ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঐক্যফ্রন্টের দ্বিতীয় সমাবেশ চট্টগ্রামে, অনুমোদন মেলেনি

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৬ অক্টোবর ২০১৮

ঐক্যফ্রন্টের দ্বিতীয় সমাবেশ চট্টগ্রামে, অনুমোদন মেলেনি

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রথম সমাবেশের পর বন্দরনগরী চট্টগ্রামে দ্বিতীয় সমাবেশ অনুষ্ঠানের কর্মসূচী রয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট এ সমাবেশ নিয়ে কঠিন পরীক্ষায় রয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে লালদীঘি ময়দানে এই সমাবেশ অনুষ্ঠানের আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কর্তৃপক্ষ লালদীঘিতে সমাবেশ অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেয়নি। ধারণা করা হচ্ছে লালদীঘিতে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ অনুষ্ঠানে অনুমতি দেয়ার সম্ভাবনাও নেই। তবে মহানগর বিএনপির নাসিমন ভবনের কার্যালয় প্রাঙ্গণ ও সন্নিহিত এলাকাজুড়ে সমাবেশের অনুমতি মিলতে পারে। ঐক্যফ্রন্টের এ সমাবেশ নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিএমপি কমিশনার মাহবুবর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জনকণ্ঠকে জানান, ‘আমরা এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিইনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে বিঘœ না ঘটে বিষয়টি মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে।’ এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে কারাগারে নেয়ার সময় পুলিশের ওপর হামলার দায়ে নগর বিএনপি সভাপতি ডাঃ শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করসহ দেড় শতাধিকের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট থেকে ডাঃ শাহাদাত হোসেন জামিন নিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে ডাঃ শাহাদাত ও আবুল হাশেম বক্করের বিরুদ্ধে গ্রেফতারযোগ্য আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে। ফলে ডাঃ শাহাদাত এখনও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। পক্ষান্তরে আবুল হাশেম বক্কর ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম জেলে রয়েছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মকা- পরিচালনায় চট্টগ্রামে মূলত শীর্ষ পর্যায়ে কারা তৎপর রয়েছেন তা স্পষ্ট নয়। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী কারাগারে। আবদুল্লাহ আল নোমান ও মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন কেন্দ্রীয় নেতা হলেও আঞ্চলিক পর্যায়ে তাদের প্রভাব রয়েছে। কিন্তু এদের কেউ এ বিষয়ে তেমন তৎপর নয়। ফলে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে ঘোষিত চট্টগ্রামের দ্বিতীয় সমাবেশ ঠিক কিভাবে হচ্ছে তা এখনও সুষ্পষ্ট নয়। দলের অন্য নেতা কর্মীরা ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে অনেকে প্রকাশ্যে আসছেনও না। তবে দলীয় কার্যালয় অভ্যন্তরে অনেকের তৎপরতা লক্ষণীয়। ধারণা করা হচ্ছে সিএমপি কর্তৃপক্ষ ঐক্যফ্রন্টের এ সমাবেশ লালদীঘি মাঠের বদলে বিএনপি দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে করার অনুমতি দেবে। সিএমপির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, কর্তৃপক্ষ কোন অবস্থাতেই লালদীঘিতে সমাবেশ করার অনুমতি দেবে না। দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ ও সন্নিহিত এলাকায় সমাবেশের অনুমতি দেয়ার পরিস্থিতি লক্ষণীয়। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের ঐক্যফ্রন্টের এ সমাবেশ নিয়ে তৎপর থাকার অলিখিত নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। অপরদিকে, চট্টগ্রামে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মূল সমন্বয়ক কে তা এখনও অঘোষিত। তবে ফ্রন্টের ব্যানারে বিএনপির নেতাদের তৎপরতাই যে মূল সেটা স্পষ্ট। সেক্ষেত্রে নগর বিএনপির মূল নেতা অর্থাৎ সভাপতি পলাতক, সাাধারণ সম্পাদক জেলে। অন্যান্য নেতারা আত্মরক্ষার কৌশল বেছে নিয়ে চলাফেরায় রত। এ সমাবেশ নিয়ে কোন মাইকিং নেই। মিছিল সমাবেশও হয়নি। সিলেটে শান্তিপূর্ণভাবে প্রথম সমাবেশটি হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় সমাবেশটি চট্টগ্রামে করার কর্মসূচী দিয়ে এখন তা সম্পূর্ণ কা-ারিবিহীন অবস্থায় রয়েছে। শেষ পর্যন্ত সমাবেশটি হয় তা হবে ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কয়েক নেতা এবং চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নেতাদের সমন্বয়ে। সিএমপি কর্তৃপক্ষ সমাবেশের অনুমতি না দিলেও ধারণা করা হচ্ছে আজকের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত দেয়া হবে।
×