ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শেলটেকের স্থপতি মাহফুজ তিন দিন ধরে নিখোঁজ

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১১ জুলাই ২০১৮

শেলটেকের স্থপতি মাহফুজ তিন দিন ধরে নিখোঁজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আবাসন নির্মাতা কোম্পানি শেলটেকের স্থপতি মোঃ বিএমএম মাহফুজ নবীন (৩৭) তিন দিন ধরে নিখোঁজ। এ ঘটনায় রাজধানীর ভাসানটেক থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তার পরিবার। নিখোঁজ মাহফুজের স্ত্রী জান্নাতুল এশা জানিয়েছেন, গত রবিবার সকালে কলাবাগানে অফিসে যাওয়ার জন্য ভাসানটেকের ধামাল কোটের বাসা থেকে বের হন। এরপর তিনি আর ফেরেননি। নবীন বাসায় না ফেরায় পরদিন সোমবার পরিবারের পক্ষ থেকে ভাসানটেক থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ভাসানটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির আহমেদ জনকণ্ঠকে, গত তিন দিন ধরে স্থপতি মাহফুজ নিখোঁজ জানিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে তার পরিবার। ওসি জানান, তদন্ত করে দেখা গেছে, মোবাইল ফোন বন্ধের আগে মাহফুজের সর্বশেষ অবস্থান ছিল দারুস সালাম থানার পাশে। পুলিশ তাকে খোঁজার চেষ্টা করছে। জিডিতে তার পরিবার উল্লেখ করেছেন, রবিবার ভাসানটেকের ধামাল কোটের বাসা থেকে কলাবাগানের অফিসের উদ্দেশে রওয়ানা হন। এরপর বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। মাহফুজ শেলটেকের স্থপতি হিসেবে চাকরি করেন। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্যবিদ্যায় পড়াশোনা করেছেন। ওসি সাব্বির জানান, মাহফুজের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মাহফুজের পারিবারিক কিংবা অন্য কারও সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। তবে সেদিন কলাবাগানে না গিয়ে কেন তিনি দারুস সালামে গিয়েছিলেন তা জানার চেষ্টা চলছে। তাকে খোঁজার চেষ্টা অব্যাহত আছে। মঙ্গলবার স্থপতি মাহফুজের স্ত্রী জান্নাতুল এশা জানান, রবিবার বেলা ১১টার পর মাহফুজ ধামালকোটের বাসা থেকে বের হন। পরে তার মোবাইল থেকে একটি এসএমএস পান তিনি। সেখানে বলা হয়, মোবাইলে চার্জ শেষ। অফিসে গিয়ে দুপুরে ফোন দেবেন মাহফুজ। এশা জানান, সেদিন বেলা ২টার পর তার (মাহফুজের) ফোন করে বন্ধ পান তিনি। পরে অফিসে ফোন করে জানতে পারেন, মাহফুজ অফিসেই যাননি। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার শেলটেকের প্রধান স্থপতি মমিনুন নেছার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি হাসপাতালে আছেন জানিয়ে লাইন কেটে দেন। জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাসানটেক থানার এসআই রুহুল আমিন জানান, স্থপতি মাহফুজ নবীনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক। তার অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মা অসুস্থ। একমাত্র সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকতেন। অফিসে কম কথা বলতেন। এসআই রুহুল আমিন জানান, নবীনের মোবাইলের সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত করা গেছে দারুস সালাম এলাকায়। সেখানে তিনি কেন গিয়েছিলেন। নাকি অন্য কেউ তার মোবাইল ব্যবহার করছিল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আবার মাহফুজ বাসা থেকে বের হওয়ার পর কচুক্ষেত এলাকায় একটি ব্যাংকের বুথ থেকে তার কার্ড ব্যবহার করে ২০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। মাহফুজ কি নিজেই টাকা তুলেছিলেন নাকি অন্য কেউ তা জানতে বুথের সিসি ক্যামেরার ভিডিও সংগ্রহ করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে এসআই রুহুল আমিন জানান, নবীনকে কেউ অপহরণ করেছে কিনা? তিনি আত্মগোপন করেছেন কিনা? এর পেছনে জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার আশঙ্কা আছে কিনা নানা বিষয় মাথায় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে নিখোঁজের স্ত্রী এশা জানান, নবীনের জীবনযাত্রা ছিল অনেকটাই পরিবারকেন্দ্রিক। যতটুকু সময় পেত, পরিবারকেই দিত। সন্তানকে সে খুবই ভালবাসেন। কাউকে কিছু না জানিয়ে অন্য কোথাও থাকার মানুষ সে নয়। পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ওই নামে কেউ আটক থাকার কোন তথ্য তাদের হাতে নেই।
×