ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শিকড় অনেক গভীরে ॥ জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৬ মার্চ ২০১৮

শিকড় অনেক গভীরে ॥ জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা

শংকর কুমার দে ॥ বিশিষ্ট লেখক ও সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টার সময়ে ঘটনাস্থলের সামনে তিনজন উপস্থিত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় সিসিটিভির ফুটেজে। সামনের তিনজনকে নিরাপত্তা দিতে তাদের পেছনে কত জন ছিল তা এখনও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অজানা। এ হত্যাচেষ্টা ঘটনার শিকড় অনেক গভীরে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি) এ হত্যাচেষ্টার নেপথ্যে সম্পৃক্ত রয়েছে মনে করেই তদন্ত শুরু করেছে তদন্তকারীরা। ২০১৩ সালে এ জঙ্গী সংগঠনটির হিটলিস্টে নাম পাওয়া যায় জাফর ইকবালের। তারপর তার কাছে কাফনের কাপড় পাঠায় এ জঙ্গী সংগঠনটি। ২০১৬ সালে জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হককে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হত্যার হুমকি দেয় এ জঙ্গী সংগঠনটি। দেশে অস্থিতিশীল ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি করতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য এ হত্যাচেষ্টার ঘটনাটি ঘটানোর জন্য অশুভ মহলের একটি চক্রান্ত বলে তদন্তকারীদের দাবি। জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টার ঘটনায় এ পর্যন্ত হাতেনাতে ধরা পড়া হামলাকারী ফয়জুল, তার মা, বাবা, ভাই, চাচা, মামা, কম্পিউটার ব্যবসায়ীসহ সাত জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কারা, কিভাবে, কেন, হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বে ব্যর্থতা বা অবহেলা ছিল কিনা, পর্দার অন্তরালের নেপথ্যের মদদদাতাদের চিহ্নিত করতে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও কাজ শুরু করেছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশের এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের পর জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টার মামলাটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দ্রুততার সঙ্গে প্রত্যক্ষ হত্যাচেষ্টাকারী ও পরোক্ষভাবে মদদদাতাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানের জন্য তদন্ত করা হচ্ছে। জাফর ইকবালকে যেভাবে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে, ঠিক অনুরূপভাবে প্রগতিশীল লেখক ও ব্লগার অভিজিত রায়সহ অন্তত ১৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে। একমাত্র ব্লগার রাজীব হত্যাকা- ছাড়া এই ১৪ জন প্রগতিশীল লেখক, ব্লগার, প্রকাশক হত্যাকারীদের আইনে সোপর্দ করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর ব্যর্থতার কারণেই এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এজন্যই জাফর ইকবালের হত্যাচেষ্টার ঘটনাটির বিষয়ে সিলেটের জালালাবাদ থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা মামলাটির তদন্ত পুলিশের হাতে থাকলেও ছায়া তদন্ত করছে র‌্যাব, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি), গোয়েন্দা সংস্থা। জাফর ইকবালকে হত্যার হুমকি, কাফনের কাপড় পাঠানো, হিটলিস্টে নাম থাকার ঘটনায় জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী সিলেটের জালালাবাদ থানায় জিডি করার পর ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল থেকেই ২৩ জনের পুলিশ টিম পালাক্রমে তাদের সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরা দিয়ে নিরাপত্তা দিয়ে আসছে সরকার। তবে ঘটনার সময়ে যারা পুলিশ প্রহরায় ছিল তাদের মধ্যে দুজন কনস্টেবলকে সিসিটিভির ক্যামেরার ফুটেজে মোবাইল ফোনে কথা বলা বা ব্যস্ততায় থাকার দৃশ্যে দেখা যাওয়ায় তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। অপরপক্ষে জাফর ইকবালকে রক্ষা করতে গিয়ে দুই পুলিশ কনস্টেবল আবার আহতও হয়েছেন বলে পুলিশ কর্মকর্তার দাবি। গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা