ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মায় নাব্য সঙ্কট

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি সার্ভিস ১৮ দিনেও সচল হয়নি

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৯ আগস্ট ২০১৮

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি সার্ভিস ১৮ দিনেও সচল হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ নাব্য সঙ্কটে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ১৮ দিনেও স্বাভাবিকতা ফেরেনি ২১ জেলার প্রবেশদ্বার শিমুলিয়ায়। ফেরি চলছেও না, ফেরি বন্ধও থাকছে না। এই অবস্থায় দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার লাখো মানুষ পড়েছে বিপাকে। কখনও ফেরি চলছে, কখনও ফেরি বন্ধ থাকছে, কখনও চ্যানেলে ফেরি আটকা পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রীরা। এ অবস্থার শেষ কোথায় ? কবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই রুটে সচলতা আসবে ? এ ব্যাপারে দায়িত্বশীলরা কেউ কিছু বলছে না। কারও কোন মাথাব্যথা নেই। কেউ বলতে পারছে না কবে এই দুর্ভোগের অবসান হবে। বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি দুই ঘাটে প্রতিদিন গড়ে ৩৫ লাখ টাকার ওপরে রাজস্ব আদায় হতো। এখন নাব্য সঙ্কটে এই রুটে গড়ে প্রতিদিন রাজস্ব আদায় হচ্ছে ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা। কোন কোন দিন ৫ লাখ টাকাও আদায় হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে সার্ভিসের কী দুরবস্থা ! সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। আর নাব্য নিরসনে দিনের পর দিন চলছে ড্রেজিং। লাখ লাখ টাকার তেল পুড়িয়ে ড্রেজিং চললেও তা কোন কাজে আসছে না। জনমনে প্রশ্ন জেগেছে আসলে ড্রেজিংয়ের নামে কী চলছে পদ্মায়! এদিকে সোমবার রাতে ৩টা কে-টাইপ ফেরি দিয়ে সচল ছিল সার্ভিস। মঙ্গলবার সকাল থেকে রো রো এবং ডাম্প ফেরিসহ ১৭টি ফেরি দিয়েই সার্ভিস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু একটা ট্রিপও ফেরিগুলো ঠিকমতো দিতে পারেনি। বিআইডব্লিউটিসি’র এজিএম খন্দকার শাহ খালেদ নেওয়াজ জানিয়েছেন, ফেরিগুলো বার বার আটকে যাচ্ছিল। প্রতিদিনই চ্যানেলে আটকে যাচ্ছে ফেরি। পরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টার পর এগুলো উদ্ধার করা হচ্ছে। এছাড়া ডুবোচরে আটকে ফেরির প্রপেলারসহ ইঞ্জিনের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া রো রো ফেরি দুটো ৩০ কিলোমিটার ঘুরে পালের চর-মাঝিকান্দি ন্যাচারেল চ্যানেল দিয়ে চলাচলের জন্য বলেছিল বিআইডব্লিউটিএ। মঙ্গলবার সকালে সেখান দিয়ে চলতে গিয়ে রো রো ফেরি শাহ পরান ও বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর শিমুলিয়া থেকে কাঁঠালবাড়ি যেতে সময় লেগেছে ৪ ঘণ্টা। এর আগে সোমবার এই ফেরির এই পথ ঘুরে ফিরতে সময় লেগেছিল ৬ ঘণ্টা। যেখানে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে ফেরি চলতে সময় লাগে ১ ঘণ্টা থেকে সোয়া ঘণ্টা, সেখানে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা লাগলে তো ফেরি চালানো সম্ভব হবে না। তাই মঙ্গলবার রো রো ফেরি দুটি কাঁঠালবাড়ি পাঠানোর পর আর ফেরত আনা হয়নি। তবে বিআইডব্লিউটিএ বলেছে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লৌহজং চ্যানেল ড্রেজিং শেষে খুলে দেয়া হবে। যদি চ্যানেলটি খুলে দেয়া যায় তাহলে রো রোসহ অন্য ফেরিগুলো স্বাভাবিকভাবে চলতে পারবে। এছাড়া ফেরি ক্যামেলিয়া সোমবার দুপুর ২টায় চ্যানেলের মুখে আটকে যায়। ৪ ঘণ্টা পর বিকেল ৬টায় ফেরিটি উদ্ধার করা হয়। এই পানির গভীরতায় ফেরিটি চলতে পারছে না। তাই ফেরিটি শিমুলিয়া ঘাটে অলস বসে আছে। বিকেল ৪টা কাঁঠালবাড়ি ঘাটে অপেক্ষমাণ ছিল ৩ শতাধিক যান। আর ছিল হাজার হাজার যাত্রী। তিনি আরও বলেন যাত্রীদের চাপে ফেরিতে গাড়ি ওঠাতে সমস্যা হচ্ছে। মাঝে মাঝে ফেরি ভরে শুধু যাত্রী পার করতে হচ্ছে। ফেরি সার্ভিসে সমস্যার কারণে অনেকেই গাড়ি নিয়ে পার না হয়ে ঘটে এসে ফেরিতে পার হতে চাচ্ছে। যাতে সমস্যা হচ্ছে। তবে শিমুলিয়া ঘাটে কোন যানজট ছিল না বলে জানান এই কর্মকর্তা। বিআইডব্লিউটি-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হারুন অর রশীদ বলেন, ৮টি ড্রেজার দিয়ে লৌহজং চ্যানেলে ড্রেজিং চলছে। কিন্তু ন্যাচারাল চ্যানেল তো ঠিক আছে। সেখানে কোন সমস্যা নেই। সেখানে পানির গভীরতা ৭ থেকে ৮ ফুট। সব ফেরিই চলতে পারে শুধু রো রো ফেরি ছাড়া।
×