ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আইওএম ডিজির সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী

রোহিঙ্গাদের উন্নত আবাসনের কাজ চলছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৭ জুলাই ২০১৮

 রোহিঙ্গাদের উন্নত আবাসনের  কাজ চলছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বাংলাদেশের পক্ষে যা যা করা সম্ভব তা করা হবে। তাদের অন্যত্র স্থানান্তর করে উন্নত আবাসন ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ চলছে। আইওএম মহাপরিচালক উইলিয়াম লেসি সুইং পুনরায় প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশ আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় তার সংস্থা সব রকম সহায়তা করবে। উইলিয়াম লেসি সুইং রোহিঙ্গা সমস্যাকে বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ হিসেবে বর্ণনা করেন। সোমবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলে তারা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবেলা এবং শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। শরণার্থী প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যে আটকে পড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আইওএমের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। আইওএমের মহাপরিচালক উইলিয়াম লেসি সুইং রোহিঙ্গা সমস্যাকে বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ বাসভূমে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে পূর্ণ সহযোগিতা করবে। কারণ এক্ষেত্রে তাদের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। সম্প্রতি তার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনের কথা তুলে ধরে আইওএমের মহাপরিচালক বলেন, তারা সেখানকার স্থানীয় জনগণের সমস্যাগুলোও দেখেছেন। আইওএমসহ অন্যান্য সংস্থার কার্যক্রমে সহযোগিতা করায় বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন মহাপরিচালক। আইওএমের মহাপরিচালকের সিনিয়র উপদেষ্টা ওয়েন লি জেস, আইওএমের শরণার্থী সেল ইউনিটের প্রধান পেপি সিদ্দিকসহ সংস্থার প্রতিনিধিবর্গ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে জাতিসংঘের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান ॥ পরে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্র্যান বার্গেনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাত করেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় মিয়ানমার যাতে তার নাগরিকদের দেশে ফেরত নিয়ে যায় সেজন্য জাতিসংঘের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত, চীন, লাওস, থাইল্যান্ড, মিয়ানমারসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গেও বাংলাদেশ আলোচনা করেছে এবং এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সমর্থনের জন্য তিনি ধন্যবাদ জানান। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রমে মিয়ানমার ইউএনএইচসিআরের অংশগ্রহণে সম্মত হয়েছে। ভারত, চীন এমনকি জাপান রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারে বাসস্থান তৈরি করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কোফি আনান কমিশন যে সুপারিশ করেছিল তা বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন। জাতিসংঘের পক্ষে রাজনীতি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা শিন উমেজু, ইউএনএইচসিআরের আঞ্চলিক সমন্বয়ক জেমস লিনচ, আইওএম ডেপুটি চিফ অব মিশন আব্দুসাত্তর ইসোয়েভ এবং ইউএনএসজির আবাসিক প্রতিনিধির কার্যালয়ের মানবতা বিষয়ক উপদেষ্টা লেন ক্রাইনিক উপস্থিত ছিলেন।
×