ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শহিদুল আলমের আবেদন শুনতে বিচারপতি বিব্রত

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

শহিদুল আলমের আবেদন শুনতে বিচারপতি বিব্রত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় দায়ের করা মামলায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের জামিন চেয়ে করা আবেদনের শুনানিতে বিব্রত হয়েছে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। মঙ্গলবার বিচারপতি মোঃ রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি খোন্দকার দিলুরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি করতে বিব্রতবোধ করেন। ফলে আইন অনুযায়ী বিষয়টি এখন প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। প্রধান বিচারপতি এ আবেদনের শুনানির জন্য তৃতীয় একটি বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। এদিকে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ বিষয়ে বলেছেন, শহিদুল আলম আন্তর্জাতিকভাবে বহু লোকের সঙ্গে কানেক্টেড (সংযুক্ত)। ফেসবুক থেকে যদি একটি লাইভ পোস্ট করা হয় এবং যেখানে বিষয়টি স্পর্শকাতর, মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বিষয় হয়, তবে এটাকে তো খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই। অন্যদিকে আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আদালতের কাছে বলেছি, আমাদের যে জামিন আবেদনটি আছে সেটি শুনানি করা হোক। সিদ্ধান্ত কী হবে, সেটা আদালতের ব্যাপার। আমরা শুনানির সুযোগ চাই। আমরা কারণ জানতে চেয়েছি, কেন আমাদের আবেদন শোনা হবে না। পাঁচদিন ধরে আমাদের আবেদনটি কার্যতালিকায় রয়েছে। প্রতিদিনই কোন না কোন কারণে এটি শুনানি করা যায়নি। এর আগে এ্যাটর্নি জেনারেলের পক্ষেই সময় নেয়া হয়েছে। তারপরই মঙ্গলবার এসে আদালত কী কারণে বিব্রত বোধ করেছেন, তা আমরা বুঝতে পারিনি। তিনি জানান, এখন প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করা হবে, আগামীকালের (বুধবার) মধ্যে যেন একটি বেঞ্চ ঠিক করে দেন। এর আগে, গত ২৮ আগস্ট শহিদুল আলমের জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। এ মামলায় ৬ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শহিদুল আলমের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। গত ১৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করা হলে ১১ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখেন। এরপর ১৯ আগস্ট শুনানির তারিখ এগোনোর জন্য আবেদন করা হলে তা গ্রহণ করেনি আদালত। এ অবস্থায় ২৬ আগস্ট শহিদুল আলমের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চাইলে ওই আদালত শুনানির জন্য তা গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় তারা হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ‘উস্কানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় দায়ের করা মামলায় ৬ আগস্ট শহিদুল আলমকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এর আগের দিন রাতে ধানম-ির বাসা থেকে তাকে তুলে নেয় ডিবি। সাত দিনের রিমান্ড শেষে গত ১২ আগস্ট শহিদুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন নিম্ন আদালত। বিষয়টি খাটো করে দেখার অবকাশ নেই ॥ এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন,শহিদুল আলম আন্তর্জাতিকভাবে বহু লোকের সঙ্গে কানেক্টেড (সংযুক্ত)। তিনি বলেন, ফেসবুক থেকে যদি একটি লাইভ পোস্ট করা হয় এবং যেখানে বিষয়টি স্পর্শকাতর, মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বিষয় হয়, তবে এটাকে তো খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই। আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের জামিন শুনানিতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের বিব্রত হওয়ার পর মঙ্গলবার এক প্রতিক্রিয়ায় এ্যাটর্নি জেনারেল এর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন। মাহবুবে আলম বলেন, শহিদুল আলমের মামলাটি মঙ্গলবার শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত ছিল। সকালে যখন তাদের আইনজীবী আবেদনটি শুনানির জন্য মেনশন করেছেন তখন বিচারপতি দু’জনের মধ্যে একজন বিব্রতবোধ করেছেন। ফলে মামলাটি শুনানি হয়নি। মামলাটির নথিপত্র এখন প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। প্রধান বিচারপতি আবার অন্য কোন বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য নির্ধারণ করবেন। তিনি বলেন, আমি এ মামলায় শুনানি করতে চেয়েছিলাম। এ জন্য প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু আদালত শুনল না। তাই আমার বক্তব্যও উপস্থাপন করা হয়নি। বিব্রতের কারণ নিয়ে মাহবুবে আলম বলেন, বিব্রতের বিষয়ে আদালত কিছুই বলেনি। আমাদের কোর্টের ম্যাটার অব প্র্যাকটিস অনুসারে বিব্রতের কারণ কখনও বলা হয় না। এদিকে শহিদুল আলমের আইনজীবীরা দাবি করছেন তাকে বিনা কারণে আটকে রাখা হয়েছে। তবে এ প্রসঙ্গে এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটা ঠিক নয়।
×