ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ও ভারত একত্রে শহীদ দিবস পালন করবে

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশ ও ভারত একত্রে শহীদ দিবস পালন করবে

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ এবারের মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যৌথভাবে পালন করবে বাংলাদেশ ও ভারত। দুই বাংলার মাতৃভাষা এক বলেই এবার প্রথমবারের মতো উভয় দেশ এক মঞ্চে মহান শহীদ দিবস পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। দুই বাংলার একাধিক সীমান্তেও একযোগে মহান শহীদ দিবস পালিত হবে। সূত্র জানায়, এবারের একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল-পেট্রাপোল, দিনাজপুরের হাকিমপুর-হিলি সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দুই দেশ যৌথভাবে মঞ্চ তৈরি করেছে। আজ বুধবার সেখানেই উদযাপিত হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এজন্য বেনাপোল সীমান্তের দু’পাশে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন টানানো হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি টানানো হয়েছে। একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে প্রতি বছরই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলে আলাদাভাবে তৈরি হয় মঞ্চ। বেনাপোলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে একটি মঞ্চ তৈরি হয়। আর ভারত সরকারের তরফ থেকে প্রেটাপোলে মঞ্চ তৈরি করা হয়। বাঙালীর অনুষ্ঠান হলেও দুই মঞ্চে চলে দু’দেশের পৃথক অনুষ্ঠান। এই দূরত্ব ঘোচাতে গত বছর প্রথম সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দু’দেশের পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তা সফল হওয়ায় এবার প্রথমবারের মতো জিরো পয়েন্টেই একযোগে ভাষা দিবস পালিত হবে। এখন থেকে প্রতি বছর ভাষা দিবস একই মঞ্চে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দু’দেশের প্রতিনিধিরা। একই মঞ্চে দু’দেশের জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখবেন। আর শিল্পীরা গান গাইবেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, গত বছর একসঙ্গে অনুষ্ঠান করা হয়েছিল, তবে ছোট করে। এই প্রথম বড় আকারে একই মঞ্চে দুই বাংলার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যৌথ অনুষ্ঠান হওয়ায় ‘দুই বাংলা মৈত্রী সমিতি’র নামে আমন্ত্রণপত্রও বণ্টন করা হয়েছে। এদিকে দিনাজপুরে বাংলাদেশ-ভারত যৌথভাবে একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হিলিতে একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস পালনে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রয়াসে দুদেশের শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশন, সুধী সমাবেশ ও ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচী পালিত হবে। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কারও যৌথ উদ্যোগ ॥ বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে পালন করবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বুধবার সকালে শ্রীলঙ্কার কলম্বোর বিহারামহা দেবী পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠান উদযাপিত হবে। এতে উপস্থিত থাকবেন শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা, শ্রীলঙ্কার ন্যাশনাল কো-এক্সিসটেন্স মন্ত্রণালয়, ডায়ালগ এ্যান্ড অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ, অফিস ফর ন্যাশনাল ইউনিটি এ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন, শ্রীলঙ্কা ফাউন্ডেশন ইনস্টিটিউট, শ্রীলঙ্কা স্কাউটস, ডিপ্লোমেটিক সম্প্রদায়ের কর্মকর্তারা, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। খবর ওয়েবসাইটের। শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ এই তথ্য জানিয়েছেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, গত বছরও আমরা ২১ ফেব্রুয়ারি ভিন্নভাবে উদযাপন করেছি। এবার আমরা শ্রীলঙ্কার জনগণের সঙ্গে এই দিবসটি উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনুষ্ঠানটি সাজানোর ধরন সম্পর্কে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, শুরুতে একটি আলোচনা সভার পরে ভিসুয়াল এ্যান্ড পারফরমিং আর্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বাংলা, সিনহালা ও তামিল ভাষায় সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। তিনি আরও বলেন, এছাড়া আমরা এই দিবস উপলক্ষে পোস্টার ছাপিয়েছি, এগুলো বিনামূল্যে সবাইকে দেব। একইসঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহিত করব, যেন তারা নিজেদের ভাষায় অনুষ্ঠানের থিম ‘মা-মাতৃভাষা-মাতৃভূমি’ মাথায় রেখে পোস্টার তৈরি করেন। ভিসুয়াল এ্যান্ড পারফরমিং আর্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা পার্কে আটটি বড় আকারের ক্যানভাস বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করবেন। যেখানে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের ভাষায় মন্তব্য, ইমোশন বা কোন ছবি আঁকতে পারবেন। একইসঙ্গে পুরো অনুষ্ঠানে থাকবে রক্তদান কর্মসূচীও। পোস্টার সম্পর্কে শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারিকে গৌরবান্বিত করে গত বছরও আমরা পোস্টার বের করেছিলাম। এবছরও করেছি। বিভিন্ন ভাষায় স্বাধীনতা, মূল্যবোধ, চিন্তা, প্রেরণা ইত্যাদি শব্দগুলো নিয়ে এবারের পোস্টারটি তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি জানান। পোস্টারটির নিচে বাংলা, সিংহালা, তামিল ও ইংরেজীতে লেখা হয়েছে, ‘ঐক্যে ভাষা, ভাষা বন্ধনে’ বাক্যটি।
×