ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেরুদ-ের হাড়ের ক্ষয়রোগ

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ২২ মে ২০১৮

মেরুদ-ের হাড়ের ক্ষয়রোগ

মেরদ-ের হাড় বা শরীরের যে কোন হাড়ের যদি ক্যালসিয়ামের ঘনত্ব বা ইগউ (Bone Mineral Density) কমে যায়, তাকে Osteoporosis বলে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ক্ষয়ও বৃদ্ধি পায়। হাড়ের ক্ষয়রোগ বা Osteoporosis মানুষের মধ্যে শতকরা ১২ জন পুরুষকে এবং শতকরা ৩০ জন মহিলাকে ধভভবপঃ করে। ফলে মেরুদ-ের হাড় ভেঙ্গে বসে যায় এবং মেরুদ- Instable হয়ে পড়ে। এটাকে বলে Compressive বা Wedge fracture। হাড়ের ক্ষয়রোগ বা Osteoporosis হলে সাড়া শরীরের ইগউ (Bone Mineral Density) কমে যায়। ফলে উরুর হাড়ের হবপশ বা (neck of femur ভেঙ্গে যায়। এর ফলে মানুষের এক পা Short হয়ে যায়। দুই পা একসঙ্গে শুয়ে থাকলে ঝযড়ৎঃ খবম বোঝা যায়। সাধারণত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার পর Osteoporosis হয়ে থাকে। কারণ এই সময় হাড়ে ক্যালসিয়ামের ঘনত্ব কমে যায়। তাছাড়া এ সময় হাড়ের ক্ষয় দ্রুততমভাবে বৃদ্ধি পায়। শরীরের হাড়ের ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ২০-৪০ বছর বয়স পর্যন্ত বাড়তে থাকে। কিন্তু এর পরে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমতে থাকে। মেয়েদের ক্ষেত্রে মাসিক বন্ধ হওয়ার পর ইস্ট্রোজেন নামক হরমোনের অভাব হয়। যার ফলে হাড়ে ক্যালসিয়াম ক্ষয় বেশি হয়। কারও ক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমে যাওয়ার জন্য কিছু জিন দায়ী থাকে। হাড়ের বৃদ্ধির সময় নিয়মিত ব্যায়াম ও প্রচুর ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খেলে শরীরের হাড় শক্ত থাকে। ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান হাড়ের ক্যালসিয়াম ক্ষয়ের অন্যতম কারণ। বয়স্ক পুরুষের ক্ষেত্রে Cortisol ওষুধ খেলে ও টেস্টোস্টেরন নামক হরমোন শরীরে তৈরি কম হলে, হাড় ক্ষয় বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া খিচুনির ওষুধ, ঐবঢ়ধৎরহ, ঘুমের ওষুধ, অতিরিক্ত ঞযুৎড়ীরহ, ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে ফেলে। রোগের লক্ষণ : রোগীর মেরুদ-ের হাড়ের ভেতর সরপৎড় ভৎধপঃঁৎব হয়। ফলে কোমড় ব্যথ্যা, পা ঝযড়ৎঃ হয়ে যাওয়া, সামনের দিকে মেরুদ- নুয়ে যাওয়া ইত্যাদি রোগ হতে পারে। মেরুদ- ভেঙ্গে গেলে রোগীর পা প্যারালাইসিস, পায়খানা, প্রস্রাব আটকে যাওয়া, সেক্স পাওয়ার কমে যাওয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। চিকিৎসা : কথায় বলে Prevention is better than cure. এই রোগ প্রতিরোধ করতে হলে নিয়মিত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। বিশেষ করে ছোট বেলায় প্রচুর খেলাধুলা ও দুধ, মাংস, ছোট মাছ প্রচুর পরিমাণ খেতে হবে। আর রোগ হয়ে গেলে ট্যাবলেট ক্যালসিয়াম ১৫০০ মিলিগ্রাম করে প্রতিদিন খেতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। Osteoporosis ডায়াগনসিস্ করার জন্য ইগউ (Bone Mineral Density) পরীক্ষা করতে হবে। যদি ইগউ (Bone Mineral Density) তে T. Score <-2.5 হয় তাহলে ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। যেমন- Alendronate, Reserdonet tablet প্রতি সপ্তাহে ৩৫ মিলিগ্রাম করে দিতে হবে। তাছাড়া হরমোন থেরাপি দিতে হবে। মেরুদ-ের হাড় ভেঙ্গে গেলে তা নিউরোসার্জনের সাহায্যে অপারেশন করতে হবে। তাছাড়া কোন কোন ক্ষেত্রে Kyphoplasty নামক অপারেশন করতে হবে। লেখক : সহযোগী অধ্যাপক নিউরোসার্জারি বিএসএমএমইউ, ঢাকা মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৪১২০
×