
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন (৫২) এর লাশ বাড়ির কাছে ধইঞ্চা ক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (৬ জুলাই) ভোরে বসতবাড়ির একশ গজ দূরে রাস্তার পাশে একটি ধইঞ্চা ক্ষেতের পাশ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে স্বজন ও এলাকাবাসী।
নিহত যুবদল নেতা আমজাদ হোসেন উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের মৃধাকান্দা গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে। তাঁর নামে একটি অর্থ সংক্রান্ত মামলায় আদালত কর্তৃক এক বছরের কারাদণ্ডের রায়ের গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল বলে পুলিশ সূত্র জানায়। তাছাড়াও তাঁর নামে বিভিন্ন থানায় রাজনৈতিক ও জমি-জমাসহ ২৭টি মামলা ছিল বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।
নিহতের স্বজন ও প্রত্যদক্ষদর্শীরা জানায়, ভোর ৪টার দিকে সাজার পরোয়ানা নিয়ে আমজাদকে গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ। তাঁকে না পেয়ে পুলিশ ফিরে যায়। এক সময়ে আমজাদ বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। স্ত্রীর ধারণা সে মসজিদে নামাজ পড়তে গেছে।
ভোর ৫টার দিকে স্থানীয় লোকজন ও মসজিদের মুসল্লিরা মৃধাকান্দার রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে ধইঞ্চা ক্ষেতের পাশে আমজাদের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পরিবারে খবর দেয়। এসময় পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা আমজাদকে তুলে নবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ নিয়ে বাড়ি চলে যায় স্বজনরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যুবদল নেতা আমজাদকে হত্যা করা হয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এসময় দলীয় নেতাকর্মী ও স্বজনরা ছুটে আসে আমজাদের বাড়িতে। সংবাদ পেয়ে নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ আমজাদের বাসায় গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে।
আমজাদের স্ত্রী মাহফুজা বেগম বলেন, আমি জানি না আমার স্বামী কীভাবে মারা গেল। আল্লাহর কাছে বিচার চাই, এ কথা বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আমজাদের ভাই জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই রাজনীতি করে। তাঁর অনেক প্রতিপক্ষ আছে। পুলিশ তাঁকে ধরতে আসলেও সে কেন ওখানে গিয়ে পড়ে মারা গেল? এটা আমরা বুঝতে পারছি না।’
আমজাদের বড় মেয়ে আশা আক্তার বলেন, ‘বাবার মুখে ও চোখের কোণে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তবে বাবাকে কেউ হত্যা করেছে কিনা তা এখনো বলতে পারবো না।’
পরিবারের আগ্রহ না থাকলেও পরে নিহতের পরিবারের সম্মতিতে পুলিশ যুবদল নেতা আমজাদের লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মিডফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, আমজাদ হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত করাটা জরুরি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
যুবদল নেতা আমজাদের মৃত্যুর সংবাদ শুনে শোকসন্তপ্ত পরিবারে সমবেদনা জানাতে ছুটে আসেন বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের মেয়ে ব্যারিস্টার মেহনাজ মান্নানসহ নেতাকর্মীরা। এসময় মেহনাজ মান্নান নিহতের পরিবারকে শোক ও সমবেদনা জানিয়ে যেকোনো সময় পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
মেহনাজ মান্নান বলেন, ‘আমজাদ দলের একজন ত্যাগী নেতা। অনেক মামলা হামলার শিকার হয়েছে। আজ এভাবে রহস্যজনক এ মৃত্যুর কারণ আমরা খুঁজে বের করতে চাই।’
রাকিব