিজয়ের বিষয়ে আমি অবশ্যই আত্মবিশ্বাসী। জনগণের প্রতি বিশ্বাস আছে উল্লেখ করেন। সকাল ৮টায় ভোটের শুরুতেই ঢাকার সিটি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোটটি দেন শেখ হাসিনা। এ কেন্দ্রে তিনিই ছিলেন প্রথম ভোটার। এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন সকালে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দেশের কোথাও একজনও বলেনি যে নির্বাচন সুন্দর হয়েছে। সারা দেশে নির্বাচনের ব্যাপক কারচুপিতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। নির্বাচনে বিএনপি শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে সারাদেশে কেন্দ্র দখল, এজেন্ট বের করে দেয়া, জালভোট দেয়া হয়েছে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জালভোট, কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন। এছাড়া ২১ আসনে জামায়াতের প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচন বর্জনের কোন ঘোষণা দেয়া হয়নি। এদিকে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। বেলা পৌনে ১১টার পর রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বরে সেক্টরের আইইএস স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রে নিজের ভোট প্রদান করেন তিনি। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া এখন পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি ভাল আছে। বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনেই জাল ভোট দেয়া এবং কেন্দ্রে কেন্দ্রে ধানের শীষের প্রার্থীদের এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রিটার্নিং অফিসার ফের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঢাকায় বসে তো নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তাদের নির্দেশ দেয়া আছে। যদি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় ভোট বন্ধ থাকবে। তারা চেষ্টা করবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। পরিস্থিতি যদি তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারে তাহলে ভোট বন্ধ করে দেয়ার নিয়ম আছে। এটাতো যারা দেশব্যাপী নির্বাচনের দায়িত্বে আছে তারা দায়িত্ব পালন করে যাবে। নিজের কেন্দ্রে সব প্রার্থীর এজেন্ট দেখেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খেয়াল করিনি। জিজ্ঞাসাও করিনি। ধানের শীষের এজেন্ট দেখা না যাওয়ার বিষয়ে বলেন এটাতো এজেন্ট বলতে পারে। এজেন্টরা না এলে এজেন্ট থাকবে না। তাদের আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, সেটাতো আমি জানি না। কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ করেনি উল্লেখ করেন। তবে সরেজমিনে নির্বাচনে মাঠ পরিদর্শনে দেখা গেছে অনেক কেন্দ্রে বিএনপির কোন এজেন্ট ছিল না। প্রিসাইডিং অফিসার এ সময় বলেন, বিএনপি কোন পোলিং এজেন্ট দেয়নি। পোলিং এজেন্ট দায়িত্ব পালন করতে পারছে না সেই অভিযোগ তারা পায়নি। ঢাকা ১০ আসনে বিএনপি প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে গিয়ে অভিযোগ করেন তার এলাকায় ১১৫ কেন্দ্রের মধ্যে কোন কেন্দ্রেই তার এজেন্ট নেই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২০ আসনে তার এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয় হয়েছে। বাকি কেন্দ্রের বিষয়ে তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখেছেন এজেন্ট নেই। নির্বাচন শেষে আওয়ামী লীগ পক্ষ থেকে এক প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু,শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। তবে কিছু জায়গায় সহিংসতা হয়েছে। সেটার শিকার হয়েছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন শেষে এক প্রতিক্রিয়ায় দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পদক আব্দুর রহমান বলেন, বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে ১২ জেলায় ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত আমাদের টার্গেট করে হামলা করেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপের কারণে অতীতের চেয়ে সহিংসতা কম হয়েছে। ভোটারদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে বলেন, নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ ছিল আশাব্যঞ্জক। সর্বস্তরের জনগণ ভোট উৎসবে অংশগ্রহণ করায় এ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী এবং দেশের জনগণকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি উল্লেখ করেন। এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে এক প্রতিক্রিয়ায় দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সাংবাদিকদের বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের নামে তামাশা হয়েছে। প্রমাণিত হলো যে দেশে দলীয় সরকার রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর নয়। নির্বাচনে ভোট কারচুপি, কেন্দ্র দখল ও ধানের শীষ প্রতীকের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়ায় অভিযোগ নিয়ে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের নামে এই তামাশার কোন প্রয়োজন ছিল না। রাষ্ট্রপতি একটা গেজেট দিলেই হতো যে নৌকা ২৯৯ আসন বা দুইশ সাড়ে নিরানব্বই আসন পেয়ে গেছে। এমনটা করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকত না। এদিকে ভোটে কারচুপি, অনিয়ম, জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দেশের ৩০টি আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করেছেন। ঢাকা-১ আসন, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, হবিগঞ্জ, নাটোর, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, নীলফামারী, শেরপুর, জামালপুর, যশোর, ময়মনসিংহ, রাজবাড়ী, গাজীপুর, খুলনা ও কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, ঝিনাইদহ ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন আসনের প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করেছেন। তবে বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে বেলা চারটা পর্যন্ত নির্বাচনে বর্জনের ডাক দেয়নি। তবে তাদের মিত্র জামায়াত ইসলামী কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। দলটির ২১ জন নেতা ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। রবিবার ভোটের মাঝপথে দুপুরে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও বয়কট করার ঘোষণা দিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটার ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন ভোটার। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি, ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন। নারী ভোটার ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন। এদিকে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ করতে সারাদেশে কয়েক স্তরের নিরাপত্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়। সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোবাইল ও স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। এর মধ্যে ভোট কেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত ছিল ৬ লাখ ৮ হাজার সদস্য। নির্বাচনের মাঠে মোবাইল ও স্টাকিং ফোর্সের সংখ্যা (র্যাবসহ) ছিল প্রায় ২ হাজার প্লাটুন। এদিক সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের জন্য সারাদেশে ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হয় ৪০ হাজার ১৮৩টি। এবারই প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। দৈবচয়নের ভিত্তিতে এবার ছয়টি আসনের সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট নেয়া হয়। ৮১টি প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯শ’ জন পর্যকেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। এর বাইরের ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ থেকে আমন্ত্রিত ও অন্যান্য বিদেশী পর্যবেক্ষক ছিলেন ৩৮ জন। কূটনৈতিক ও বিদেশী মিশনের কর্মকর্তা ছিলেন ৬৪ জন। বাংলাদেশের দূতাবাস/হাইকমিশন বা বিদেশী সংস্থার কর্মরত বাংলাদেশী পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ৬১ জন।
×