ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মেধাবী সাগরের লেখাপড়ায় অনিশ্চয়তা

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১২ মে ২০১৮

মেধাবী সাগরের লেখাপড়ায়  অনিশ্চয়তা

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েও মুখে হাসি নেই সাগরের। বাবা-মা তার লেখাপড়ার ব্যয় ভার বহন করতে অপারগ হওয়ায় তাকে গার্মেন্টসে যেতে বলেছে। ফলে চিকিৎসক হবার স্বপ্নটা মাঝপথে ভেঙে যাবার উপক্রম হয়েছে। অদম্য মেধাবী সাগর এর আগে প্রাথমিক সমাপণী পরীক্ষায় এ প্লাস ও জেএসসিতে এ প্লাস পেয়েছিল। দিনমজুর বাবা-মায়ের আয়ে সংসার চলত না বলে ক্ষেতে মজুর দিতে হয়েছে। অনাহার অর্ধাহার আর অর্থ কষ্ট সত্ত্বেও তার এই সাফল্য অবাক করেছে এলাকাবাসীকে। সাগর চন্দ্র রায় সদর উপজেলার দাশেরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সাগরের বাবা সুধীর চন্দ্রের বাড়ি প্রসাদকালোয়া গ্রামে। তার ৩ ছেলের একজন গার্মেন্টস কর্মী ঢাকায় থাকে। অন্যজন মিস্ত্রির কাজ করেন। দু’জনে বিয়ে করে পৃথক। সুধিরের এক চিলতে জমি নেই। স্ত্রী শান্তনাসহ দিন মজুরির কাজ করেন। তাও সব দিন মেলে না কাজ। তার ওপর বয়স্ক বাবার হাতে কাজ কম থাকে। বাড়ি ভিটা না থাকায় স্থানীয় মন্দিরের জমিতে বাস করছেন। সংসারের ব্যয় আর ছেলের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তার বাবা। গ্রামীণ ব্যাংক আর ইসলামী ব্যাংকে সপ্তাতে ৭০০ টাকা কিস্তি দিতে হয়। সংসারের খরচ মিটিয়ে সেই টাকা জোগাড় করা কষ্ট হয়। সাগর জানায়, তার ভূমিহীন দিনমজুর বাবা-মায়ের অল্প আয়ে সংসার চলে না। অনেক সময় ঘরে খাবার ছিল না। তখন না খেয়ে স্কুলে যেতে হয়েছে। কেরোসিনের নিভু নিভু আলোতে লেখাপড়া করতে কষ্ট হলেও মাঝে মধ্যে কেরোসিনও থাকত না ঘরে। বছরে একটির বেশি পোশাক মিলত না। পুরোনো বই সংগ্রহ করে পড়েছেন। প্রয়োজনীয় প্রাইভেট টিউশনিও পড়তে পারেননি।
×