জানান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) হ্যান্ড বল গ্রাউন্ডের মুক্তমঞ্চে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলার ঘটনা ধরা পড়েছে কাছেই লাগানো একটি সিসিটিভি ক্যামেরায়। সিসিটিভির ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে হামলার সময়ে ঘটনাস্থলে দৌড়ঝাঁপ ও হামলাকারীকে পেটানোর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে। গত ৩ মার্চ বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে শাবির ইলেট্রিক্যাল এ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ট্রিপল ই) বিভাগের ফেস্টিভ্যাল চলাকালে মঞ্চেই ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলার ঘটনাগুলোর ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, জাফর ইকবালের ওপর হামলার পরপরই মঞ্চে ও আশপাশের আচমকা দৌড়াদৌড়ি দেখা যাচ্ছে। তাকে নিয়ে একদল ছাত্র গাড়ির দিকে ছুটে যাচ্ছেন। আরেকদিকে হামলাকারীকে হাতেনাতে ধরে ফেলার পর মঞ্চেই তার ওপর লোকজনকে চড়াও হতে দেখা যাচ্ছে। অধ্যাপক জাফর ইকবাল যেখানে বসে ছিলেন, তার ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিল হামলাকারী ফয়জুল। দুই বাহিরাগত ও চার পুলিশ সদস্য ছাড়া শিক্ষার্থীরাও পেছনে দাঁড়ানো ছিলেন। ফুটেজে দেখায় যায়, পেছনে যে তিন কনস্টেবলকে দেখা যাচ্ছে, তারা হলেন ইব্রাহিম, সুমন সূত্রধর ও নূরুল। ইব্রাহিম ছিলেন জাফর ইকবালের কিছুটা কাছাকাছি। হামলা শুরু হলেই তিনি টের পেয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। এতে তিনি আহতও হন। তার প্রতিরোধের মুখে হামলাকারী ফয়জুল ধরা পড়ে। তবে সুমন সূত্রধর ও নরুল মোবাইল ফোনে মগ্ন থাকতে দেখা যায়। মঞ্চে সোফায় জাফর ইকবালের পাশে যারা বসেছিলেন তারা সবাই শিক্ষক। হামলার আকস্মিকতায় প্রথমে সামনে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীরা দূরে সরে যেতে চেষ্ট করেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্যান্য জায়গা থেকেও শিক্ষার্থীদের ঘটনাস্থলে ছুটে আসতে দেখা যায়। হামলাকারী ফয়জুলকে জাফর ইকবালের পেছনে দাঁড়ানো দেখা যায়। তার সঙ্গে দাঁড়ানো আছে ছাত্ররাও। ছাত্রদের মধ্যে দুই জনকে দেখা যায় যাদের ছাত্ররা শনাক্ত করতে পারেনি, দুই জনই বাহিরাগত। তদন্তকারীদের ধারণা, ফয়জুলকে পেছন থেকে প্রটেকশন দিতে এসেছিল পেছনে থাকা দুই জন। হামলার ঘটনার সময়ে দুই জন পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। ফয়জুলসহ তিন জন বহিরাগতদের ফুটেজে দেখা গেলেও তাদের নেপথ্যে আরও কারা ছিল কিংবা কারা মদদ দিয়েছে তা এখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অজানা। আইজিপি বললেন হামলাকারী সেলফ রেডিক্যালাইডজ ॥ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষক ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারীর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে সে (হামলাকারী) সেলফ রেডিক্যালাইডজ। এখনও পর্যন্ত হামলাকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার খুব বেশি সুযোগ হয়নি। আমরা তদন্ত করছি, এ ঘটনাটির মূল উদঘাটন করব। আমরা হামলাকারীকে জনগণ ও শিক্ষার্থীদের সহায়তায় গ্রেফতার করেছি। হামলাকারীর বিষয়ে জানতে তার পরিবার ও স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র সমাবেশ ও কনসার্ট অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী। হামলাকারীর পরিবারটি রহস্যময় ॥ জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টায় হামলাকারী ফয়জুরদের মূল বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের কালিয়ারকাপন গ্রামে। সে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শেখপাড়ার কাঁচা মঞ্জিলের স্বত্বাধিকারী হাফিজ আতিকুর রহমানের ছেলে। ফয়জুর নগরের জিন্দাবাজারের রাজা ম্যানশনের দ্বিতীয় তলার মঈন কম্পিউটারে কর্মরত ছিল। তার বাবা শহরতলির টুকেরবাজার এলাকার শাহ খুররুম মখলিছিয়া হাফিজিয়া মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক। বড় ভাই এনামুল হাসান ঢাকায় থাকেন। আরেক ভাই আবুল হাসান কুয়েতপ্রবাসী। আর ছোট দুই বোন হাফসা বেগম ও হাবীবা বেগম মাদ্রাসায় পড়ে। হাফসা রশীদিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় আর হাবীবা বাবার মাদ্রাসায় পড়ে। হামলাকারী ফয়জুর দিরাই ধল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে। এরপর সিলেটে একটি মাদ্রাসা থেকে আলিম পরীক্ষা দেয়। তবে কোন মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিয়েছে এ সম্পর্কে কেউ জানে না। তারা কারও সঙ্গে মিশত না। বাসা থেকেও খুব একটা বের হতো না। শুধু মসজিদে নামাজে যাওয়ার জন্য বের হয়। সবাই মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত। বড় ভাই হাফিজ হাসান আগে নগরের পাঠানটুলা জামেয়ায় পড়ালেখা করত। গ্রামের বাড়ির মসজিদে ভিন্ন পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে গিয়ে মুসল্লিদের তোপের মুখে পড়েছিল ফয়জুর। একপর্যায়ে তাকে ও তার চাচাকে মসজিদ থেকে বের করে দেয়া হয়। হামলাকারীর দুই চাচা আবদুল জাহার ও আবদুল সাদিক ২০ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েতে বসবাস করছেন। তার ভাই আবুল হাসান ছয় মাস আগে কুয়েত যান। দুই চাচা মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে সালাফি মতবাদে বিশ্বাসী হয়ে পড়েন। তারপর থেকেই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উগ্রভাব দেখা দেয়। ফয়জুরের পরিবারের সদস্যদের চলাফেরা ‘রহস্যজনক’। সিটিটিসির দুই সদস্যের টিম ঢাকা থেকে সিলেটে ॥ জাফর ইকবালের ওপর হামলার ঘটনা তদন্তে মাঠে নেমেছে পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। সিটিটিসির এডিসি সাইফুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে দুই সদস্যের টিম ঢাকা থেকে সিলেটি গিয়ে পৌঁছেছে। হামলাকারী ফয়জুলকে জিজ্ঞাসাবাদ, তার সঙ্গে আর কে বা কারা ছিল তার ক্লু বের করার চেষ্টা করছেন তারা। এখনও হামলার নেপথ্য কারণ উদঘাটন করতে না পারলেও জঙ্গীদের টার্গেট করেই এগোচ্ছে তদন্ত কার্যক্রম। কারণ হামলাকারী ফয়জুল যে একাই এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে তা কারও কাছেই বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। নিশ্চয়ই তার সঙ্গে আরও সহযোগী ছিল যারা জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। বিশেষ করে জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম কিংবা আনসার আল ইসলামের স্লিপার সেলের সদস্য হয়ে যদি কাট আউট পদ্ধতিতে অধ্যাপক জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টায় হামলা চালানো হয়ে থাকে তবে তা বের করতে একটু সময় নিবে। কারণ হামলাকারী ফয়জুল এখনও পুরাপুরি সুস্থ নয়। পুরাপুরি সুস্থ না হলে ভাল মতো জিজ্ঞাসাবাদ করাও সম্ভবপর হচ্ছে না। তবে এখনও পর্যন্ত হামলাকারী ফয়জুল একেক সময়ে একেক ধরনের তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে বলে জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি। তবে জিজ্ঞাসাবাদে ফয়জুর বলেছে, ‘জাফর ইকবাল ইসলামের শত্রু’ তাই তার ওপর হামলা করা হয়েছে, জঙ্গীবাদে বিশ্বাসী হয়েই সে এ হামলা চালিয়েছে-এ কথা বলার প্রেক্ষিতে এটা যে জঙ্গী সংগঠনের হয়েই সে হামলা করেছে তার স্পষ্টই ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রসঙ্গত গত ৩ মার্চ শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে একটি অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টায় হামলায় চালায় ফয়জুর। হামলার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হামলাকারীকে আটক করে। জাফর ইকবাল বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত অবস্থায় রাজধানীর সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। এ হত্যাচেষ্টায় হামলার ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানী ঢাকা, সিলেট ছাড়াও ছাত্র-শিক্ষক, প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, সমাবেশ করে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আন্দোলনের উত্তেজনা-উত্তাল অব্যাহত আছে।
×