স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জিতে গেল সফরকারী ইংল্যান্ডই। দারুণ জমে ওঠা ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-২ সমতা ছিল। শনিবার ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে সিরিজ নির্ধারণী পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে বিধ্বস্ত করেছে ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের করা ২২৩ রান ১০৪ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় ইংল্যান্ড ওপেনার জনি বেয়ারস্টোর দ্রুতবেগে করা সেঞ্চুরির সুবাদে। গত বছর অক্টোবর এ্যাশেজ সফরে আসা ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল তখন থেকেই টানা দেশের বাইরে। এ্যাশেজে ব্যর্থতা, ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজে ব্যর্থতার পর অবশেষে তারা ৩-২ ব্যবধানে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে সাফল্য পেল। আর অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান রস টেইলরকে ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচটি খেলতে নেমে শেষ পর্যন্ত সিরিজ হাতছাড়াই হলো কিউইদের।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে নিউজিল্যান্ড। সর্বশেষ ওয়ানডেতে টেইলরের ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ১৮১ রানের সুবাদে অবিশ্বাস্য এক জয় তুলে নিয়েছিল কিউইরা, সিরিজে এনেছিল সমতা। কিন্তু সেদিন সেই টেইলর ইনজুরিতে পড়ার কারণে তার খেলা নিয়ে ছিল শঙ্কা। শেষ পর্যন্ত তাকে ছাড়াই নামে কিউইরা। সিরিজে ফর্মের তুঙ্গে থাকা ইংলিশ পেস অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস প্রথম থেকেই চেপে ধরেন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের। তিনি প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন কলিন মুনরোকে (০)। রান নিতে বেশ সংগ্রাম করতে থাকা নিউজিল্যান্ডের দলীয় ২৬ রানের সময় মার্ক উডের পেসে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন (১৪)। তখন দশম ওভার চলছিল। এরপর লেগস্পিনার আদিল রশিদের ঘূর্ণিতেও বেসামাল হয়ে যায় কিউইরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। একপ্রান্তে ওপেনার মার্টিন গাপটিল একাই লড়াই চালিয়ে গেছেন। ৬৮ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৪৭ রান করার পর তিনিও আদিলের শিকার হন। দলীয় ৯৩ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে নিউজিল্যান্ড। তবে সপ্তম উইকেটে এড নিকোলস ও মিচেল স্যান্টনারের প্রতিরোধ ৮৪ রান যোগ করে কিউইদের দলীয় সংগ্রহে। উভয়ে অর্ধশতক হাঁকান। নিকোলস ৮১ বলে ১ চার, ১ ছক্কায় ৫৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন টম কুরানের পেসে। দারুণ খেলা স্যান্টনার দ্বিতীয় অর্ধশতক হাঁকান। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস উপহার দিয়ে তিনি ৭১ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৬৭ রান করার পর আউট হন। তবে এরপরও ৪৯.৫ ওভারে ২২৩ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। আদিল, ওকস ৩টি করে এবং কুরান ২টি উইকেট নেন।
জবাব দিতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই নিউজিল্যান্ডের সব আশা-ভরসা শেষ করে দেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও এ্যালেক্স হেলস। তারা ১৫৫ রানের জুটি গড়েন। বিধ্বংসী বেয়ারস্টো ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে মাত্র ৬০ বলে ৯ চার, ৬ ছক্কায় ১০৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন। ট্রেন্ট বোল্টের দেয়া এই ব্রেক থ্রু তেমন প্রভাব ফেলেনি ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে। হেলসও ৭৪ বলে ৯ চারে ৬১ রান করে সাজঘরে ফেরেন। তবে ততক্ষণে জয়ের খুব কাছাকাছি চলে যায় ইংলিশরা। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৩২.৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রান তুলে সহজ জয় পেয়ে যায় সফরকারীরা। বেন স্টোকস ২৬ ও জো রুট ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
স্কোর ॥ নিউজিল্যান্ড ইনিংস ॥ ২২৩/১০; ৪৯.৫ ওভার (স্যান্টনার ৬৭, নিকোলস ৫৫, গাপটিল ৪৭; ওকস ৩/৩২, আদিল ৩/৪২, কুরান ২/৪৬)।
ইংল্যান্ড ইনিংস ॥ ২২৯/৩; ৩২.৪ ওভার (বেয়ারস্টো ১০৪, হেলস ৬১, স্টোকস ২৬*, রুট ২৩*; স্যান্টনার ১/৪৪)।
ফল ॥ ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ জনি বেয়ারস্টো (ইংল্যান্ড)। সিরিজ ॥ ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ইংল্যান্ড ৩-২ ব্যবধানে জয়ী।
সিরিজসেরা ॥ ক্রিস ওকস (ইংল্যান্ড)।
পঞ্চম ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ড পরাজিত ৭ উইকেটে
সহজ জয়ে সিরিজ ইংল্যান্ডের
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: