ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

২০ দলের নিবন্ধিত সব দলকেই ফ্রন্টে যুক্ত করার চিন্তা

ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিচ্ছে জামায়াতপন্থী তিন বিতর্কিত দল

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিচ্ছে জামায়াতপন্থী তিন বিতর্কিত দল

বিভাষ বাড়ৈ ॥ দলগতভাবে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত দল জামায়াতকে কৌশল হিসেবে পরোক্ষভাবে রাখার পর এবার ড. কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে সরাসরিই যুক্ত হচ্ছে তিন বিতর্কিত ইসলামী দল। বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক এ দিন দলের নেতাদের বিরুদ্ধে আছে যুদ্ধাপরাধ, জামায়াত সংশ্লিষ্টতাসহ নানা অভিযোগ। জানা গেছে, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও মুসলিম লীগের নেতারা ইতোমধ্যেই ঐক্যফ্রন্টে যেতে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। বিএনপির সমর্থন থাকায় ড. কামালও ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন জামায়াত ঘরানার এ তিন দলের আসার প্রশ্নে। তিনটি দলের নেতাদের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার উদ্যোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুই পক্ষের নেতারাই। তবে দু’একজন ছাড়া এই মুহূর্তে এসব বিষয়ে নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি অধিকাংশ নেতাই। ২০ দলের হয়েই যেখানে ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন লড়ছেন, তাহলে আলাদা করে কেন ২০ দলে আসার চিন্তা? এমন প্রশ্নে তিন দলের নেতারা বলছেন, ‘ঐক্যফ্রন্ট হওয়ার পর ২০ দলের কোন কার্যকারিতা নেই। ২০ দল অকার্যকর হয়ে পড়াসহ নানা ঘটনায় ইতোমধ্যেই ২০ দল ছেড়ে অনেক শরিক চলে গেছে। তবে আমরা ২০ দল না ছেড়ে ঐক্যফ্রন্টে থাকতে চাই। ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধুরী ঐক্যের সঙ্গে না থাকায় তিন দলের ফ্রন্টে অনুকূল পরিবেশ হয়েছে বলেও মনে করেন দলগুলোর নেতা। আন্দোলন ও নির্বাচনী লড়াই জোরদার করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলছেন ঐক্যফ্রন্টের সিনিয়র নেতারা। সূত্রগুলো বলছে, ২০ দলের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত সকল দলকেই ফ্রন্টে যুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে। নিবন্ধিত দলগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপ, খেলাফত মজলিস, মুসলিম লীগ ও জাতীয় পার্টি (জাফর)। বাকি সকল দলই অনিবন্ধিত। আর জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে আগেই। ঐক্যফ্রন্টের এক নেতা জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট শুধু আন্দোলনের জন্য নয়, নির্বাচনের জন্যই বিএনপিকে নিয়ে এই ফ্রন্ট হয়েছে। কার্যত ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের পাল্টা জোট হিসেবে এই ফ্রন্ট গঠিত হয়েছে। এ কারণেই আমরা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। এদিকে, ড. কামালের নেতৃত্বে বিএনপি ছাড়াও কয়েকটি ক্ষুদ্র দলের সমন্বয়ে ঐক্যফ্রন্ট ও বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে বিকল্প ধারার আলাদা অবস্থানের আগেই উত্তর মিলেছে জোটের নামে আসলে কি হচ্ছে। বিএনপি নেতাদের পাশে রেখে ড. কামাল, আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর মান্না যে ঐক্যের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়েছেন তাতে কোথাও ছিল না জামায়াতসহ যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে আপত্তির কথা। বিএনপির জন্যও এখন আর নেই খালেদা জিয়া, তারেকের মুক্তির দাবির ইস্যু ও যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে আসার কোন শর্ত। বরং মাহমুদুর রহমান মান্না আত্মপ্রকাশের দিন যে ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন তাতে আদালতের মাধ্যমে অপরাধী প্রমাণিত হওয়া খালেদা জিয়াকে বলা হয়েছে ‘রাজবন্দী’। নির্বাচনের জন্য সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের আলোচনার শর্ত দিয়ে কি এ জোট জামায়াতের সঙ্গে আলোচনার বিষয় তুলছে কিনা সেই প্রশ্নও সামনে চলে আসছে।
×