ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিনিধি দলে থাকছেন ১৬ জন

ড. কামালের নেতৃত্বে সংলাপে যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

ড. কামালের নেতৃত্বে সংলাপে যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসবে নতুন রাজনৈতিক মোর্চা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে প্রতিনিধি দলের নাম ঠিক করতে মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে আলোচনা করেন ফ্রন্টের নেতারা। সেখানে সকলের মতামতের ভিত্তিতে ১৬ সদস্যের নাম ঠিক করা হয়েছে। গণফোরাম, বিএনপি, জেএসডি, নাগরিক ঐক্যের নেতা ছাড়াও বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে তালিকায়। তবে তালিকা প্রকাশ নিয়ে অনীহা ফ্রন্ট নেতাদের। সূত্র বলছে, প্রয়োজনে তালিকায় নাম বাড়ানো হতে পারে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আগামী ১ নবেম্বর গণভবনে সংলাপ করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ফ্রন্টের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্ব প্রতিনিধি দলে প্রাধান্য পাবে। ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণপত্র আমরা গ্রহণ করেছি। আমরা সব বিষয়েই কথা বলব। সংবিধান তো জনগণের জন্য। তাই জনগণের ভোটাধিকার যাতে নিশ্চিত হয়, সেটাই আমাদের দাবি। এর আগে বিকেল সোয়া ৪টায় ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে এই বৈঠক শুরু হয়। তিনি খালেদা জিয়ার সাজা বাড়ানোয় নিন্দা জানিয়ে বলেন, খালেদা জিয়া টাকা আত্মসাত করেছেন, এটা কেউই বিশ্বাস করবে না। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সহ-সভাপতি তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর প্রমুখ। খালেদা জিয়ার সাজা বাড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী সামান্য অর্থ চুরি করবেন এটা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা উল্লেখ করে রব বলেন, যেটা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না আমি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে কিভাবে বিশ্বাস করি খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট থেকে অর্থ চুরি করেছিলেন। সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, জেএসডি, নাগরিক ঐক্যসহ বিএনপি থেকেও প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। সাংবিধানিক সকল বিষয়ে বৈঠকে আলোচনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা খোলা মন নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। সেখানে সকল বিষয়ে আলোচনা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে রব বলেন, সংলাপে সব দল থেকেই প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সংলাপ হবে। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও অংশ নেবেন। এই প্রসঙ্গে আ স ম আবদুর রব জানান, ড. কামাল ছাড়া ১৫ জনের একটি প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেবে। গণভবনের সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দলে দলনেতা হিসেবে থাকবেন ড. কামাল হোসেন। বিএনপি থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও মির্জা আব্বাস। নাগরিক ঐক্য থেকে থাকবেন, মাহমুদুর রহমান মান্না ও এসএম আকরাম। গণফোরাম থেকে মোস্তফা মহসিন মন্টু ও সুব্রত চৌধুরী। জেএসডি থেকে আ স ম আবদুর রব, আব্দুল মালেক রতন, তানিয়া রব। ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে সুলতান মনসুর, আ ব ম মোস্তফা আমিন ও স্বতন্ত্র হিসেবে থাকবেন ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। এদিকে গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য সরকার অবশ্যই চাপে রয়েছে। বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাতকারে বিশিষ্ট এ আইনজীবী আরও বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করাটাই চাপ। তারা (সরকার) জানে, যে নির্বাচনে মানুষ অংশগ্রহণ করে না, সেই নির্বাচন থেকে কিছু পাওয়া যায় না। এই উপলব্ধি নিশ্চয়ই তাদের হয়েছে। তা না হলে তো আমাদের আলোচনায় ডাকার কোন দরকার তাদের ছিল না। সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিজেরা কতটা নমনীয় হবে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি আগে থেকে কোন অনুমান করতে চাই না। লক্ষ্য একটাই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। আমরা উভয়েই সেটা চাই। চিঠিতে ‘সংবিধানসম্মত’ শব্দটি জুড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী কি তাহলে তাদের অবস্থানেই অনড় থাকার বার্তা দিয়ে দিলেন? এমন আরেকটি প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, আলোচনার মাধ্যমেই বোঝা যাবে সরকার কতটা করার জন্য প্রস্তুত, কোন কোন ইস্যুতে তাদের দ্বিধা আছে।
×