ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলার মাটি ॥ বিশ্বে বাঁধিছে ঘর

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাংলার মাটি ॥ বিশ্বে বাঁধিছে ঘর

কন্যা এলো কন্যা এলো কন্যা ফিরে ঘর/কন্যা এলো নৌকা আবার ছাড়লো রে বন্দর/ইতিহাসের সাগরপানে সেই কন্যা বৈঠা টানে/নৌকা চলে এতদিনের থমকে থাকার পর/আবার দেশে সূর্য ওঠে পঁচাত্তরের পর... বাংলার সব্যসাচী কবি সৈয়দ শামসুল হকের কবিতায় ’৭৫-এর পর বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রবাস জীবন থেকে ফিরে এসে হাল ধরা থেকে বিগত ৩৮ বছরে বাংলার সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি কিভাবে ইতিবাচক ধারায় প্রবাহিত হয়েছে তারই চিত্র রয়েছে। বর্তমান ক্ষমতার মাত্র এক দশকে আজ ধনে-জনে, শিল্প-সংস্কৃতিতে বিশ্বে রোল মডেল। স্বল্পোন্নত, উন্নয়নশীল, উন্নত রাষ্ট্র অবাক বিস্ময়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের সূচকগুলোর দিকে নজর দিচ্ছে, গবেষণা করছে, গ্রন্থ রচনা করছে। এ যেন ‘বাংলার মাটি বিশ্বে বাঁধিছে ঘর।’ ২৮ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুকন্যার জন্মদিন। লিখছি ২৭ সেপ্টেম্বর, সিডিউল অনুযায়ী ছাপা হবে ২৯ সেপ্টেম্বর শনিবার। তাই প্রিয় নেত্রীর এবারের জন্মদিনকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছি। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে প্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা জানিয়ে অংশগ্রহণ শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের টেবিলে ফিরে লিখতে বসলাম। সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ‘সতীর্থ স্বজন’ আয়োজিত এই আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার ওপর প্রকাশিত প্রবন্ধ সমগ্র ‘তিমির হননের নেত্রী’ ও মিসরীয় সাংবাদিক-সাহিত্যিক মহসিন আল আরিশি আরবী ভাষায় রচিত হাসিনা : হাকাইক ওয়া আসাতি (বাংলা অনুবাদ ‘শেখ হাসিনা : উপাখ্যান ও বাস্তবতা’) গ্রন্থ দুটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বাংলা অনুবাদ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মুহম্মদ আবদুর রশীদ এবং কামরুল ইসলাম ও আবদুল্লাহ যোবায়ের টিম। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে লেখক মহসিন আল আরিশিও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সফর করছেন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন- গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্ব তুলে ধরা হয়েছে, বিশেষ করে আরবী ভাষাভাষী মানুষের জন্য। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ভিসি প্রফেসর ড. কনক কান্তি বড়ুয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর প্রফেসর ড. আতিয়ার রহমান, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডাঃ হাসান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, তরুণ প্রজন্মের রাশেক রহমান, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সবাই একমত যে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে যে উচ্চতায় তুলে এনেছেন এবং সাহসী পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছেন, সবকিছু বদলে দিয়েছেন, আমরা নাগরিকরা তার কাছে ঋণী। তার হাতকে আরও শক্তিশালী করার শক্তি যুগিয়ে আমাদের ঋণ শোধ করতে হবে। কেননা আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। শেখ হাসিনা আজ বিশ্বের পাঁচজন সৎ রাষ্ট্রনেতার মধ্যে ৩য় এবং দশজন সাহসী ও ক্ষমতাধর রাষ্ট্রনেতার মধ্যে দ্বিতীয়। জন্ম দক্ষিণ বাংলার এক অজপাড়াগাঁ টুঙ্গিপাড়ার সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে, যে পরিবারে ধর্ম-কর্ম বিশ্বাস সংস্কৃতি চর্চায় সম্পূর্ণভাবে অসাম্প্রদায়িক। শৈশব কেটেছে সেই গ্রামে এবং তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষে ঢাকায় আসেন ও আজিমপুর গার্লস হাইস্কুল, ইডেন গার্লস কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন থেকে শুরু ছাত্র রাজনীতি এবং পরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জাতীয় রাজনীতিতে উঠে আসেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে সামরিক অভ্যুত্থানের নামে আর্মির কতিপয় অফিসার ডাকাতবেশে তার মা-বাবা, ভাই-ভ্রাতৃবধূসহ পরিবারের সবাইকে হত্যা করে। তখন শেখ হাসিনা ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে জার্মানিতে পোস্ট-পিএইচডি গবেষণারত স্বামী অণু বিজ্ঞানী ড. এম ওয়াজেদ আলী মিয়ার কাছে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। জীবনটি একেবারে তছনছ হয়ে যায়। তবু তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে সব কিছু মোকাবেলা করেন। ৬ বছর দেশে ফিরতে পারেননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট; কিন্তু অনিশ্চয়তার কারণে এমএ ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারেননি, এ আক্ষেপ থাকলেও দুঃখ নেই। কারণ এ বিশ্ববিদ্যালয়টি বঙ্গবন্ধুকে পোস্ট গ্রাজুয়েট বা মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করতে দেয়নি। ছাত্র থাকাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ায় তাঁকে বহিষ্কার করে। শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন বঙ্গবন্ধু সারাজীবন সংগ্রাম করে, জেল-জুলুম সহ্য করে দেশ স্বাধীন করেন এবং তিন বছরের মাথায় দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে উন্নীত করেন। আরও ৫ বছর বেঁচে থাকলে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশন করতে পারতাম। গতকাল ২৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার ছিল জন্মদিন। সাত দশকের দীর্ঘ পথচলা। যাপিতজীবন ঘটনাবহুল। বাবা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, তৃতীয় বিশ্বের অনুন্নত উন্নয়নশীল দেশের গরিব-দুঃখীর সবচেয়ে শ্রদ্ধাভাজন নেতা, বাঙালীর স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্রের গর্বিত পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাতা বঙ্গবন্ধুর পারিবারিক এবং রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে নির্ভরশীল সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। এই যার উত্তরাধিকার, লেখাপড়া, বেড়ে ওঠা তিনি আমাদের আজকের প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা। তিনি যখন সমাজের কাজে নামেন তখন সমাজে পরিবর্তন আসবেই অথবা তিনি যখন রাজনীতির মহাসড়কে পা রাখেন তখনও রাষ্ট্র রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন হবেই। তাই তো দেখা গেছে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতির অঙ্গন কেঁপে উঠেছিল। তিনিই বলতে পারেন : ‘আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি জাতির পিতার কন্যা, বাংলার গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে চাই।’ তিনিই বলতে পারেন : ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়া রাখতে পারবা না।’ তাই তো বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেও বাঙালী জাতিকে বাঙালীর স্বাধীন রাষ্ট্রকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি। আজ বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক উন্নয়নের যে উচ্চতায় উঠে এসেছে তার ভিত্তিতে ভাবা যায় ভবিষ্যতেও কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। বরং তাবত বিশ্বের জাতি-রাষ্ট্রগুলো অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছে আগামীর বাংলাদেশকে। তারা প্রশ্ন করেন ‘Excellency madam prime Minister Sheikh Hasina, hwo did you do that? what is yours