শহরের ফুটপাথের পাশে ছোট্ট একটা ভ্রাম্যমাণ দোকান। শীতের সন্ধ্যায় সেখানে পিঠা খেতে ভিড় জমিয়েছেন কয়েক তরুণ। দোকানের পাশে জ্বলছে একটি চুলা। চুলায় ভাপা পিঠা তৈরির পাতিল বসানো। পিঠা তৈরির ছাঁচে চালের গুঁড়া নিয়ে তার ওপর গুড়, নরিকেল ছিটিয়ে দিয়ে ভাপে দিচ্ছিলেন দোকানি। তৈরি হতেই গরম গরম ধোঁয়া ওঠা পিঠা উঠে যাচ্ছিল ক্রেতাদের হাতে হাতে।
যশোর শহরের দড়াটানা ফুটপাথে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। শুধু দড়াটানা নয়; যশোর শহরসহ আটটি উপজেলার পাড়া-মহল্লায়, বিভিন্ন রাস্তার পাশে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। শীতের শুরু থেকে এসব জায়গায় পিঠা বিক্রির ধুম চলছে। বেশিরভাগ দোকানেই পিঠা তৈরি ও বিক্রি করছেন নিম্নবিত্ত পরিবারের নারীরা। বাড়তি কিছু উপার্জন হওয়ায় তাদের আনন্দের শেষ নেই।
সরেজমিন যশোর শহরে ঘুরে দেখা গেছে, শহরের দাড়াটানা মোড়, রেলগেট, বড় বাজার, ধর্মতলা, পালবাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে সকাল-সন্ধ্যা পিঠা বিক্রি হচ্ছে। একদিকে ক্রেতাদের ভাপা পিঠার স্বাদ; অন্যদিকে চুলার আগুন উত্তাপ যেন চাঙ্গা করে দেয় দেহমন। অনেকে পিঠার দোকানে চুলার পাশে বসেই গরম পিঠা খাচ্ছেন। অনেকে পরিবারের চাহিদা মেটাতে পিঠা কিনে বাসায় নিয়ে যাচ্ছেন।
দড়াটানা মোড়ের ভ্রাম্যমাণ ভাপা পিঠা ব্যবসায়ী নাসিমা আক্তার ঝুমুর বলেন, দুই বছর যাবত তিনি ভাপা পিঠা ব্যবসা চালাচ্ছেন। গরমে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করলেও শীত মৌসুমে তিনি ভাপা পিঠার ব্যবসা করেন। প্রতিদিন তিনি ভাপা পিঠা বিক্রি করে এক হাজার থেকে বারোশ টাকা উপার্জন করেন।
তার এই দোকানে কথা হয় বেজপাড়ার আবদুল মান্নানের সঙ্গে। তিনি বলেন, শহরের বাসাবাড়িতে পিঠা বানানো হয় না। শীতের মৌসুম আসলেই ফুটপাথের দোকানে ভাপা পিঠা তৈরি হয়। প্রায় খেতে আসি। শুধু খাই তা না বাড়ির সদস্যদের জন্যও নিয়ে যায়।
ধর্মতলা এলাকার মায়নুর খাতুন জানান, প্রতিদিন সাত-আট কেজি চালের গুড়ার ভাপা পিঠা তৈরি করি। চাল, গুড়, নারিকেল, জ্বালানিসহ খরচ বাদে প্রতিদিন তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ টাকা লাভ হয়। এই দোকানে কথা হয় এমএম কলেজের ছাত্র উষান রহমানের সঙ্গে।
তিনি বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে এসে প্রায় দিন এখানে ভাপা পিঠা খাই। বাড়িতে যেতে পারি না তো এই জন্য এখানে দশ টাকায় ভাল মানের পিঠা পাওয়া যায়।
-সাজেদ রহমান, যশোর অফিস
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: