ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁপাই সীমান্ত হয়ে ফের অস্ত্র ও বিস্ফোরক ঢুকছে দেশে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৯ আগস্ট ২০১৮

চাঁপাই সীমান্ত হয়ে ফের অস্ত্র ও বিস্ফোরক ঢুকছে দেশে

ডি.এম তালেবুন নবী, চাঁপাই সীমান্ত ঘুরে এসে ॥ আবার বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে। আর এই অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে অস্ত্র ও বিস্ফোরক চোরাকারবারিরা। আগস্ট শুরু হওয়া মাত্র অস্ত্র ও বিস্ফোরক চোরাকারবারিরা খুবই সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা সীমান্তজুড়ে অস্ত্র ও বিস্ফোরক চোরাচালানের নেটওয়ার্ক চালু করেছে। গত এক মাসে কত অস্ত্র ও বিস্ফোরক দেশে ঢুকেছে তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও দিনরাত ২৪ ঘণ্টায় বড় মাপের অস্ত্রের চালান ঢুকছে একাধিক, যা নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে গেছে। তবে হঠাৎ করে বিজিবি এ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে দুটি ছোট চালান আটকের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নড়েচড়ে বসে। একটি চালানে তিনটি পিস্তলসহ গুলি ও ম্যাগজিন উদ্ধার করে বিজিবি। অস্ত্রের মধ্যে ইউএসএর তৈরি একটি পিস্তল ও দুটি ভারতীয় ওয়ান শূটার পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি ও দুটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এসব অস্ত্র আসা শুরু হয়েছে বলে জানান ৫৯ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্নেল রাশেদ আলী। তিনি সাইদুর রহমানের বাড়ি থেকে অস্ত্রের ছোট চালানটি আটকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, গত বছর ২৩ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করলেও এ বছর এরই মধ্যে ২৬ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের সীমান্ত পথে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র অনুপ্রবেশ বেড়েছে। দ্বিতীয় চালানটি উদ্ধার হয়েছে একটি আমবাগান থেকে। স্থানটির অবস্থান শ্যামপুর বাজার এলাকায়। এখান থেকে উদ্ধার হয় তিনটি পিস্তল, ৩ গুলি ও একটি ম্যাগজিন। এ সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। অধিকাংশ অস্ত্র বিদেশ থেকে আমদানি করা। নেপাল, মিয়ানমার হয়ে আসে এসব অস্ত্র। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিজিবি অধিনায়ক বলেন, সীমান্তের ওপারে অবৈধ কিছু অস্ত্রের কারখানা রয়েছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। তিনি বলেন, অস্ত্র পাচার প্রতিরোধে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস পাওয়া গেছে। অধিনায়কের আশা সীমান্তে সকল ধরনের অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালানের বিরুদ্ধে বর্ডার গার্ড অভিযান অব্যাহত রেখে চোরাকারবারি চক্রের মেরুদ- ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। তবে ভারতীয় অস্ত্র চোরাকারবারিরা বাংলাদেশের সীমান্তজুড়ে (১৭৪ কিলোমিটার) নতুন করে অস্ত্র কারখানা তৈরি করে চলেছে। কৌশল পরিবর্তন করে বাড়ির মধ্যে গোপন স্থানে এসব অস্ত্র তৈরি করছে। বিশেষ করে শিবগঞ্জের শাহবাজপুর, দাইপুকুরিয়া, কানসাট, মোবারকপুর, শ্যামপুর, বিনোদপুর, মনাকষা, উজিরপুর, পাকা, দুর্লভপুর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের বারঘরিয়া, চামাগ্রাম, মহারাজপুর, রানীহাটি, সুন্দরপুর, শাহজাহানপুর, চরবাগডাঙ্গা, নারায়ণপুর, দেবীনগর, আলাতুলী, ইসলামপুর ও চরবাগডাঙ্গা এলাকায় মজুদ করা হচ্ছে ছোট ছোট বিদেশী অস্ত্র, সঙ্গে রয়েছে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক। দুর্লভপুরের আইয়ুব বিশ্বাসের পাড়া, মনোহরপুর, ঘুঘুডাঙ্গা, ডাকাতপাড়া, হাসানপুর, কাগজাপাড়া, সোনাপুর, নামো জগন্নাথপুর, দোভাগীসহ দশ গ্রাম বা মহল্লা।
×