masic? বঙ্গবন্ধুর ভিতের ওপরে দাঁড়িয়ে বিগত ১৫ বছরে (১৯৯৬-২০০১ এবং ২০০৯-২০১৮) আপনি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের অবস্থান থেকে উন্নয়নশীল দেশের মহাসড়কে তুলে এনেছেন। লক্ষ্য ২০৪১ সালে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপান, জার্মান, রাশিয়ার মতো উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়া। এরই মধ্যে শতবর্ষী ডেল্টা প্লানও ঘোষণা করে দিয়েছেন। মাঝে আরও দুটি পরিকল্পনা আছে ভিশন ২০-২১। অর্থাৎ আগামী ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। জাতিকে আপনি এমন অবস্থানে নিয়ে এসেছেন যে, তারা আপনার নেতৃত্বেই দিবস দুটি উদযাপন করবে। সেই প্রস্তুতি নিয়ে এখন থেকে এগিয়ে চলেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা আপনার গুণমুগ্ধ নাগরিক। এ আমাদের গর্ব। এ আমাদের অহঙ্কার। আপনার কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। ধন্যবাদ জানিয়ে আপনাকে ছোট করতে চাই না। তবু যে যে কারণে আমরা কৃতজ্ঞ তা প্রকাশ করতে পারলেও নিজেকে হাল্কা মনে হবে। বাঙালী জাতির ওপর যখনই কালো ছায়া নেমে এসেছে আপনি আলোকবর্তিকা হাতে সামনে হাজির হয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির পিতাকে হত্যার পর যখন কালো ছায়া নেমে এসেছিল বাংলাদেশে তখন থেকে আপনি আলোর মশাল হাতে মিছিলের সামনে দাঁড়িয়েছেন, আদর্শিক ধারায় নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবেই, কেউ দাবিয়ে রাখতে পারছে না, পারবে না। মহাসমুদ্রের গভীর তলদেশ থেকে মহাকাশের কক্ষপথে বাংলাদেশের দাপুটে অভিযাত্রা, সেও কেবল আপনার সৎ-সাহসী-সংগ্রামী মেধাবী দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে। তাই তো আপনি তৃতীয় বিশ্বের জনবহুল এই বাংলাদেশে আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমাদের কৃতজ্ঞতার ভাষা নেই, আমরা আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ : : আল্লাহ পাকের রহমত আপনার ওপর রয়েছে। : দেশের ৭৬% নাগরিক আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করে। : আপনার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। : আপনি নিজেকে নেতৃত্বের একেবারে আলাদা জাগায় অধিষ্ঠিত করেছেন। : আপনার ও আপনার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন অভিযোগ কেউ উত্থাপন করতে পারেনি। আপনার কোন লোভ নেই। : বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক আজ খেয়ে-পরে সুখে আছে। : বাংলাদেশের মানুষ আজ স্বপ্ন দেখার যোগ্যতা অর্জন করেছে। : আজ একটি মানুষও খালি পায়ে হাঁটে না। : আপনি নগর ও পল্লীর দূরত্ব ঘুচিয়ে দিয়েছেন। : মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, উৎসব ভাতা ইত্যাদি খাতে প্রত্যাশার বাইরেও বরাদ্দ দিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন, যা বাংলাদেশের প্রাণ। : আজ বিদ্যুতের আলোর মতো শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে। : আজ গ্রামীণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ছেলেমেয়েরা জিন্স-কেডস পরে স্কুলে যাতায়াত করে। : দেড় কোটি মায়ের কাছে শিশু শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা মোবাইল ফোন ফ্ল্যাক্সির মাধ্যমে চলে যাচ্ছে। : আমাদের খাদ্যশস্য উৎপাদন ৪ কোটি টন। : আমরা খাদ্যশস্য রফতানি করছি। : আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মৎস্য উৎপাদনে তৃতীয়। ইলিশ উৎপাদনে প্রথম। : আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সবজি উৎপাদনে ৪র্থ। : আজ আমাদের মাথাপিছু আয় ১৭৬২ মার্কিন ডলার। : আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। : জিডিপি ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। : বিদ্যুত উৎপাদন ২০০৬ সালের ৩২০০ মেগাওয়াট থেকে আজ ১৮ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জন করেছে। : ক্রাইসিসের সময় আপনি কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের মাধ্যমে বিদ্যুত উৎপাদন করে চাহিদা মিটিয়েছেন। : ক্রাইসিস অবস্থা অতিক্রম করায় আর কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট নয়, এখন নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন করছেন। : মহাসমুদ্রের তলদেশে থেকে মহাকাশ জয় করেছেন। : আজ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশের কক্ষপথে। : আপনি পুরান ঢাকার সর্বহারা এতিম তিন কন্যার মা হওয়ার মানবিকতা প্রমাণ করেছেন। : রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মৃত্যুর মুখ থেকে উদ্ধার করে এক মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। : আপনি মাদার অব হিউম্যানিটি। : আপনি ধরিত্রীর আদরের কন্যা বা চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্যা আর্থ। : বাংলাদেশকে আজকের অবস্থানে তুলে আনায় আপনি স্টার অব দ্যা ইস্ট। : আপনি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, বঙ্গবন্ধুর ওপর গোয়েন্দা রিপোর্ট একটার পর একটা গ্রন্থ প্রকাশ করে চলেছেন। : ১৯৭৫ সালের কালরাতের পর বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানী সাম্প্রদায়িক ধারায় নিয়ে যাবার জিয়া-চক্রান্তের হাত থেকে উদ্ধার করে স্বাধীনতার মূলধারায় ফিরিয়ে এনে আজকের পরিবর্তনের ধারায় নিয়ে এসেছেন। : আপনি শক্ত হাতে আইএস, আল কায়েদার পোষা জঙ্গী গোষ্ঠী ও মতবাদকে দমন করেছেন। বাংলাদেশের কিছু দস্যু তাদের লঞ্চ ব্যবসা, বাস সার্ভিসের স্বার্থে ঐতিহ্যবাহী এবং সাধারণের সবচেয়ে নির্ভরশীল পরিবহন রেলকে রীতিমতো ধ্বংস করে দিয়েছিল। আপনি সেই ভেঙ্গে পড়া রেল সিস্টেমকে পুনর্জ্জীবিত করেছেন। এ লক্ষ্যে একজন সৎ দলীয় কর্মী এ্যাডভোকেট মুজিবুল হককে দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি সাদাসিধে মানুষ, দল-সমাজের আনুগত্যের প্রশ্নে একশ’ ভাগ। এই আজকের শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। প্রিয় নেত্রী পদ্মা সেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল, ঢাকা-চট্টগ্রামে জালের মতো ফ্লাইওয়ার নির্মাণ, এমনি আপনার নেতৃত্বের শত শত সাফল্যের উদাহরণ দেয়া যাবে। জন্মদিন উপলক্ষে সে সবের কিছু উদাহরণ তুলে ধরলাম। মাননীয় দেশরত্ন শেখ হাসিনা, জন্মদিন আনন্দের। তারপরও এমন জন্মদিন থাকে যা সকল আনন্দ ছাপিয়ে মানুষকে স্বপ্নের জগতে নিয়ে যায়। শেখ হাসিনা, আপনি জাতিকে সেই স্বপ্নের জগতে নিয়ে গেছেন। আপনি স্বপ্ন দেখতে জানেন, স্বপ্ন দেখাতে জানেন, স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে পারেন। আপনার জন্মদিন শুভ হোক, আনন্দময় হোক। আপনার দীর্ঘ চলার পথ মোটেই নিরাপদ ছিল না। প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। বিশবার আপনার ওপর হামলা হয়েছে। গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে। আল্লাহর অশেষ কৃপায় কোন ক্ষতি হয়নি আপনার। আপনি দৃপ্তপায়ে আমাদের আলোর মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। তাই তো বড় বড় এত কাজ করতে পারছেন, দেশ বদলে দিতে সক্ষম হয়েছেন। আরও অনেকদিন আপনার নেতৃত্ব বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। আফ্রিকার কালো মানুষের নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার ভাষায় বলতে হয় ‘... ষড়হম ধিু ঃড় মড়, নবভড়ৎব বি ংষববঢ়. আজ এই মুহূর্তে আল্লাহ পাকের দরবারের দোয়া চাই, আপনি সুস্থ থাকুন, দীর্ঘজীবী হোন। ঢাকা ॥ ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ লেখক : সভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাব ও সিনেট সদস্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় [email protected]
×